কলকাতা: পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই-এর চরচক্র ও স্লিপার সেল খুঁজে বের করতে শনিবার সকাল থেকেই সাতটি রাজ্যের ২০টি স্থানে অভিযান চালাল জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (NIA)। এই অভিযানের মূল কেন্দ্রে ছিল কলকাতার মোমিনপুর, তপসিয়া ও পার্ক সার্কাস এলাকা।
প্রসঙ্গত, গত ২০ মে দিল্লি থেকে আধা সামরিক বাহিনী সিআরপিএফ-এর এএসআই মোতিরাম জাটকে গ্রেফতার করে এনআইএ। তদন্তে জানা যায়, সে গত আড়াই বছর ধরে পাকিস্তানি গোয়েন্দাদের হয়ে চরবৃত্তি চালাচ্ছিল। পাকিস্তান থেকে আসা অর্থ হাওলার মাধ্যমে দুবাই হয়ে কলকাতায় প্রবেশ করত এবং তারপর তা পৌঁছত মোতিরামের কাছে।
কলকাতার সাইবার কাফে ঘিরে সন্দেহ
তদন্তকারীদের দাবি, গত বছরের ৩ এপ্রিল কলকাতার মোমিনপুর এলাকার একটি ট্রাভেল এজেন্সি兼সাইবার কাফে থেকে থার্ড পার্টি অ্যাপ ‘পে পয়েন্ট’-এর মাধ্যমে মোতিরামের অ্যাকাউন্টে তিন দফায় মোট ৫০ হাজার টাকা পাঠানো হয়। ওই কাফের মালিক মাসুদ আলমের ল্যাপটপ ও মোবাইল বাজেয়াপ্ত করেছে এনআইএ। তাঁকে আগামীকাল (সোমবার) এনআইএ-র কলকাতা অফিসে হাজিরার নোটিস ধরানো হয়েছে।
আরও একজন লিঙ্কম্যান আটক
একইসঙ্গে তপসিয়ার একটি হোটেল থেকে আইএসআই-এর সঙ্গে যুক্ত এক সন্দেহভাজন লিঙ্কম্যানকে আটক করেছে এনআইএ। পার্ক সার্কাসেও চলে তল্লাশি। গোয়েন্দা সংস্থার দাবি, কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকার বেশ কিছু স্পর্শকাতর স্থানের ছবি মোতিরামকে সরবরাহ করা হয়েছিল, যা পরবর্তীতে পাকিস্তানে পাঠানো হয়।
আর্থিক লেনদেনের সূত্র ধরে ছক ফাঁস
এনআইএ সূত্রে জানা গিয়েছে, পে পয়েন্ট অ্যাকাউন্ট (৯৮৩*৭) থেকে ২২ হাজার, ১৩ হাজার এবং ১৫ হাজার টাকা পাঠানো হয়েছিল মোতিরামের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে (৬৪৪১০)। ওই লেনদেনের তথ্যের ভিত্তিতে তদন্তকারীরা পৌঁছে যান ৪৫/৩ ডায়মন্ডহারবার রোডে অবস্থিত মাসুদ আলমের সাইবার কাফেতে।
দেশজুড়ে জাল বিস্তার
‘অপারেশন মিরজাফর’-এর আওতায় ইতিমধ্যেই ২০ জনের বেশি ব্যক্তি—যার মধ্যে রয়েছেন ইউটিউবার, ব্যবসায়ী, রাজ্য সরকারি কর্মচারী, প্রতিরক্ষা ও আধাসামরিক বাহিনীর কর্মী—গ্রেফতার হয়েছেন। শনিবারের অভিযান চালানো হয়েছে কলকাতা ছাড়াও দিল্লি, রাজস্থান, হরিয়ানা, মহারাষ্ট্র, উত্তরপ্রদেশ ও অসমে।
