ঘরের মাঠে ইতিহাস: হরমনপ্রীতদের হাতে প্রথম মহিলা বিশ্বকাপ ট্রফি

ঘরের মাঠে ইতিহাস: হরমনপ্রীতদের হাতে প্রথম মহিলা বিশ্বকাপ ট্রফি

Facebook
Twitter
LinkedIn
Email
WhatsApp
Print
Telegram



খেলা – এক সময় মনে হচ্ছিল, বিশ্বকাপ বুঝি হাতছাড়া হয়ে গেল ভারতের। কারণ, ক্রিজে তখন ছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার তারকা ব্যাটার লরা উলভার্ট, যিনি সেমিফাইনালে শতরান করেছিলেন এবং ফাইনালেও শুরু করেছিলেন ঝোড়ো ইনিংস। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাঁর সেই লড়াইও ব্যর্থ হল—হরমনপ্রীত কৌরের নেতৃত্বে অবশেষে ইতিহাস গড়ল ভারত। তৃতীয়বারের চেষ্টায় ঘরের মাঠে মহিলা বিশ্বকাপের শিরোপা জিতে নিল ভারতীয় দল। ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারাল ৫২ রানে।

প্রথমে ব্যাট করে ভারত তোলে ৭ উইকেটে ২৯৮ রান। জবাবে দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস গুটিয়ে যায় ৪৫.৩ ওভারে ২৪৬ রানে। ব্যাট হাতে ঝড় তোলেন শেফালি বর্মা, আর বল হাতে দাপট দেখান দীপ্তি শর্মা। এই দুই তারকার অসাধারণ নৈপুণ্যে ভারতের মাথায় ওঠে কাঙ্ক্ষিত বিশ্বকাপের মুকুট।

রবিবারের ফাইনাল শুরু হতে বৃষ্টির কারণে প্রায় দু’ঘণ্টা দেরি হয়। ম্যাচের শুরুতে টস জিতে বল করার সিদ্ধান্ত নেন দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়িকা উলভার্ট। অন্যদিকে, হরমনপ্রীত কৌর গোটা প্রতিযোগিতায় একাধিকবার টসে ব্যর্থ হলেও, দলের পারফরম্যান্সে তার প্রভাব পড়েনি একটুও।

সেমিফাইনালের আগে চোট পেয়ে ছিটকে যান প্রতিকা রাওয়াল। ফলে সুযোগ পান তরুণী শেফালি বর্মা। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে রান না পেলেও ফাইনালে যেন নিজেকে নতুন করে চিনিয়ে দিলেন। প্রথম বল থেকেই আক্রমণাত্মক মেজাজে খেলতে শুরু করেন তিনি। স্মৃতি মন্ধানাকে সময় দেন সেট হতে, আর নিজে তুলে নেন দায়িত্ব।

দুই ওপেনার মিলে গড়ে তোলেন শতরানের জুটি। প্রতি ওভারেই অনায়াসে উঠছিল ছয়ের বেশি রান। মাত্র ৪৯ বলে অর্ধশতরান পূর্ণ করেন শেফালি বর্মা। ২১ বছর ২৭৮ দিন বয়সে বিশ্বকাপ ফাইনালে অর্ধশতরান করা সবচেয়ে কমবয়সি ভারতীয় ওপেনার হলেন তিনি—পুরুষ বা মহিলা, দুই বিভাগের মধ্যে মিলিয়েও। এই রেকর্ড এতদিন ছিল বীরেন্দ্র সহবাগের দখলে, যিনি ২০০৩ সালের বিশ্বকাপ ফাইনালে ২৪ বছর বয়সে করেছিলেন অর্ধশতরান। সহবাগই শেফালির অনুপ্রেরণা, এবং তাঁর মতোই শুরু থেকেই ছিলেন আক্রমণাত্মক।

ফাইনালে শেফালির ইনিংস ছিল চোখ ধাঁধানো। পুরুষ ও মহিলা—দু’দলের মধ্যেই এক দিনের বিশ্বকাপে কোনও ভারতীয় ওপেনারের সর্বোচ্চ রানের ইনিংস এখন তাঁর দখলে। আগের ম্যাচে আড়াআড়ি শট খেলে আউট হলেও, ফাইনালে নিজের টেকনিকে বদল আনেন তিনি। পুরো ইনিংসে স্ট্রাইক রেট ছিল ১০০-এর ওপরে।

অল্পের জন্য অর্ধশতরান হাতছাড়া হয় স্মৃতি মন্ধানার (৪৫ রান), কিন্তু তখনই ভারত মজবুত ভিত তৈরি করে ফেলেছিল। পায়ের ক্র্যাম্পে ভুগে শেষমেশ বড় শট খেলতে গিয়ে আউট হন শেফালি— ৭৮ বলে ৮৭ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলে।

শেষে দীপ্তি শর্মার অসাধারণ অলরাউন্ড পারফরম্যান্স এবং দলের ঐক্য মিলে ভারতীয়দের ঘরে তোলে সেই কাঙ্ক্ষিত বিশ্বকাপ ট্রফি—যার জন্য অপেক্ষা ছিল দীর্ঘ তিনটি আসর ধরে। এই জয়ের সঙ্গে নতুন ইতিহাস লিখল ভারতীয় মহিলা ক্রিকেট।

RECOMMENDED FOR YOU.....

Scroll to Top