খেলা – দুর্দান্ত শুরু করেও পঞ্জাব কিংসের কাছে হার এড়াতে পারল না চেন্নাই সুপার কিংস। মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) রাতে শ্রেয়স আইয়ারদের কাছে ১৮ রানে হার স্বীকার করতে হল ঋতুরাজ গায়কোয়াড়দের। ডেভন কনওয়ের মরিয়া লড়াই কাজে এল না। প্রথমে ব্যাট করে প্রিয়াংশ আর্যের বিধ্বংসী শতরানের দৌলতে ৬ উইকেট হারিয়ে ২১৯ রান তুলেছিল পঞ্জাব।জবাবে পাঁচচ উইকেট হারিয়ে ২০১ রানেই থামল চেন্নাইয়ের দৌড়। ১৮ রানে হার মানতে হল মহেন্দ্র সিংহ ধোনিদের।মহারাজা যাদবীন্দ্র সিংহ স্টেডিয়ামে এদিন টসে জিতে প্রথমে সিদ্ধান্ত নেন পঞ্জাব অধিনায়ক শ্রেয়স আইয়ার। শুরু থেকেই আগ্রাসী মেজাজে খেলতে শুরু করেন ওপেনার প্রিয়াংশ আর্য। প্রথম ওভারেই ১৭ রান ওঠে। তবে দ্বিতীয় ওভারেই ধাক্কা খায় পঞ্জাব। দ্বিতীয় বলে শূন্য রানে সাজঘরে ফেরেন প্রভসিমরান সিংহ। তিন নম্বরে নামা অধিনায়ক শ্রেয়স আইয়ার ফের ব্যাট হাতে জ্বলে উঠতে ব্যর্থ হন। ৭ বলে ৯ রান করে খলিল আহমেদের শিকার হয়ে সাজঘরের পথ ধরেন। চার নম্বরে নামা মার্কাস স্টোইনিসও বড় রানের ইনিংস খেলতে পারেননি। তিনি ফেরেন ৪ রান করে। প্রথম পাওয়ার প্লে-তে তিন উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে যায় পঞ্জাব। নেহাল ওয়াধেরাকে সঙ্গে নিয়ে দদলকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চালান প্রিয়াংশ। তবে নেহালও বেশিক্ষণ থিতু হতে পারেননি। অষ্টম ওভারে বল করতে এসে ভেল্কি দেখান রবিচন্দ্রন অশ্বিন। পঞ্জাবকে জোড়া ধাক্কা দেন। দ্বিতীয় বলে ফেরান নেহালকে (৯)। শেষ বলে ফিরিয়ে দেন হিটম্যান হিসাবে পরিচিত গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে (১)।
ক্রিজের অন্যপ্রান্তে একের পর এক সতীর্থকে আয়ারাম-গয়ারামের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে দেখেও ধৈর্য হারাননি প্রিয়াংস। বরং নিজেই দলকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার গুরুদায়িত্ব নেন। ১৯ বলে পাঁচটি চার ও চারটি ছক্কার সাহায্যে নিজের অর্ধশতরান পূর্ণ করেন। অর্ধশতরান পূর্ণের পরে আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। চেন্নাইয়ের বাঘা-বাঘা বোলারদের বিরুদ্ধে খুনে মেজাজে ব্যাট করতে থাকেন। মাত্র ৩৯ বলেই সাতটি চার ও ৯টি বিশাল ছক্কার সাহায্যে শতরান পূর্ণ করেন। ষষ্ঠ উইকেটে শশাঙ্ক সিংহের সঙ্গে জুটি বেঁধে যোগ করেন ৭১ রান। শেষ পর্যন্ত প্রিয়াংশর তাণ্ডব থামান নূর আহমেদ। ৪২ বলে ১০৩ রান করে সাজঘরে ফেরেন পঞ্জাবের ওপেনার।এর পর সপ্তম উইকেটে মার্কো জানসেন ও শশাঙ্ক সিংহ মারমুখী মেজাজে ব্যাট করে দদলকেএ ২০০ রানের গণ্ডি পার করিয়ে দেন। শেষ বলে তিন রান নিয়ে নিজের অর্ধশতরান আদায় করেন শশাঙ্ক। তাঁর ৩৬ বলে ৫২ ও মার্কো জানসেনের ১৯ বলে ৩৪ রানের সুবাদে ৬ উইকেট হারিয়ে ২১৯ রানে পৌঁছয় পঞ্জাব।জয়ের জন্য ২২০ রান তাড়া করতে নেমে দুর্দান্ত শুরু করেছিল চেন্নাই সুপার কিংস। দলের দুই ওপেনার রাচিন রবীন্দ্র ও ডেভন কনওয়ে মারমুখী মেজাজেই খেলতে শুরু করেন। প্রথম পাওয়ার প্লে-তে অবিচ্ছিন্নভাবে ৫৯ রান যোগ করেন। তবে পাওয়ার প্লে শেষ হওয়ার পরেই ধাক্কা খায় চেন্নাই। গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের বলে বড় শট খেলতে গিয়ে প্রভসিমরান সিংহের র্তপরতায় স্টাম্প আউট হন রাচিন (২৩ বলে ৩৬)। পরের ওভারে লকি ফার্গুসনের শিকার হয়ে ফেরেন অধিনায়ক ঋতুরাজ গায়কোয়াড় (১)। জোড়া ধাক্কা খেয়ে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে চেন্নাই। তবুও তৃতীয় উইকেটে ডেভন কনওয়ে ও শিভম দুবে জুটি বেঁধে দলকে খাদের কিনারা থেকে তুলে আনার চেষ্টা চালিয়েছিলেন। দুজনে জুটি বেঁধে ৮৯ রান যোগ করে দলকে ১৫০ রানের গণ্ডি পার করে দেওয়ার পাশাপাশি ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ ফের নিজেদের হাতে নেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন।
১৬ তম ওভারে বল করতে এসে শিভমকে (২৭ বলে ৪২) ফিরিয়ে দেন লকি ফার্গুসন। এর পর চচতুর্থ উইকেটে জুটি বেঁধে দলকে জয়ের লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে নিয়ে যান কনওয়ে ও মহেন্দ্র সিং ধোনি। অনেকদিন বাদে উপরের দিকে ব্যাট করতে এসে ফর্মে ফেরার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন ধোনি। কিন্তু দিনটি চেন্নাইয়ের ছছিল না। ১৮ তম ওভারে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়তে হয় ডেভন কনওয়েকে। মাঠ ছাড়ার আগে ৪৯ বলে ৬৯ রান করেন তিনি। শেষের ওভারের প্রথম বলে যশ ঠাকুরের বলে ফিরে যান ধোনিও। এদিন ১২ বলে তিনটি ছক্কা ও একটি চারের সাহায্যে ২৭ রান করেন তিনি। শেষ পর্যন্ত ৫ উইকেট হারিয়ে ২০১ রানেই থেমে যায় চেন্নাই। রবীন্দ্র জাদেজা পাঁচ বলে ৯ রান করে অপরাজিত থাকেন। পঞ্জাবের পক্ষে লকি ফার্গুসন চার ওভারে ৪০ রান খরচ করে ২ উইকেট ঝুলিতে পোরেন।
