আঘাতে কাঁদল তার প্রান, ব্যাথা সারাতে ওষুধের দোকানে হনুমান!

আঘাতে কাঁদল তার প্রান, ব্যাথা সারাতে ওষুধের দোকানে হনুমান!

Facebook
Twitter
LinkedIn
Email
WhatsApp
Print
Telegram

নিজস্ব সংবাদদাতা, বীরভূম, ১৭ নভেম্বর, আঘাত লাগলে বা চোট পেলে ডাক্তারখানা বা ওষুধের দোকানে গিয়ে ওষুধ খেলে ব্যাথার উপশম হয়, এটা সকলেরই জানা। তবে অবশ্যই পৃথিবীর সবচেয়ে বুদ্ধিমান প্রাণী মানুষরা সেই জানাদের মধ্যে পরেন।তবে শুধু মানুষ নন এমনটা জানেন হনুমানও! শুনতে বিস্ময় লাগলেও বাস্তবে সেটাই দেখতে পাওয়া গেল।

ঘটনাটি ঘটেছে গত শনিবার সকালে মল্লারপুর স্টেশন চত্বরে। সকাল থেকে স্টেশনে ঢোকার মুখে দুই পূর্ণবয়স্ক হনুমানের লড়াই দেখতে ভিড় জমেছিল সাধারণ মানুষের। কে কাকে আঘাত করে মাটিতে ফেলতে পারবে তারই লড়াই চলে। হনুমানের মল্লযুদ্ধ দেখে অনেকে মজা পান, আবার অনেকে ভয়ও পান। তবে দুই হনুমানের লড়াইয়ে জখম হয় উভয়ই।

কিছুক্ষণ পর রণে ভঙ্গ দিয়ে একটি হনুমান পালিয়ে যায়। অন্যটি বসে পরে চুপ করে। বেশ কয়েক জায়গায় আঘাত লাগে তার। ক্ষতস্থানে ব্যাথা করতে শুরু করে, আঘাতের চিহ্ন স্পষ্ট বোঝাও যায়। কিন্তু এরপরই ওই হনুমানটি অনুভব করে চিকিৎসা করাতে হবে। তাহলে! প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, “আচমকা একটি টোটোয় চরে বসে জখম হনুমানটি। করুণ চোখে সহযাত্রীদের গায়ে হাত রেখে বোঝানোর চেষ্টা করে যে সে আক্রমণ করবে না। মল্লারপর স্টেশন থেকে খানিকটা দূরে পঞ্চায়েত ভবন। সেখানেই একটি ওষুধের দোকানের সামনে ঝুপ করে নেমে পড়ে হনুমানটি। দোকানের সামনে বেঞ্চে বসে অপেক্ষা করছিল হনুমানটি। দোকানের ভিড় একটু কমতেই লাফ দিয়ে কাউন্টারে উঠে বসে কোমরের নীচে ও শরীরের অন্য অংশে ক্ষতস্থানগুলি দেখাতে থাকে। এমন ভাব করে যেন চিকিৎসা চাইছে।”

দোকানের ওষুধ নিতে এসেছিলেন স্থানীয় এক যুবক। তিনিও হাত লাগান জখম হনুমানের ক্ষতে মলম ও ব্যান্ডেজ করায়। ওষুধ লাগিয়ে ব্যান্ডেজ করে দেওয়ার পরেও ক্ষতস্থানগুলি বারবার দেখাতে থাকায় ওই ওষুধ দোকানদারের মনে হয় ব্যথার জন্য হনুমানটি এরকম করছে। তারপর কাপে জল নিয়ে একটি ব্যথা কমার ওষুধও খাওয়ানো হয় তাকে। সঙ্গে খাওয়ান কয়েকটি কলা। কিছুক্ষণ বসে থেকে আনাজুলের কাঁধে হাত রেখে দোকানের কাউন্টার থেকে রাস্তায় নেমে ফের একটি স্টেশনগামী টোটোয় চড়ে বসে সে।

শনিবারের মল্লারপুরের ঘটনা মনে করিয়ে দেয়, বছর আড়াই আগে এরকমই এক শনিবারের সকালে হুগলির চুঁচুড়া ইমামবাড়া (সদর) হাসপাতালে পুরুষ বিভাগে কর্তব্যরত নার্সদের চমকে দিয়েছিল একটি হনুমান। ডান পায়ে রক্ত ঝরছিল। নার্সদের বারবার ক্ষতস্থান দেখিয়ে হাত নেড়ে ডাকতে থাকে হনুমানটি। অন্যরা ভয় পেলেও একজন নার্স এগিয়ে এসে হনুমানটির চিকিৎসা করেন। ব্যান্ডেজ করে দেন পায়ে। তারপরে তার গায়ে হাত বুলিয়ে দিতে শুশ্রূষা হয়েছে বুঝতে পেরে চলে যায় হনুমানটি।

বন্যপ্রাণী গবেষক শান্তিনিকেতনের ঈশানচন্দ্র মিশ্র বলেন, “যে সব প্রাণী মানুষের কাছাকাছি থাকে তাদের কেউ কেউ মানুষের আচরণ, কার্যকলাপ অনুসরণ করে। হনুমান, বাঁদর বা কুকুরের অনুসরণের ক্ষমতা অনেক বেশি।”

RECOMMENDED FOR YOU.....

Scroll to Top