হুগলি – এসসিআইআর ফর্ম বিলি ও সংগ্রহের অতিরিক্ত চাপ এবার ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনল কোন্নগরের অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ও বিএলও তপতি বিশ্বাসের জীবনে। বুধবার সকাল পৌনে এগারোটা নাগাদ দায়িত্ব পালন করতে গিয়েই হঠাৎ মাথা ঘুরে পড়ে যান তিনি। দ্রুত তাঁকে কোন্নগর পুরসভার মাতৃ সদন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা জানান, তিনি সেরিব্রাল স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছেন। বর্তমানে তাঁর শরীরের বাম দিক অবশ হয়ে রয়েছে এবং তিনি এখনও চিকিৎসাধীন।
উত্তরপাড়া বিধানসভার ২৭৯ নম্বর বুথে, কোন্নগর পুরসভার ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে বিএলও-র দায়িত্বে ছিলেন নবগ্রামের এই ষাট বছরের তপতি। এসসিআইআর ফর্ম বিলি, ফেরত সংগ্রহ, কিউআর কোড স্ক্যান ও অনলাইনে আপলোড—এই সব দায়িত্ব একসঙ্গে সামলাতে হিমশিম খাচ্ছিলেন তিনি। তপতির স্বামী প্রবীর বিশ্বাস জানান, গত কয়েকদিন ধরেই প্রায় সারা রাত ঘুমোতে পারছিলেন না তিনি। বারবার ফোন আসছিল ফর্ম জমা দেওয়ার জন্য। বুথে মোট ১,০১৬টি ফর্ম বিলি করা হলেও এখনও ৪৫টি ফর্ম সংগ্রহ বাকি ছিল।
প্রবীর বিশ্বাস অভিযোগ করেন, তপতির শারীরিক অবস্থার কথা জানিয়ে কাজ বন্ধ করার পরামর্শ দেওয়া হলেও তাঁকে জানানো হয়, দায়িত্ব পালন না করলে চাকরি নাও থাকতে পারে। পরিবারের একমাত্র নির্ভরতা তাঁর চাকরি, কারণ স্বামী প্রবীর অবসরপ্রাপ্ত মিলশ্রমিক এবং মেয়ের আয়ও খুব কম। এই চাপেই মানসিকভাবে ভেঙে পড়ছিলেন তপতি।
তপতির দেওর বাবুলাল বিশ্বাস জানান, নেটওয়ার্ক সমস্যার কারণে ফর্ম স্ক্যান করতে পারছিলেন না তপতি, এতে আরও বেড়ে যাচ্ছিল চাপ। তাঁর অভিযোগ, মানসিক চাপ থেকেই দিদিভাই সেরিব্রাল স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছেন। হাসপাতালের চিকিৎসক সঞ্জয় শী জানান, তপতির উচ্চ রক্তচাপ এবং অনিয়ন্ত্রিত রক্তে-সুগারের কারণেই স্ট্রোক হয়েছে, যা সিটি স্ক্যানে ধরা পড়েছে। তিনি এখন সচেতন আছেন, তবে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। চিকিৎসকেরা আরও জানান, নিয়মিত ওষুধ না খাওয়ার ফলেও পরিস্থিতি জটিল হয়েছে।




















