মালদহে শুরু হল পীরের স্মরণে বাংরুয়ার উরস উৎসব

মালদহে শুরু হল পীরের স্মরণে বাংরুয়ার উরস উৎসব। মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের বাংরুয়া গ্রামে শুরু হলো লক্ষণ সেন আমলের পীর হযরতসা খিজির রহমতুল্লাহর স্মরণে উরুষ উৎসব।রবিবার থেকে শুরু হয়েছে এই উরস উৎসব। এই উৎসবকে কেন্দ্র করে এলাকায় হিন্দু মুসলমান সম্প্রীতির এক উজ্জ্বল নিদর্শন দেখা যায়। এবার এই উৎসব ৭৫ তম বর্ষে পদার্পণ করল।

 

ঊরুস আয়োজক কমিটি সূত্রে জানা গিয়েছে, তারা এলাকার প্রবীণ ব্যক্তিদের কাছ থেকে শুনে আসছেন এক সময়ে এই গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে যেত গঙ্গার শাখা নদী। সেই সূত্র ধরে পার্শ্ববর্তী গ্রামের নাম এখনও গাংনদীয়া রয়ে গেছে।বাংলায় তখন সেন রাজবংশের চতুর্থ রাজা লক্ষণ সেন রাজত্ব করছেন। সেই সময় ওই শাখা নদীর ধরে পালতোলা নৌকা করে বাংরুয়া গ্রামের ঘাটে এসে উপস্থিত হন পীর বাবা হযরত খিজির রহমতউল্লাহ। সে সময় বাঙরুয়া সহ আশেপাশের এলাকার মানুষ ভীষণভাবে বিভিন্ন রকম অসুখ বিসুখ থেকে শুরু করে অভাব-অনটনে জর্জরিত ছিল। সেই সময় গ্রামবাসীর সহায় হন ওই পীর বাবা। অসুখ-বিসুখ থেকে শুরু করে নানা সমস্যার সমাধানে সহায়তা ওই পীর বাবা।

 

সেই সময় বাংলার তৎকালীন শাসক রাজা লক্ষণ সেন সমস্যায় পড়ে পীর হযরত খিজির রহমতুল্লাহর কাছে শরণাপন্ন হন। সমস্যার সমাধান পেয়ে ও পীরের মাহাত্ম্য প্রভাবিত হয় ওই পীরকে তিনি ৫০০ বিঘা জমি দান করেন। সেই জমিতে গড়ে ওঠে পীরের চিল্লাখানা। সেসময় পীরের মাহাত্ম্যের কথা শুনে বাংলা ছাড়াও দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দলে দলে মানুষ এলাকায় ছুটে আসতেন পীরের আশীর্বাদ নেওয়ার জন্য। বিভিন্ন সময়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত নিমেষের জন্য পীরবাবার দেখা পেয়েছিলেন। সেসময় পীরবাবার যারা নিয়মিত খেদমত করতেন সেই খাদেমদের বংশধররা আজও বংশপরম্পরায় এই গ্রামে বসবাস করেন। রাজার দান করা জমির কিছু রয়েছে খাদেমদের উত্তর পুরুষদের হাতে।

 

যখন ঘরে ঘরে নতুন ধান উঠতে শুরু করে তখনই পীর বাবার স্মরণে এই উৎসব করা হয়ে থাকে। তাই পীরবাবার আগমনের সময় থেকেই বর্তমান কাল অব্দি অঘ্রাণ মাসে নতুন ধান জমিতে তোলার পর পীর বাবার চিল্লা খানায় নতুন চালের পায়েস দেওয়া হতো গ্রামবাসীদের পক্ষ থেকে।
আমন ধান ওঠার পর অঘ্রান মাসের ১০ ও ১১ তারিখে পীর বাবার স্মরণে উৎসব ও মেলা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ে। সেই থেকে প্রতিবছর এই মেলা হয়ে আসছে।

আরও পড়ুন – ফুটবলার রোনাল্ডোর দাম দেখুন কত

হরিশ্চন্দ্রপুর ছাড়া পার্শ্ববর্তী অঞ্চল গুলির প্রচুর হিন্দু মুসলিম সম্প্রদায়ের উভয় সম্প্রদায়ের মানুষেরা পীর বাবার চিল্লা খানায় মানত করেন। ছাগল, মুরগি অর্থ দান করেন।আগামী দুইদিন পীর খিজির সাহের স্মরণে উরাস উৎসব হিন্দু-মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে। পীরের স্মরণে