কথায় বলে বাঙালিকে চেনা যায় সৃষ্টি তে, কৃষ্টি তে সংস্কৃতি আর ঐতিহ্যে। সাহিত্যে সিনেমায় রম্য রচনায় আজও খাঁটি বাঙালিয়ানা মানেই পাড়ার রকে আড্ডা , ভাঁড়ে চা , ডাল আলু পোস্ত, পাত পেরে খাওয়া , পা বাড়িয়ে ঝগড়া , খেলা আর রাজনীতির তর্ক , রবীন্দ্রনাথ আর সত্যজিৎ সাথে সেই কালজয়ী “মাসিমা মালপো খামু” স্মৃতি । সাড়ে চুয়াত্তরের মেসবাড়ি কিংবা ভানু জহরের গোয়েন্দাগিরি সাথে কমিক টাইমিং, আজ আর নেই কিন্তু স্মৃতির কথায় বারবার উঠে আসে সেই ফেলে আসা দিন। এই মুহূর্তে বাঙালির ক্যালেন্ডারে চোখ হয়তো লকডাউনের দিন মনে রাখার জন্য তবু আজকের তারিখ এক ঝলকে ফিরিয়ে নিয়ে যায় “পার্সোনাল অ্যাসিস্ট্যান্ট” এর কাছে , কারণ আজ তার জন্ম শতবর্ষ। হয়তো এবছর করোনা আবহে তার ছবি নিয়ে উৎসব হবে না কিন্তু তিনি ছিলেন, আছেন আর থেকেও যাবেন বাঙালির রম্য রসে। আজকে ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়ের শুভ জন্মদিন। এই সময়ের কঠিন পরিস্থিতিতে যখন অবসাদ বাড়ছে জীবন যাত্রায় , তখন ভানু বাবুর মুখটা মনে করলেই বাঙালি এক মুহূর্তে হেসে ওঠে অন্তর থেকে। বলিষ্ঠ অভিনেতা হোক বা গ্ল্যামারাস নায়ক, তিনি যার পাশেই অভিনয় করুন না কেন , তাকে পর্দায় দেখতে পেলে রসিক বিনোদন তার চূড়ান্ত শিখর ছুঁয়ে ফেলতো। তিনি বাঙালিকে বুঝিয়েছিলেন সংসারের সার সত্য ” আশিতে আসিও না”। “যমালয়ে জীবন্ত মানুষ” পৌঁছলে যে কি কি কান্ড ঘটে বা মহিলা বসের পুরুষ অ্যাসিস্ট্যান্ট যে কিভাবে মানুষের মন জয় করতে পারে তা বোধ হয় ভানু বন্দোপাধ্যায়ের সিনেমা না দেখলে বোঝা যায় না। এক সময় দুর্গাপুজোর মণ্ডপেও গানের পাশাপাশি সমাদরে চলতো তার কমিক। তিনি নিঃসন্দেহে বাঙালি কে হাসতে শিখিয়ে গেছেন একেবারে অকপটে। অমলিন , নির্ভেজাল সেই হাসির সম্রাট কে আজ তার জন্ম শত বর্ষে জানাই আন্তরিক শ্রদ্ধার্ঘ।