লক্ষ্য আন্তর্জাতিক ড্রাম অফ শো, নিবিড় অনুশীলনে মগ্ন ষষ্ঠ শ্রেণির উৎস। শহরের সাংস্কৃতিক জগত মানেই মেয়েরা নৃত্য বা গান, ছেলেরা গান বা তবলা, এটাই ছিল প্রথাগত রীতি। আন্তর্জাতিক প্রেক্ষিতে পাল্টেছে সাংস্কৃতিক জগতের পরিবেশ। এখন রায়গঞ্জের মত ছোট শহরেও দেশীয় বাদ্যযন্ত্রের বাইরে বিদেশী ধ্রুপদী বাদ্যযন্ত্র বাজানোর চাহিদা আগের তুলনায় অনেকটা বেড়েছে।
সেরকমই এদিন দেখা মিলল রায়গঞ্জ রামকৃষ্ণ স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র উৎস সরকারের। ৪ বছর বয়স থেকেই তার বাবা মা হাতে তুলে দিয়েছেন ব্যান্ডের স্টিক। এখন সেই স্টিক-ই সুরের ছন্দ তুলছে সাত সাতটি ড্রামে, একসাথে। পড়াশোনার বাইরে উৎস’র জগত বলতে ঘরে রাখা ড্রাম সেট।তাতেই ৩ থেকে ৪ ঘন্টা নিবিড় অনুশীলনে মগ্ন থাকে সে। তার লক্ষ্য আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে প্রসিদ্ধ ড্রাম অফ শো। সেখানে একবার যদি নিজেকে সঠিকভাবে উপস্থাপন করা যায়, তাহলেই খুলবে আন্তর্জাতিক দরজার কড়িকাঠ।
তাই দৃপ্ত কন্ঠে উৎস বলে, লকডাউনের আগে অঙ্কুর স্যারের কাছে ড্রাম শিখতাম। কিন্তু বিগত দুই বছর ধরে রুপাঞ্জন স্যারের তত্ত্বাবধানে তালিম নিচ্ছি। নিয়ম করে ৩ ঘন্টার মত অনুশীলন করি। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে পৌঁছাতে ড্রাম অফ শো তে অংশ নেব, এটাই লক্ষ্য। বাবা, মায়ের ইচ্ছে পূরণ করতে এগিয়ে চলেছি।
উৎসকে যাবতীয় সহয়তা করে চলেছেন তার বাবা সুমন সরকার ও মা মধুমিতা সরকার। বাবা মায়ের ইচ্ছে, বেশিরভাগ কচিকাঁচারা তো দেশীয় বাদ্যযন্ত্রের আকর্ষনে রয়েছে, এই যন্ত্রটার প্রতি উৎস’র নিজেরই একটা মোহ আছে। সেটাকেই চ্যালেঞ্জ হিসেবে উৎস এগিয়ে চলেছে।
উৎস’র বাবা সুমন সরকার বলেন, ছোট থেকেই উৎস বাদ্য যন্ত্রের প্রতি আকর্ষণ অনুভব করত। তাই ওর মা মধুমিতার ইচ্ছেতে এই ড্রাম স্টিক হাতে তুলে দিয়েছি। যতটা পারব, ওর জন্য করব। এদিকে উৎস’র ছন্দ জ্ঞান এবং প্রতিভা দুর্দান্ত হওয়ায় তাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন তার প্রশিক্ষক রুপাঞ্জন দেব। তিনি বলেন, আগামী দিনে ওর প্রতিভার জোরে লম্বা পথ পাড়ি দেবে উৎস। প্রশিক্ষকের কথায়, উৎস’র ছন্দ, তাল ও গানের সাথে বাজনার কনসেপ্ট ভীষণ পরিস্কার।
অনুশীলন করলে আগামী দিনে শহরের মান উজ্জ্বল করবে।জানা গেছে, ইতিমধ্যেই শহরের বেশ কয়েকটি জায়গায় উৎস এককভাবে ড্রাম বাজিয়েছে। এবং সর্বত্রই সে প্রশংসিত হয়েছে। নিবিড় ভাবে মগ্ন হয়ে উৎস যেভাবে একনাগাড়ে অনুশীলন করে চলেছে, তাতে আগামী দিনে শহরের নাম উজ্জ্বল করা শুধু সময়ের অপেক্ষা, এমনটাই ধারনা রায়গঞ্জ শহরের সাংস্কৃতিক মহলের।