পৃথিবীর আদিম উপজাতিদের জীবনযাত্রা কেমন!

পৃথিবীর আদিম উপজাতিদের জীবনযাত্রা কেমন!

Facebook
Twitter
LinkedIn
Email
WhatsApp
Print
Telegram

পৃথিবীর অনেক স্থানে এখনও এমন কিছু জাতি বসবাস করছে যারা বিজ্ঞানকে স্বাগতম জানায়নি, এখনও পড়ে আছে সভ্যতার আঁতুড়ঘরে। তারা জানে না বাইরের পৃথিবীর অগ্রযাত্রা সম্পর্কে। আর আমরাও জানি না তাদের জীবনযাত্রা কেমন! চলুন আজ জেনে নেওয়া যাক পৃথিবীর কিছু বিচ্ছিন্ন জনগোষ্ঠী সম্পর্কে, যাদের এখনও বাইরের পৃথিবীর সাথে কোন যোগাযোগ

দানি

ইন্দোনেশিয়ার পশ্চিম নিউ গিনির প্রত্যন্ত অঞ্চলে বাস দানি উপজাতির। মার্কিন ফিলানথ্রপিস্ট রিচার্ড আর্চবোল্ড ১৯৩৮ সালে অভিযানের সময় এই উপজাতির খোঁজ পান।পৃথিবীর সবচেয়ে জনবিচ্ছিন্ন আদিম উপজাতি ওরা। জনজীবনের সঙ্গে ওদের কোনও যোগ নেই। ইন্দোনেশিয়ার দানি উপজাতি। এই উপজাতির মধ্যে প্রচলন রয়েছে অদ্ভুত কিছু রীতি।

 

কোনও আত্মীয় মারা গেলে এই দানি উপজাতির মহিলাদের হাতের আঙুল কেটে দেওয়া হয়। পুরুষরা পরেন অদ্ভুত পোশাক। পুরুষদের সেই বিশেষ পোশাকের নাম কোটেকা।এই উপজাতির মানুষরা বছরে একটি অদ্ভুত উত্সবে অংশ নিয়ে থাকেন। ওই অঞ্চলের অন্যান্য উপজাতির মানুষদের সঙ্গে তারা একটি ছদ্ম যুদ্ধ করে থাকে। যার নাম বালিয়েম ভ্যালি ফেস্টিভ্যাল। দানি, ইয়ালি ও লানি উপজাতির মানুষরা এই সময় পুরোদস্তুর যুদ্ধের সাজে নিজেদের সাজিয়ে তোলে।

সেন্টিনেলিজ

ভারত মহাসাগরে অবস্থিত আন্দামান দ্বীপপুঞ্জের উত্তর সেন্টিনেল দ্বীপে এই জনগোষ্ঠীর বসবাস। সেন্টিনেলিজ নামটা আসলে গবেষকদের দেয়া, কারণ খুব সম্ভবত এরাই পৃথিবীর একমাত্র জনগোষ্ঠী যাদের সাথে আধুনিক পৃথিবীর কোনো যোগাযোগ নেই। ফলে তারা তাদের কী নামে ডাকে সেটা জানা যায়নি। দ্বীপের নামানুসারে তাদের সেন্টিনেলিজ ডাকা হয়।

 

সেন্টিনেলিজদের মধ্যে কৃষি ব্যবস্থা বলে কিছু নেই। এরা মূলত বন্য পশু শিকার, মাছ ধরে খাবার সংগ্রহ করে থাকে। এদের ঘরবাড়িগুলোর কোনো দেয়াল নেই, শুধু মাথার উপর ছাউনির মতো থাকে। আশেপাশে কুড়িয়ে পাওয়া ধাতব সামগ্রী দিয়ে অল্প কিছু জিনিস বানাতে পারলেও ধাতু দিয়ে বেশি কিছু বানাতে পারে না। তবে সবচেয়ে বিস্ময়কর ব্যাপার হলো এরা আগুন জ্বালাতে পারে না, অন্তত বিশেষজ্ঞদের এটাই ধারণা।

 

আর ও  পড়ুন     তৃণমূলের আসল খেলা শুরু হবে ২০২৪ সালে, বললেন অভিষেক

 

সুর্মা উপজাতি

পশ্চিম ইথিওপিয়ায় বাস করা সুর্মা জনগোষ্ঠীর মানুষদের চেনা যায় তাদের অদ্ভুত সব শারীরিক বৈশিষ্ট্যের জন্য। এসব বৈশিষ্ট্য তাদের জন্মগত নয়, বরং কৃত্রিমভাবে তারা শরীরের বিভিন্ন অংশ বিকৃত করে। সেই সাথে রয়েছে শরীরে বিভিন্ন রকমের রঙ দিয়ে আঁকা কারুকার্য। বিচ্ছিন্ন এবং দুর্গম পাহাড়ে বাস করতেই বেশি পছন্দ করে এরা। আশপাশের গোত্রের সাথে লড়াইটাও অনেকটা ঐতিহ্যগত এদের জন্য। তবে অন্যান্য বিচ্ছিন্ন জনগোষ্ঠীর সাথে পার্থক্য হলো এরা আধুনিক অস্ত্র ব্যবহার করে।

 

সুদানের গৃহযুদ্ধের সুবাদে এই বিচ্ছিন্ন গোষ্ঠীর হাতেও উঠে এসেছে একে-৪৭ এর মতো আধুনিক মারণাস্ত্র। কৃষিকাজ করেই মূলত সুর্মারা জীবন ধারণ করে থাকে। টোবাকো, কফি, বিভিন্ন জাতের কপি চাষ করে থাকে। বিভিন্ন গোত্রের সাথে বিনিময় করে প্রয়োজনীয় জিনিস সংগ্রহ করে সুর্মারা। সিংহের চামড়া, জিরাফের লেজ, হাতির দাঁতের বিনিময়ে অস্ত্র সংগ্রহ করে আমহারা এবং শানগালাদের কাছ থেকে।

 

সুর্মা মেয়েরা বয়োঃসন্ধিতে পৌঁছলে তাদের নিচের পাটির সব দাঁত ফেলে দিয়ে নিচের ঠোঁট ছিদ্র করা হয়। এরপর সেখানে একটি প্লেট বসিয়ে দেয়া হয়। তাদের সংস্কৃতিতে যার প্লেট যত বড়, সে তত সুন্দর! প্লেটের উপর অনেক কারুকার্যও করা থাকে। তবে বর্তমানে অনেক সুর্মা মেয়েরা এই ঐতিহ্য আর পালন করে না।

RECOMMENDED FOR YOU.....

Scroll to Top