নবমীর সকাল থেকে মুখ ভার আকাশের, ছাতা নিয়েই রাস্তায় মানুষ

আজ শেষ, তারপর আবার একটা বছরে অপেক্ষা। স্বভাবতই, মন খারাপ বাঙালির। আর এই শেষ দিনে পুজোর আনন্দ মাটি করতে সকাল থেকে মুখ ভার আকাশের। বেশ কিছু জায়গায় সকাল থেকে এক পশলা বৃষ্টিও হয়েছে। ধীরে ধীরে মধ্য কলকাতা হয়ে পূর্ব ও দক্ষিণ কলকাতার আকাশে মেঘের ঘনঘটা দেখা দিতে বেশি সময় নেয়নি। তার পরেই নামে ঝেঁপে বৃষ্টি। একেবারে শেষ লগ্নে কী মাটি হয়ে যাবে বাঙালির প্রাণের উৎসব? এই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে পুজো কমিটির উদ্যোক্তা থেকে শুরু করে আম বাঙালির মনে!

আরও পড়ুন:

এ বারের পুজোয় ভিড়ের নিরিখে অনেক পুজো কমিটির ঘুম ছুটিয়েছিল সন্তোষ মিত্র স্কোয়ার পুজো। অযোধ্যার আগেই কলকাতার শারদোৎসবে রামমন্দিরের আদলে মণ্ডপ গড়ে দর্শক টানতে সফল হয়েছে তারা। কিন্তু নবমীর দুপুরের দুর্যোগ তাদেরও উৎকণ্ঠা বাড়িয়েছে। পুজো কমিটির অন্যতম কর্তা তথা ৫০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সজল ঘোষের কথায়, ‘‘আমাদের প্যান্ডেল দেখতে রাতেও যেমন ভিড়, দিনেও তেমন। আর আচমকা বৃষ্টি এসে যাওয়ায় মানুষ যত্রতত্র মাথা বাঁচাতে দৌড় লাগাচ্ছেন। কেউ মণ্ডপের ভিতরে ছুট লাগাচ্ছেন, তো কেউ আবার মাঠের কোণায় কোনও জায়গায় গিয়ে দাঁড়াচ্ছেন। পুজোয় আগত দর্শনার্থীরা যাতে কোনও ভাবেই আঘাত না পান, সেই দায়িত্বও আমাদের। কিন্তু এ ভাবে বৃষ্টি এসে আমাদের সব পরিকল্পনা ভেস্তে দিচ্ছে।’’

আবোল তাবোলের ১০০ বছর উপলক্ষে মণ্ডপ সাজিয়ে বড় পুরস্কারের পাশাপাশি দর্শকদের মন জিতে নিয়েছে হাতিবাগান নবীন পল্লী। কিন্তু বেয়াড়া বৃষ্টি তাদের মণ্ডপেও প্রভাব ফেলেছে। পুজোর অন্যতম কর্তা সৌভিক ভড় বলেন, ‘‘আমাদের পুজো এ বছর কলকাতার অন্যতম আকর্ষণ। তাই নবমীর সকাল থেকেই আমাদের স্বেচ্ছাসেবকদের ব্যস্ত থাকতে হয়েছে দর্শকদের সামাল দিতে। আচমকা বৃষ্টিতে অনেক দর্শক এসে মণ্ডপের ভিতরে দাঁড়িয়ে পড়ছেন। তাই বাইরে থেকে নতুন করে লোক ঢুকতে পারছেন না। সন্ধ্যা ও রাতেও যদি এমন বৃষ্টি হয়, তা হলে আমাদের বড় সমস্যার মধ্যে পড়তে হবে।’’

দক্ষিণ কলকাতার অন্যতম নামজাদা পুজো খিদিরপুর ২৫ পল্লীর পুজো কর্তা কালী সাহা অবশ্য বলেছেন, ‘‘যে সময় বৃষ্টি এসেছে, সেই সময় মণ্ডপে ভিড় তুলনামূলক কম ছিল। তাই সেই ভিড় সামাল দিতে খুব একটা অসুবিধা হয়নি। কিন্তু বিকেল ও সন্ধ্যায় যদি বৃষ্টি হয় তাহলে আমাদের সমস্যায় পড়তে হবে। কারণ আমাদের মণ্ডপের ভিতর এ বার কোনও ছাউনি নেই। সঙ্গে কাছেপিঠেও বৃষ্টি থেকে বাঁচার কোনও আশ্রয়স্থল নেই।’’

সব পুজো কমিটিরই দেবীর কাছে প্রার্থনা, নবমী নিশি যেন সব রকম দুর্যোগ ছাড়াই কাটে। কারণ আগামী কালই বিজয় দশমী। দেবীর নিরঞ্জনের প্রহর। উৎসব শেষ হওয়ার আগে বর্ষণাসুর যাতে কোনও ভাবেই নিজের দাপট দেখাতে না পারে।/kolkatas-big-durga-puja-puja-committees-officials-face-a-sudden-disaster-dgtl

নবমীর সকাল থেকে মুখ ভার আকাশের, ছাতা নিয়েই রাস্তায় মানুষ