অর্পিতার ফ্ল্যাট থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা উদ্ধারে স্তম্ভিত বেলঘড়িয়ার দেওয়ান পাড়ার বাসিন্দারা

অর্পিতার ফ্ল্যাট থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা উদ্ধারে স্তম্ভিত বেলঘড়িয়ার দেওয়ান পাড়ার বাসিন্দারা

Facebook
Twitter
LinkedIn
Email
WhatsApp
Print
Telegram

অর্পিতার ফ্ল্যাট থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা উদ্ধারে স্তম্ভিত বেলঘড়িয়ার দেওয়ান পাড়ার বাসিন্দারা । শনিবার সকালে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী তথা বর্তমান শিল্প ও বানিজ্য দপ্তরের মন্ত্রী ডঃ পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে রাজ্যে শিক্ষক নিয়োগে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেফতার করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি। সেই সঙ্গে মন্ত্রীর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের দক্ষিণ কলকাতার ফ্ল্যাট থেকে শুক্রবার রাতে বিপুল পরিমাণ টাকা সহ সোনার গহনা উদ্ধার করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরের গোয়েন্দারা।

 

আর এই ঘটনায় অর্পিতার আদি বাড়ি বেলঘরিয়ার দেওয়ানপাড়ার প্রতিবেশীরা রিতিমত হতবাক। প্রত্যেক সপ্তাহেই অর্পিতা নিজের আদিবাড়ি বেলঘড়িয়ার দেওয়ানপাড়ার,৯ নম্বর আবদুল লতিফ স্ট্রিটের বাড়িতে আসতেন মা-কে দেখতে। প্রতিবেশিরাও তাকে দেখতেন লাল রঙের গাড়ি চড়ে পাড়ায় আসতে।

 

কিন্তু জন্মলগ্ন থেকে বড় হয়ে ওঠা পাড়ার সেই ছোট্ট মেয়েটির যে এত পরিবর্তন হবে,তা কোনওদিন স্বপ্নেও কল্পনা করতে পারেন নি তারা। শাসকদলের হেবিওয়েট মন্ত্রীর সঙ্গে অর্পিতার ঘনিষ্ঠতায় একপ্রকার হতবাক প্রতিবেশিরা। যদিও অর্পিতার মায়ের দাবি,মেয়ে সপ্তাহে এক থেকে দুবার বাড়িতে আসতো। এক-আধ ঘন্টা বাড়িতে থেকে খোঁজখবর নিয়েই ও চলে যেত। ও বেশিরভাগ সময় বাইরে বাইরেই থাকত। মেয়ে মডেলিং করতো,অভিনয় করার পাশাপাশি প্রযোজনা সংস্থার সঙ্গে যুক্ত ছিল এটাই জানি। তবে মেয়ে আরও কি কি কর্মকান্ডের সঙ্গে যুক্ত ছিল,তা জানা নেই। কয়েকদিন আগে মেয়ে জানিয়েছিল ওর শরীর খারাপ।

 

তারপর আর যোগাযোগ হয়নি। এদিকে অর্পিতার ফ্ল্যাট থেকে পাহাড় প্রমান টাকার হদিশ মেলায় রাজ্য জুড়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। সূত্র বলছে,দেওয়ান পাড়ার বাড়ি ছাড়াও বেলঘড়িয়া রথতলা সংলগ্ন এলাকায় ফিডার রোডে ‘ক্লাব টাউন হাউস’ নামক আবাসনে তার আরও দুটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাট রয়েছে। যার একটির আয়তন ১৭ শো বর্গফুট ও অপরটির আয়োতন ১৫ শো বর্গফুট। এদিন আবাসন কতৃপক্ষের তরফে সম্পাদক অঙ্কিত চুরোরিয়া জানান, একসময় অর্পিতা নিজের প্রভাব খাটিয়ে ওই দুটি ফ্ল্যাটে গেষ্ট হাউস তৈরির পরিকল্পনা করেছিলেন।

 

এমনকি সেই কাজে তিনি আবাসন কতৃপক্ষকে না জানিয়ে কার্পেনটারের কাজও শুরু করে দিয়েছিলেন। কিন্তু আমারা উনার সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করে সেই বেআইনি নির্মাণ বন্ধ করে দিই। কেননা আবাসনে বহিরাগত ঢুকলে পরিবেশ নষ্ট হতে পারে বলে আমরা আশঙ্কা করেছিলাম। আমাদের আপত্তিতে তিনি পিছু হটেন। তাছাড়া ওনার ফ্ল্যাট পরিচর্যা বাবদ ৬০ আবাসন কতৃপক্ষের কাছে দেনা রয়েছে। এদিকে বরানগর নেতাজী কলোনি সংলগ্ন বিটি রোডের ওপর অর্পিতার একটি “নেল ডিজাইন পার্লারের” হদিশ পাওয়া গেছে।

 

২০২০ সালে তিনি এই পার্লারটি চালু করেছিলেন। এর আগে দক্ষিণ কোলকাতাতেও তার এই ধরনের একটি পার্লার ছিল বলেও জানা গিয়েছে। এদিকে শনিবার সকাল থেকেই অর্পিতার আদি বাড়িটিকে ঘিরে উৎসুক প্রতিবেশিদের ইতিউতি উঁকি মারতে দেখা যায়। এলাকায় গিয়ে প্রতিবেশিদের থেকে জানা যায়, মুখার্জী পরিবার একসময় পাড়ায় দেওয়ানী প্রথার প্রবর্তক ছিল। সেই থেকেই এলাকার নামকরণ হয় দেওয়ানপাড়া। একসময় ওই এলাকার সমস্ত জমি অর্পিতার পুর্ব পুরুষদেরই ছিল। পরবর্তীকালে সেই জমিগুলি হস্তান্তর হয়ে যায়। এমনকি দেওয়ানপাড়া সার্বজনীন দুর্গাপুজো কমিটির জমিটিও মুখার্জী পরিবারের দান করা।

RECOMMENDED FOR YOU.....

Scroll to Top