ইয়েমেনে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছে সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট। রমজানে যুদ্ধবিরতি মেনে চলতে জাতিসংঘের আহ্বানের পর এই যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হয়েছে। মঙ্গলবার দিন শেষে এই ঘোষণা দেয়া হয়। ঘোষণা অনুযায়ী আজ বুধবার থেকেই সামরিক অভিযান বন্ধ রাখা হবে। সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বিষয়টি জানা গেছে। সৌদি নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ও ইরান-সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীরা ২০১৫ সাল থেকে এ যুদ্ধ চালিয়ে আসছে। এ যুদ্ধে হাজার হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন। অনাহারের মুখে পড়েছেন লাখ লাখ ইয়েমেনি।
এদিকে, গত তিন বছর আগে একটি শান্তি চুক্তিতে পৌঁছাতে এবং দারিদ্র্যপীড়িত দেশটিতে সৃষ্ট ভয়াবহ মানবিক সংকট প্রশমনে সৌদি নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ও ইরান-সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীদের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে জাতিসংঘ। শান্তি প্রচেষ্টায় এ যুদ্ধবিরতি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। জোট বাহিনীর মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তুর্কি আল-মালকির দেয়া বিবৃতি উদ্ধৃত করে সৌদির রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা এসপিএ বলেছে, ইয়েমেনের অভ্যন্তরে সামরিক অভিযান বন্ধের ঘোষণা দিচ্ছে জয়েন্ট ফোর্সেস কমান্ড অব দ্য কোয়ালিশন। ইয়েমেন সংকটের অবসান এবং একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনৈতিক সমাধানে আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টার মধ্যেই এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, হুতি নিয়ন্ত্রিত হোদেইদাহ বন্দরে জ্বালানিবাহী জাহাজ ভেড়ানো এবং সানা বিমানবন্দর থেকে কিছুসংখ্যক বাণিজ্যিক ফ্লাইট চালুর অনুমোদন দেয়ার বিনিময়ে রমজানে সাময়িক যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দেয় জাতিসংঘ। রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন তেল কোম্পানি সৌদি আরামকোর জেদ্দার পেট্রোলিয়াম বিতরণ স্টেশনে গতকাল শুক্রবার হামলা চালানো হয় জাতিসংঘের দেয়া তথ্যমতে, ২৭ মার্চ নাগাদ হোদেইদাহ বন্দরে ভেড়ানোর অপেক্ষায় ছিল চারটি জ্বালানিবাহী জাহাজ।
এগুলোর মধ্যে একটি ট্যাংকার প্রায় তিন মাস ধরে জোট বাহিনী নিয়ন্ত্রিত জলসীমায় আটকে আছে। সূত্র জানায়, ইয়েমেনে জাতিসংঘের বিশেষ দূত হ্যান্স গ্রান্ডবার্গ এ প্রস্তাব দিয়েছেন। এতে যুক্তরাষ্ট্র ও অন্য পশ্চিমা শক্তিগুলোরও সমর্থন রয়েছে। তিনি বলেন, যুদ্ধবিরতির উদ্দেশ্যে সহিংসতা থেকে ইয়েমেনিদের দ্রুত বিরতি দেয়া। জাতিসংঘের এ প্রস্তাবকে ইতিবাচক বলছে হুতিরা। এর আগে গত শনিবার তারা একপক্ষীয়ভাবে তিন দিন সৌদি আরবে হামলা ও স্থল অভিযান বন্ধ রাখার ঘোষণা দেয়। ২০১৪ সালে আবদরাব্বু মনসুর হাদি সরকারকে অস্ত্রের মুখে উৎখাত করে হুতিরা। এরপর সৌদি নেতৃত্বাধীন জোট বাহিনী হস্তক্ষেপ করলে ২০১৫ সাল থেকে সানা বিমানবন্দর বন্ধ রয়েছে। জোট বাহিনী ইয়েমেনের আকাশ ও জলসীমানা নিয়ন্ত্রণ করছে।