কলকাতা – মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই ফ্ল্যাগশিপ প্রকল্পের সৌজন্যে বিনামূল্যে ১২ হাজার কোটি টাকার চিকিৎসা পেল রাজ্যবাসী। রাজ্যজুড়ে বিভিন্ন স্তরের বেসরকারি হাসপাতালে প্রায় ৭৮ লক্ষ ইন্ডোর অ্যাডমিশন সম্ভব হয়েছে প্রকল্পটির সাহায্যেই। আওতায় রয়েছে রাজ্যের ২ কোটি ৪৪ লক্ষ পরিবার।তার মধ্যে ১ কোটি ২ লক্ষ পরিবার স্বাস্থ্যসাথীর অন্তর্ভুক্ত হয়েছে দুয়ার সরকার শিবির চলাকালীন আবেদন জানিয়ে। বাংলার ২৯১৪টি হাসপাতালে এই প্রকল্পের সুবিধা মেলে। এর মধ্যে বেসরকারি হাসপাতালই আছে ২৩৮৫টি।২০১৬ সালে শেষার্ধে মমতা এই প্রকল্পের ঘোষণা করেন। ২০১৭ সালের গোড়ায় প্রকল্পটি শুরু হয়। পরবর্তী ৮ বছরে এই বিপুল অর্থাঙ্কের চিকিৎসা ফ্রিতে পেলেন টালা থেকে টালিগঞ্জ, কাকদ্বীপ থেকে কালিম্পং তথা নিকটবর্তী থেকে দূরবর্তী এমনকী প্রান্তিক অংশের মানুষও। কিছুদিন আগে শেষ হয়েছে ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষ। এই পরিসংখ্যান ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষ বা গত ৩১ মার্চ পর্যন্ত সময়কালের। এমনই জানা গিয়েছে স্বাস্থ্যদপ্তর সূত্রে।এখন প্রশ্ন হল, সুপারহিট এই প্রকল্পের পরিবারপিছু বার্ষিক বিমাকৃত অর্থের পরিমাণ কি বাড়াবে রাজ্য? ইতিমধ্যেই স্বাস্থ্যসাথী শাখা হিসেব করে দেখেছে, ৫ লক্ষ টাকার এই স্বাস্থ্যবিমা প্রকল্পের বিমাকৃত রাশি বাড়িয়ে পরিবারপিছু ৭ বা ১০ লক্ষ টাকা করা হলেও সরকারের তাতে খুব সমস্যা হওয়ার কথা নয়। আবার রাজ্যবাসীর একাংশের দাবি, আর্থিক সঙ্গতি আছে, পশ্চিমবঙ্গের এমন পরিবারগুলিকে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে এই বিমার সুবিধা দেওয়া অনুচিত। বরং বাজারে চালু বিভিন্ন স্বাস্থ্যবিমা সংস্থার তুলনায় নগণ্য হলেও বার্ষিক প্রিমিয়াম সিস্টেম চালু করা উচিত। আবার একাংশের মত হল, ৫ লাখি এই স্বাস্থ্যবিমা ৭ বা ১০ লাখ করার বিকল্প ছেড়ে দেওয়া উচিত উপভোক্তাদের হাতেই। যাঁরা বার্ষিক বিমাকৃত অর্থ বাড়াতে চান, সেইমতো বার্ষিক প্রিমিয়াম দেবেন। যদিও স্বাস্থ্যসাথী শাখার পদস্থ আধিকারিকরা এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।সূত্রের খবর, টানা ৮ বছর গোড়ার দিকে স্বাস্থ্যসাথীর দৌলতে ২০০-২৫০ কোটি টাকার চিকিৎসা ফ্রিতে পেতেন রাজ্যবাসী। কারণ, তখনও উপভোক্তার সংখ্যা এমন সুবিশাল ছিল না। বছর যত গড়ায় এই প্রকল্পের মাধ্যমে লাভবান হওয়া মানুষের সংখ্যাও বাড়তে থাকে। পরবর্তী বছরগুলিতে ক্লেম ক্রমেই ঊর্ধ্বমুখী হতে পারে। ৫০০ কোটি, ১৮০০ কোটি, ২১০০ কোটি এইসব মাইলফলক ছাপিয়ে বর্তমানে এই প্রকল্পের মাধ্যমে বছরে ফ্রিতে মেলে প্রায় ২৬০০ কোটি টাকার চিকিৎসা।
