ক্রিসমাসকালীন ভ্রমণ জটিলতার সম্মুখীন লাখ লাখ মানুষ, বাতিল হাজার হাজার ফ্লাইট। ওমিক্রনের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় ফ্লাইট বাতিল এবং নিরাপত্তাজনিত কড়াকড়ির ফলে ক্রিসমাসকালীন ভ্রমণ জটিলতার সম্মুখীন হয়েছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের লাখ লাখ মানুষ। হাজার হাজার ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। ফ্লাইটঅ্যাওয়ার ওয়েবসাইটে এমনটি জানানো হয়েছে। ইতালি, স্পেন ও গ্রিসে আবারও ঘরের বাইরে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। উত্তর স্পেনের কাতালানে চালু হয়েছে রাত্রিকালীন কারফিউ। আর, নেদারল্যান্ডসে তো কঠোর লকডাউন চলছেই।
যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিএনএন বলছে, ক্রিসমাসের আগমুহূর্তের দুই হাজারের বেশি ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। এর মধ্যে ৪৫৪টি ফ্লাইট যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বা যুক্তরাষ্ট্র ছেড়ে যাওয়া অথবা গন্তব্য যুক্তরাষ্ট্র ছিল। ওমিক্রন অন্যান্য ভ্যারিয়্যান্টের চেয়ে হালকা বলে বিজ্ঞানীরা এরই মধ্যে জানতে পেরেছেন। কিন্তু এর দ্রুত সংক্রমণের গতি নিয়ে উদ্বেগ রয়ে গেছে। যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও ইতালিতে বৃহস্পতিবার সর্বোচ্চ সংক্রমণ হয়েছে। অন্যদিকে, এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে ডেলটা ভ্যারিয়্যান্টের সাম্প্রতিক ঢেউয়ের সংক্রমণের রেকর্ড ছাড়িয়েছে ওমিক্রন।
যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে হাসপাতালগুলো রোগীতে পরিপূর্ণ হয়ে গেছে। নিউইয়র্ক টাইমসকে মিশিগান ইউনিভার্সিটির মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. হ্যালি প্রেসকট বলেন, ‘আমাদের কোটি কোটি মানুষ একাধারে একই সময়ে অসুস্থ। হাসপাতালগুলো পরিপূর্ণ হতে এত মানুষের প্রয়োজন হয় না।’ যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান সংক্রমণ রোগ বিশেষজ্ঞ ড. অ্যান্থনি ফসি এর আগেই সতর্ক করে বলেছিলেন, ক্রিসমাসকালীন ভ্রমণে পূর্ণাঙ্গ ডোজ টিকাপ্রাপ্তদের মধ্যেও নতুন এ ভ্যারিয়্যান্টের করোনাভাইরাস ছড়াতে পারে।
আর ও পড়ুন ২২ বছর পর দেখা মিলল ‘হেঁটে বেড়ানো’ একটি বিরল মাছের
অস্ট্রেলিয়ায়ও উৎসবকালীন ভ্রমণ বাতিল হয়েছে বহু মানুষের। শুক্রবার সিডনি ও মেলবোর্ন থেকে অন্যান্য শহরে যাওয়ার শতাধিক ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। অন্যদিকে, ইউরোপের বহু দেশ ক্রিসমাসের পরপরই কড়াকড়ি আরোপ করবে বলে জানিয়ে রেখেছে। ২৮ ডিসেম্বর থেকে গণজমায়েতে সর্বাধিক ১০ জন এবং নৈশক্লাবগুলো একেবারে বন্ধের নির্দেশনা কার্যকর করবে জার্মানি। ফুটবল ম্যাচ হবে দর্শকশূন্য। এ ছাড়া ২৬ ডিসেম্বর থেকে পর্তুগালের পানশালা ও নৈশক্লাব বন্ধ এবং ৯ জানুয়ারি পর্যন্ত দেশটিতে অফিসের কাজ বাড়ি থেকে করা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
এ পর্যন্ত করোনায় বিশ্বের ৫৩ লাখের বেশি মানুষ মারা গেছে এবং এতে আক্রান্ত হয়েছে ২৭ কোটি ৮০ লাখের বেশি মানুষ। যুক্তরাষ্ট্রের জন্স হপকিন্স ইউনিভার্সিটি এ তথ্য জানিয়েছে। যিশুর জন্মস্থান বেথলেহামে নৈশজমায়েত এবারও সীমিত পরিসরে করা হবে। মহামারির আগের সময়ে যেমন হাজার হাজার মানুষ অংশ নিতেন, তা এবারও সম্ভব হচ্ছে না।