পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের অধিবেশন শুরু। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান দেশটির সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে অনাস্থা ভোটের মুখোমুখি হতে যাচ্ছেন। স্থানীয় সময় শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের (এনএ) অধিবেশন শুরু হয়। এ অধিবেশনে ইমরান খানের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাবের ওপর ভোটাভুটি হওয়ার কথা রয়েছে। শনিবার পাকিস্তানের জিও টিভি অনলাইন এ খবর জানিয়েছে। বৃহস্পতিবার ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোটের প্রস্তাব বাতিল ও পার্লামেন্ট ভেঙে দেয়ার সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট।
একই সঙ্গে পার্লামেন্ট পুনর্বহালেরও নির্দেশ দেন বিচারপতিদের পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ। দেশটির সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর অস্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিস্থিতি নতুনভাবে মোড় নেয়। সর্বোচ্চ আদালতের রায় অনুযায়ী, শনিবার পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষের অধিবেশন আহ্বান করতে বাধ্য জাতীয় পরিষদের স্পিকার। ৩ এপ্রিলের আলোচ্যসূচির সঙ্গে মিল রেখে সকালে এ অধিবেশন শুরু করতে হবে। ৩৪২ আসনের পার্লামেন্টের মধ্যে ১৭২ জনের সমর্থনের প্রয়োজন ইমরান খানের বিরোধীদের। এদিকে জনগণের উদ্দেশে গুরুত্বপূর্ণ ভাষণ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। ভাষণে অনাস্থা ভোটের প্রস্তাব বাতিল ও পার্লামেন্ট ভেঙে দেয়ার সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্টের দেয়া রায়ে ‘স্তব্ধ’ হলেও মেনে নেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
শুক্রবার স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ৯টায় জাতির উদ্দেশে দেয়া এক ভাষণে ইমরান খান বলেছেন, আমি একদিন আগে জারি করা সুপ্রিম কোর্টের রায় মেনে নিচ্ছি। ভাষণে ইমরান খান জানান, সুপ্রিম কোর্টের দেয়া রায়ে ‘স্তব্ধ’ হলেও মেনে নিয়েছেন। তবে, আমদানি করা কোনো সরকার মেনে নেবেন না। তিনি জনগণের কাছে যাবেন। পাকিস্তানের ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি পুনর্বহালে সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্তকে শ্রদ্ধা জানান। কিন্তু এ রায়ে তিনি ‘স্তব্ধ’ হয়েছেন। সুপ্রিম কোর্টের উচিত ছিল ‘বিদেশি ষড়যন্ত্রের’ বিষয়ে অন্তত একটি তদন্তের নির্দেশ দেয়া।
এ সময় পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন) প্রধান শাহবাজ শরিফের সমালোচনা করে তিনি বলেছেন, শেরওয়ানি পরে শপথ গ্রহণের জন্য প্রস্তুত থাকা শাহবাজ বিদেশি ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িত। রোববার পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে আনা বিরোধী জোটের তরফে পেশ হওয়া অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে ভোটাভুটির কথা থাকলেও ডেপুটি স্পিকার কাসিম খান সুরি তা খারিজ করে দেন। তিনি জানান, বিদেশি শক্তির প্ররোচনায় আনা এই অনাস্থা প্রস্তাব সংবিধানবিরোধী এবং তা দেশের কল্যাণের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
তাই পাকিস্তানের সংবিধানের ৫ নম্বর ধারা মেনে এ নিয়ে কোনো ভোট করাতে পারবেন না তিনি। এর পরেই ইমরান খানের সুপারিশে ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি ভেঙে দেন প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি। এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে সেদিন রাতেই শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়ে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করেন বিরোধীরা। সোমবার থেকে শুনানি শুরু হয়। পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতি উমর আতা বান্দিয়ালের নেতৃত্বে এতে অংশ নেন বিচারপতি মুনীব আখতার, বিচারপতি আইজাজুল আহসান, বিচারপতি মাজহার আলম ও বিচারপতি জামাল খান মন্দোখেল।