বকেয়া ডিএ চাইতেই ঘুষি তো কখনও পুলিশের কামড়! ডিএ তো অধিকারের মধ্যে পড়ে। এটা কি অন্যায় দাবি! প্রশ্ন আন্দোলনকারীদের। দিনের পর দিন কেটে গেলেও বকেয়া ডিএ নিয়ে একেবারে নিশ্চুপ রাজ্য সরকার। শুধু তাই নয়, তিন মাসের মধ্যে ডিএ মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ হাইকোর্ট দিলেও তাতেও উদাসীন সরকার। যা নিয়ে ক্ষোভ বাড়ছে রাজ্যের সরকারি কর্মীদের মধ্যে। আর সেই ক্ষোভ থেকেই আজ বুধবার বিধানসভা অভিযানের ডাক দেন কর্মীরা।
আর এই অভিযান ঘিরেই একেবারে হুলস্থুল কাণ্ড। রাজ্য সরকারি কর্মীদের যৌথ মঞ্চ আজ বিধানসভা অভিযানের ডাক দেয়। সেই মতো দুপুরের পর থেকে শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে রাজ্য সরকারি কর্মীদের মিছিল বিধানসভার দিকে আসতে শুরু করে। আর এর মধ্যেই পুলিশের চোখকে ধুলো দিয়ে কার্যত বিধানসভার একেবারে মূল গেটের সামনে পৌঁছে যান আন্দোলনকারীরা।
পুলিশের সঙ্গেই হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন আন্দোলনকারীরা। আর যা নিয়ে একেবারে রণক্ষেত্র পরিস্থিতি তৈরি হয়। বিধানসভার সামনে থেকে আন্দোলন কারীদের তুলতে বল প্রয়োগ করে পুলিশ। একেবারে টেনে হিঁচড়ে আন্দোলনকারীদের প্রিজন ভ্যানে তোলেন পুলিশ আধিকারিকরা। আর তা তুলতে গিয়েই এক রাজ্য সরকারি কর্মীকে ঘুষি মারতে দেখা যায় এক পুলিশ কর্মীকে। একেবারে বুকে এবং পেটে ঘুষি মারার স্পষ্ট ছবি ধরা পড়ে সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরায়। আর এরপরেই শুরু হয়েছে যাবতীয় বিতর্ক।
আরও পড়ুন – চাকরি ফিরে পাচ্ছেন শিক্ষকেরা।
ডিএ সরকারি কর্মীদের প্রাপ্য অধিকার। আর তা চাইতে গেলেও পুলিশের ঘুষি খেতে হবে! আর তা নিয়ে ই প্রশ্ন তুলছেন আন্দোলনকারীরা। কয়েকদিন আগে একই ভাবে প্রতিবাদ করতে নেমে পুলিশের কামড় খেতে হয় এক আন্দোলনকারীকে। যোগ্য চাকরির দাবিতে পথে নেমে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন অরুণিমা পাল। আর সেই সময় তাঁকে প্রিজন ভ্যান তোলার সময় এক পুলিশ কর্মী অরুণিমার হাতে কামড়ে দেয় বলে অভিযোগ। যা নিয়ে রীতিমত প্রশ্নের মুখে পড়ে পুলিশ।
বিশেষ করে পুলিশের কামড়ের পরেই আন্দোলনকারীকে থানাতে আটক করে রাখা হয়। অন্যদিকে অভিযুক্ত পুলিশ কর্মীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। যা নিয়ে আরও বিতর্ক বাড়ে। স্টেট স্টিয়ারিং কমিটির সাধারণ সম্পাদক সঙ্কেত চক্রবর্তী বলেন, পুলিশ দলদাস হয়ে গিয়েছে! না হলে সহকর্মীদেরই এভাবে চড়-ঘুষি মারছে! এমন ভাবা যায় না বলে দাবি স্টেট স্টিয়ারিং কমিটির।
শুধু তাই নয়, যে পুলিশ মারছে তিনিও তো সরকারি কর্মী বলে দাবি সঙ্কেতবাবুর। তবে যে পুলিশ কর্মী আজ ঘুষি মারলেন তিনি আজ তাঁর পরিবারের মুখোমুখি হতে পারবেন? তা নিয়েও প্রশ্ন আন্দোলনকারীদের। তবে যেভাবে পুলিশ কখনও ঘুষি এবং কখনও কামড়ছে তাতে তাঁদের দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন প্রাক্তন পুলিশ আধিকারিকরা। শুধু তাই নয়, এই ঘটনা দুর্ভাগ্যজনক বলে দাবি রাজ্য পুলিশের প্রাক্তন আইজি পঙ্কজ দত্তের। তিনি বলেন, পুলিশের নাম খারাপ হচ্ছে। কিন্ত্য সেদিকে কারোর নজর নেই বলে তিনি আক্ষেপ প্রকাশ করেন।