কলকাতায় ডার্বি টিকিটের চাহিদা তুঙ্গে। শুরু ডার্বি উৎসব। ডার্বি জ্বরে আক্রান্ত কলকাতা। ফুটবল আধুনিকীকরণের ফলে ফুটবলারদের সঙ্গে সমর্থকদের সরাসরি সংযোগ প্রায় কেটেই গিয়েছে। বছর তিনেক আগে পর্যন্তও ডার্বির আগের সকালে ময়দান চত্বরে যে চিত্র দেখা যেত সেটা আর চোখে পড়ে না। প্রথমত, এখন নিজেদের মাঠে কম, যুবভারতীর প্র্যাকটিস গ্রাউন্ডে অনুশীলন করে ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান। দ্বিতীয়ত, নিজেদের মাঠে প্র্যাকটিস করলেও অনুশীলন দেখার অনুমতি নেই সমর্থকদের।
তাই সেই উৎসাহ, উন্মাদনায় কিছুটা ভাটা পড়েছে। শুক্রবারের সকালটা তারই প্রমাণ দেয়। অন্যান্য বছরের ছবিটা দেখা গেল না ইস্টবেঙ্গল শিবিরে। লাল হলুদের অনুশীলনে গরহাজির সমর্থকরা। গোলের কোনও আকুতি, মিনতি নেই। প্রাকটিস শেষে বিনা বাধায় মাঠ ছাড়েন ক্লেইটন, গঞ্জালেস, শৌভিকরা। যা সত্যিই বিরল।
গঙ্গাপারের আরেক ক্লাবে অবশ্য ছবিটা আলাদা। ক্লাবের মাঠে নৈশালোকের আলোয় প্র্যাকটিস রেখেছিলেন জুয়ান ফেরান্দো। সমর্থকদের মাঠে ঢোকার অনুমতি না থাকলেও ক্লাবের বাইরে ফ্যানদের ভিড় চোখে পড়ে। প্রিয় তারকাদের একঝলক দর্শন পেতে ঘেরাটোপের বাইরে থেকে উঁকিঝুঁকি মারতে দেখা যায় সমর্থকদের। দিমিত্রি, হুগোরা মাঠ ছাড়ার সময় জয়ের আকুতি, গোলের আবদার। এই ছবিই তো দেখে অভ্যস্থ ময়দান।
ডার্বির ফ্লেভার কিছুটা ফিরল শুক্রবার সন্ধেয়। কলকাতায় প্রথম আইএসএল ডার্বি। যথারীতি টিকিট নিয়ে হাহাকার। দুপুর থেকেই ইস্টবেঙ্গল তাঁবুতে টিকিটের লাইন। মোহনবাগান ক্লাবও সভ্য-সমর্থকদের টিকিটের চাহিদা তুঙ্গে। তারমধ্যে ইস্টবেঙ্গলের শীর্ষকর্তা দেবব্রত সরকার দাবি করেন, সাড়ে সতেরো হাজার টাকা দিয়ে তাঁদের টিকিট কাটতে হয়েছে। যা শুনে মোহনবাগান সচিব দেবাশিস দত্ত পাল্টা বলেন, ‘আমরা ইমামি ইস্টবেঙ্গলকে টিকিট পাঠিয়ে দিয়েছি। তারওপর সমর্থকদের জন্য পাঁচ হাজার টিকিট দেওয়া হয়েছে। উনি কেন এরকম বলছেন জানি না।’
আরও পড়ুন – ছটপূজোয় অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সতর্ক প্রশাসন
অন্যদিকে এটিকে মোহনবাগানের আচরণে অপমানিত বোধ করেন আইএফএ কর্তারা। শেষমুহূর্তে সৌজন্যতার খাতিরে আয়োজকদের পক্ষ থেকে যা টিকিট পাঠানো হয়েছিল, সেটা ফেরত পাঠিয়ে দেন আইএফএ সচিব অনির্বাণ দত্ত। কলকাতায় আইএসএলের প্রথম ডার্বির আয়োজক এটিকে মোহনবাগান। ম্যাচে সৌরভ গাঙ্গুলি থাকবেন। তাই সাজ সাজ রব যুবভারতীতেও। ভিআইপি গেটের দুই ধারে লাইন দিয়ে ফুটবলারদের পোস্টার লাগানো হয়েছে। বসছে স্ট্যান্ডও। ডার্বির মণ্ডপ সেজে উঠেছে। ৬০ হাজার ফুটবলপ্রেমীর ঢল নামবে শনিবাসরীয় যুবভারতীতে। থাকবে গগনচুম্বী প্রত্যাশা। আওয়াজে গর্জে উঠবে যুবভারতী। দু’বছর গ্যালারিতে বসে আইএসএল ডার্বি দেখা থেকে বঞ্চিত হয় সমর্থকরা। এবার সেই অপূর্ণ আশা পূরণের পথে।