আট দিন ব্যাপী নাট্য উৎসব। দুইটি নাট্যগোষ্ঠীর উদ্যোগে পৃথক পৃথক ভাবে পরপর আট দিনব্যাপী দিনহাটায় শুরু হতে চলছে নাট্যউৎসব। প্রগতি নাট্য সংস্থার উদ্যোগে পাঁচ দিন এবং দ্য থার্ড আই পক্ষ থেকে তিন দিন এই নাট্যোৎসব শুরু হতে চলছে। ইংরেজি নতুন বছরের শুরুতেই এই নাট্যোৎসব অনুষ্ঠিত হবে দিনহাটা শহরের মহারাজা নৃপেন্দ্র নারায়ণ স্মৃতি সদনে। প্রগতির উদ্যোগে এই নাট্যোৎসব শুরু হবে পহেলা জানুয়ারি থেকে।
চলবে ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত। আবার দ্য থার্ড আই উদ্যোগে নাট্যোৎসব শুরু হবে ৬ জানুয়ারি থেকে। চলবে ৮ জানুয়ারি পর্যন্ত। দুই সংস্থার উদ্যোগে দিনহাটা মহকুমায় পুনরায় নাট্যচর্চার প্রতি আগ্রহ বাড়াতে জোর প্রস্তুতি শুরু হয়েছে।নাটক হল সমাজের দর্পণ। তার নির্ভরযোগ্য প্রতিচ্ছবি অন্ধবিশ্বাসের প্রাচীর কিংবা কুসংস্কারের বেড়াজাল ইত্যাদি ছিন্ন করে মানুষকে সচেতন করে তোলার ক্ষেত্রে জুড়ি নেই নাটকের। নাটকের মঞ্চায়ন সাধারনের মনে যে চেতনার আলো, জ্ঞানের আলো জালে সে কথা বলেছেন বহু বিদগ্ধজন। কিন্তু আধুনিকতার দাপটে অনেকটাই হারিয়ে যেতে বসেছে নাট্যচর্চা ও নাট্যগোষ্ঠী।
এরই মাঝে দিনহাটার প্রগতি নাট্য সংস্থা ও দ্য থার্ড আই আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে দিনহাটা সহ গোটা জেলার নাট্যচর্চা কে ধরে রাখতে। প্রগতির উদ্যোগে প্রতিবছরের মতো এবছর ও পহেলা জানুয়ারি থেকে দিনহাটায় শুরু হবে আসাম বাংলা নাট্যোৎসব।দুই বছর করোনার জন্য দিনহাটায় এই নাট্যোৎসব বন্ধ ছিল। এ বছর এই উৎসব ১৭ তম বর্ষ। দিনহাটা প্রগতি নাট্য সংস্থার সম্পাদক প্রবীর পাল, সভাপতি পৃথ্বীশ রায়, অমিত মিত্র জানান, মাঝে দুই বছর বন্ধ থাকলেও এ বছর ফের ইংরেজি নতুন বছরের প্রথম সপ্তাহে এই উৎসব শুরু হচ্ছে।
পহেলা জানুয়ারি থেকে ৫ ই জানুয়ারি পর্যন্ত পাঁচ দিনব্যাপী এই উৎসবে ইতিমধ্যে পাঁচটি দল নাটক মঞ্চস্থ করবে। আরও দু’টি দলের সাথে যোগাযোগ চলছে। এদের মধ্যে আসামের একটি দল রয়েছে। যে পাঁচটি দল ইতিমধ্যে সবুজ সংকেত দিয়েছে এদের মধ্যে চারটি কলকাতার এবং একটি কোচবিহারের। এছাড়াও আসাম ও আরো একটি দলকে এই নাট্য উৎসবে আনার জন্য চেষ্টা চলছে।
আরও পড়ুন – চাকরি ফিরে পাচ্ছেন শিক্ষকেরা।
প্রগতির পাশাপাশি দ্য থার্ড আই নামে অপর একটি সংস্থার পক্ষ থেকেও জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে তিন দিনব্যাপী নাট্যোৎসব শুরু হচ্ছে। সংস্থার সম্পাদক অনির্বাণ নাগ, জয়ন্ত চক্রবর্তী , সিতাংশু মুস্তাফি , আব্দুল সামাদ জানান, এ বছর আমরা নাট্যোৎসব করতে চলছি। ইংরাজি নতুন বছরের ছয় জানুয়ারি থেকে তিন দিনের এই নাট্যোৎসব চলবে আট জানুয়ারি পর্যন্ত। এই উৎসবে থার্ড আয়ের কলাকুশলীদের নাটক মঞ্চস্থ ছাড়াও শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি ও মাথাভাঙ্গা থেকেও নাট্যদল গুলি অংশ নেবে। করোনা কালে গত দুই বছর দিনহাটায় সব রকম নাট্যোৎসব থেকে শুরু করে নাট্যচর্চা বন্ধ ছিল। পরিস্থিতি ধীরে ধীরে সাহাবী খাওয়ায় দুইটি গোষ্ঠীর উদ্যোগে আবারও শুরু হচ্ছে পৃথক পৃথক নাট্যোৎসব। আর এই উৎসব ঘিরে ইতিমধ্যেই উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে প্রস্তুতি শুরু হয়েছে।
দিনহাটা সংস্কৃতি প্রেমীদের অনেকেই জানান, এক সময় দিনহাটায় নাটকের প্রতি একটি আলাদা আকর্ষণ কাজ করতো। বর্তমান সময়কালে চর্চার অভাবে অনেক নাট্যদল যেমন হারিয়ে গিয়েছে তেমনি নতুন নতুন প্রতিভাও আর সেভাবে উঠে আসছে না। এরইমধ্যে দিনহাটার এই দুই সংস্থা যেভাবে নাট্যোৎসবের আয়োজন করেছে তাতে কিছুটা হলেও পুরনো সেই দিনের কথা মনে পড়বে।