বর্ধমান -গ্রামের দোলকালী পুজোর কর্তৃত্ব কাদের দখলে থাকবে, তা নিয়ে বিবাদ ছিলই। সেই বিবাদই গড়াল সংঘর্ষে। অভিযোগ, ইঁট, লঙ্কার গুঁড়ো নিয়ে হামলা চালানো হয়। যার জেরে মৃত্যু হল একজনের, জখম আরও আটজন গ্রামবাসী।ঘটনার জেরে তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়েছে পূর্ব বর্ধমানের চিন্তামণিপুর গ্রামে।
পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে গ্রামে পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে। ঘটনায় অভিযোগের আঙুল উঠেছে তৃণমূল কংগ্রেসের বুথ সভাপতির বিরুদ্ধে। যদিও ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই বলে দাবি শাসকদলের।গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, প্রথমে তারস্বরে মাইক বাজানোকে কেন্দ্র করে দুই গোষ্ঠীর বচসা বাঁধে। পরে মন্দিরে তালা ঝুলিয়ে দেয় এক পক্ষ। তা নিয়ে সংঘর্ষের পরিস্থিতি তৈরি হয়। মৃতের নাম, শীতল খাঁ(৬০)।
আক্রান্তদের অভিযোগ, প্রায় বছর দুয়েক আগে দোলকালী পুজো থেকে গ্রামের বেশ কিছু পরিবারকে বাদ দেওয়া হয়েছিল। সেই নিয়ে সংশ্লিষ্ট পরিবারগুলির মধ্যেও রাগ ছিল। রবিবার দোলকালী পুজোর বিসর্জনে মাইক বাজানোকে কেন্দ্র করে বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে উভয়পক্ষ। এরপরই যাদের পুজো থেকে বাদ দেওয়া হয়েছিল, তারা সোমবার সকালে মন্দিরে তালা ঝুলিয়ে দেয়। অপরপক্ষ তালা খুলতে গেলে বিবাদ চরম পর্যায়ে পৌঁছয়। অভিযোগ, তালা লাগান খণ্ডঘোষের ব্লক সভাপতি অপার্থিব ইসলামের অনুগামী হিসেবে পরিচিত বুথ সভাপতি শ্রীকান্ত খাঁ ও তার ভাই পঞ্চায়েত সদস্য গৌরহরি খাঁ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বচসা থেকেই শুরু হয় ইট বৃষ্টি। ইটের ঘায়ে ঘটনাস্থলেই জখম হন শীতল খাঁ। পরে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়। জখম হয় আরও আটজন।মৃতার ছেলে অজয় খাঁ বলেন, ‘সম্পূর্ণ ঘটনাটি শাসকদলের বুথ সভাপতি শ্রীকান্ত খাঁর নেতৃত্বে ঘটে। গোটা এলাকায় দাদাগিরি চালায় বুথ সভাপতির বাহিনী। এর আগেও এমন ঘটেছে। ওরা ব্লক সভাপতির অনুগামী। আমার বাবার খুনের বিচার চাই।’
গ্রামের সম্পাদক আদিত্য খাঁ নিজেই আহত। তিনি জানান, “ওরা মন্দির দখল করতে তালা দেয়। আমরা জোর করে চাবি খুলতে যাই। ওরা তৈরি হয়েই এসেছিল। ইঁট, লঙ্কার গুঁড়ো, লাঠি দিয়ে আক্রমণ করে।’যদিও অভিযোগ উড়িয়ে খণ্ডঘোষ তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি অপার্থিব ইসলাম বলেন, “ঘটনাটি সম্পূর্ণ গ্রাম্য বিবাদ। এর সঙ্গে দল বা রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই।” পুলিশ জানিয়েছে, দু’পক্ষের অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। উত্তেজনা থাকায় গ্রামে পুলিশি টহল চলবে আরও কয়েকদিন।
