জম্মু-কাশ্মীরে সেনা জঙ্গি সংঘর্ষে মৃত্যু হল এক সেনা অফিসার এবং আরও চার জওয়ানের । জম্মু-কাশ্মীরে ফের সক্রিয় জঙ্গিরা। সোমবার জম্মু-কাশ্মীরের পুঞ্চ জেলায় নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে জঙ্গিদের সংঘর্ষে মৃত্যু হল এক সেনা অফিসার এবং আরও চার জওয়ানের। গোয়েন্দা সংস্থার থেকে ব্যাপক অস্ত্রশস্ত্র সজ্জিত জঙ্গিদের উপস্থিতির সূত্র পেয়ে সুরানকোটের কাছে ডেরা কিন গলির পাশে এক গ্রামে হানা দেয় নিরাপত্তা রক্ষীরা। ভোরের দিকে এই অভিযান শুরু হতেই আঘাত হানে জঙ্গিরা। শুরু হয় গুলির লড়াই।
জানা গিয়েছে, এক জুনিয়র কমিশনড অফিসার (জেসিও) এবং আরও চার সেনাকর্মী গুলিবিদ্ধ হন। ক্ষত গুরুতর হওয়ায় তাঁদের বাঁচানো সম্ভব হয়নি। এদিকে কাশ্মীরের অনন্তনাগ এবং বান্দিপোরায় সেনার সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে মৃত্যু হয়েছে দুই জঙ্গির। গোয়েন্দা সংস্থা থেকে বেশ কিছুদিন ধরেই কাশ্মীর উপত্যকায় জঙ্গি গতিবিধি বেড়ে চলার হুঁশিয়ারি দেওয়া হচ্ছিল। সেই মতো তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছিল সেনা। এদিনও কাশ্মীরের একাধিক জায়গায় কাশ্মীর পুলিশ এবং কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনী একযোগে অভিযান চালিয়েছে। তাতেই নিকেশ হল দুই জঙ্গি। এক জঙ্গি অনন্তনাগে এবং অন্যজন মরল বান্দিপোরায়।
গত কয়েকদিন ধরে ক্রমেই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে জম্মু-কাশ্মীরের পরিস্থিতি। গত ৬ দিনে জম্মু ও কাশ্মীরে নিরাপত্তা বাহিনীর পরিবর্তে একের পর এক হামলা হয়েছে সাধারণ মানুষের উপরে। মৃত্যু হয়েছে ৭ জনের। আর এই অবস্থায় সেনার ব্যাপক অপারেশন চালানো হচ্ছে। অন্যদিকে সেনা-জঙ্গি গুলির লড়াইয়ে উত্তপ্ত ভূস্বর্গ। আর এই অপারেশনে এক সেনা কর্তা সহ পাঁচজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া যাচ্ছে। ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। জানা যাচ্ছে, ঘটনার পর গোটা এলাকাতে ব্যাপক সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। চালানো হচ্ছে অভিযান।
আজ সোমবার সকাল থেকে জঙ্গি দমন অভিযান চালাচ্ছিল ভারতীয় সেনা। জম্মু-কাশ্মীরের রাজৌরি সেক্টরে এই অভিযান চালানো হচ্ছিল সেনার তরফে। জানা যায়, পির পঞ্জল রেঞ্জে লুকিয়ে রয়েছে জঙ্গিরা। এমন খবর আসে ভারতীয় সেনার কাছে। সেই মতো শুরু হয় অভিযান। কিন্তু জঙ্গিরা অতর্কিতে হামলা চালাতে থাকে বলে অভিযোগ। আর তাতেই জখম হন চার সেনা জওয়ান সহ এক অফিসার। দ্রুত তাঁদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে তাঁদের মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। ঘটনার পরেই গোটা এলাকা ঘিরে ফেলা হয়েছে। সেনার তরফে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। জঙ্গিদের খোঁজে শুরু হয়েছ এই তল্লাশি অভিযান।
আর ও পড়ুন পুজোয় কলকাতায় মিলছে হরেক রকমের বাংলাদেশী খাবারের পদ
শেষ পাওয়া খবরে, গুলির লড়াই এখনও চলছে। এলাকায় নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হয়েছে। কোনওভাবেই যাতে জঙ্গিরা পালিয়ে না যায়, সেদিকে নজর সেনাবাহিনী। উল্লেখ্য, কাশ্মীরের পরিস্থিতি নিয়ে রীতিমতো চিন্তায় দিল্লিও। সম্প্রতি জরুরি বৈঠকও সেড়ে ফেলেছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ। ওই বৈঠকে ছিলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালও। এদিকে এই বৈঠকের পরেই দিল্লি থেকে কাশ্মীরে রওনা হয় বিশেষ দল। তবে গোয়েন্দাদের অনুমান আগামী কয়েকদিনে কাশ্মীরে জঙ্গি হামলার মতো ঘটনা আরও বাড়তে পারে। আর সেই অনুযায়ী সেনাকে আরও সতর্ক করা হয়েছে।
গত দুদিনে যাদের আটক করা হয়েছে, তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন জামাত-ই-ইসলামির সঙ্গে যুক্ত রয়েছে বলে সন্দেহ করছে সেনা। এমনকী একই কথা বলছেন গোয়ান্দারাও। অন্যদিকে অন্যান্য সন্ত্রাসী দলের সঙ্গে যুক্ত ওভার গ্রাউন্ড ওয়ার্কারও রয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। অন্যদিকে যারা নিষিদ্ধ ধর্মীয় গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত তাদের খুঁজে বের করতে সমস্ত রকম ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে৷ ধৃতদের মধ্যে বেশ কয়েকজন শ্রীনগর, বুদগাম সহ দক্ষিণ কাশ্মীরের একাধিক জায়গার বাসিন্দা বলে জানা যাচ্ছে।