পাহাড়ে বিমল- বিনয়কে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে অনীত থাপা কি করলেন ? ফের নতুন একটি রাজনৈতিক সমীকরণ। পাহাড়ের রাজনীতিতে পালাবদল যেন লেগেই আছে। সুভাষ ঘিসিং এর জিএনএলএফ থেকে বিমল গুরুংএর গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। আবার তা ভেঙে আজ তৈরী হলো আরও একটি নতুন রাজনৈতিক দল।
ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা বা বিজিপিএম। বৃহস্পতিবার দার্জিলিংয়ের হিলকার্ট রোডে, জিমখানা ক্লাবে আনুষ্ঠানিকভাবে এই দলের ঘোষনা করলেন অনীত থাপা। বিমল গুরুং পাহাড়ে ফিরতেই শেষ পর্যন্ত সদলবলে ‘গুরুর’ কাছেই ফিরে যান বিনয় তামাং। আর বিনয়ের সঙ্গে ক্রমশ দূরত্ব তৈরী হতে থাকে জিটিএ’র প্রেসিডেন্ট অনীত থাপার।
এমনকী গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা ভেঙে নতুন দল তৈরির সম্ভাবনাও তৈরী হয়েছিল। বৃহস্পতিবার সেটাই আনুষ্ঠানিকভাবে করে ফেললেন অনীত থাপা। তৈরি করে ফেললেন নতুন রাজনৈতিক দল, ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা । দলের সভাপতি অনীত নিজেই। তামাংদের চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে বৃহস্পতিবার বিজিপিএমের রীতিমতো মেগা লঞ্চ দেখল পাহাড়।
আর ও পড়ুন নুসরতের সিঁথিতে সিঁদুর ! তাহলে কে ঈশানের বাবা ? চড়ছে জল্পনা
প্রজেক্টরে দেখানো হল নতুন রাজনৈতিক দলের দলীয় পতাকা, মেনিফেষ্ট। পার্টি নেতৃত্বের পরিচয়। নতুন দল তৈরির কারণ। কি নেই সেই অডিও-ভিসুয়াল ম বিজ্ঞাপনে! নতুন এই দলের পতাকার রং হলুদ, ধূসর, লালচে। পতাকায় রয়েছে – হিমালয় পর্বত, তিস্তার নীল জল, চা পাতা আর পাহাড়ের ঐতিহ্যবাহী অস্ত্র খুকরি। সবমিলিয়ে নতুন দলের পতাকাতেই প্রায় গোটা পাহাড়কেই তুলে এনেছেন অনীত থাপার ।
ইতিমধ্যেই এই নতুন দলে মোট ৬০ জনের কেন্দ্রীয় কমিটি তৈরি হয়েছে। প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার জন্মের পর তবে পাহাড়ের রাজনীতি কোন পথে এগোবে?
অনীত থাপার বক্তব্য,” পাহাড়ের মানুষের দাবী ও চাহিদা পুরণ করাই প্রধান লক্ষ্য। পাহাড়ের মানুষের ভালোর জন্য লড়াই করতে নেমে মানুষকে বিভ্রান্ত করতে চাই না।” ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার অন্যতম কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুরজ শর্মার বক্তব্য, ”
পাহাড়ে বিমল গুরুং ফিরে আসার পর মোর্চা কার অধীনে থাকবে তা নিয়ে আদালত পর্যন্ত মামলা গড়ায়। কোর্ট মোর্চা বিনয় তামাং গোষ্ঠী, বিমল গুরুং গোষ্ঠী বলে নাম ব্যবহার করতে বলে, তবে বিনয় তামাং এখন আর আমাদের সঙ্গে নেই তাই নতুন দলের প্রয়োজন ছিল তাই করা হলো।” তবে আদৌ কি সফল হবে এই নতুন দল? প্রশ্নই এখন উঁকি দিচ্ছে পাহাড়বাসীর মনে। গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে বেশ কয়েক বছর আগে কিন্তু মোর্চার আরেক জনপ্রিয় নেতা হরকা বাহাদুর ছেত্রী তৈরি করেছিলেন নতুন দল – জন আন্দোলন পার্টি ।
একটি নির্বাচনে লড়াই করেই তা প্রায় হারিয়ে যায়। এবার অনীত থাপার দলের ভবিষ্যৎ কী হতে চলেছে, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠছে। জন আন্দোলন পার্টির মতোই কি স্বল্পায়ু হবে এই দলটি? নাকি গুরুং-তামাংদের মোর্চাকে চাপে ফেলার মতো শক্তিশালী হিসেবে গড়ে উঠবে এই দল?