আন্তর্জাতিক স্থলবন্দরকে আধুনিকীকরণের আবেদন জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে খোলা চিঠি সমাজসেবীর

আন্তর্জাতিক স্থলবন্দরকে আধুনিকীকরণের আবেদন জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে খোলা চিঠি সমাজসেবীর

Facebook
Twitter
LinkedIn
Email
WhatsApp
Print
Telegram

আন্তর্জাতিক স্থলবন্দরকে আধুনিকীকরণের আবেদন জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে খোলা চিঠি সমাজসেবীর । বাংলাদেশ সীমান্তের আন্তর্জাতিক স্থল বন্দর চ্যাংড়াবান্ধা সহ বৈদেশিক বাণিজ্য পথ ও ইমিগ্রেশন চেকপোস্টকে আধুনিকীকরণের আবেদন জানিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিকট খোলা চিঠি পাঠালেন চ্যাংড়াবান্ধার বিশিষ্ট সমাজসবী তথা শিক্ষক সুনির্মল গুহ। তিনি সেই সাথে চ্যাংড়াবান্ধা গ্রাম পঞ্চায়েতের একজন পঞ্চায়েত সদস্যও। বানিজ্যনগরী চ্যাংড়াবান্ধার সার্বিক উন্নয়নে তিনি মুখ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।

 

কারন ইতিপূর্বে ভারতের রেলমন্ত্রী থাকাকালীন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ১৯৬৮ সালের ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ চ্যাংড়াবান্ধার রেলপথের নবরূপায়ন ঘটিয়েছেন। নিউ ময়নাগুড়ি থেকে চ্যাংড়াবান্ধা হয়ে যোগীঘোপা রেললাইন চালু করেছেন। রেলমন্ত্রীর পর বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হয়ে চ্যাংড়াবান্ধার উন্নয়নে গঠন করেছেন চ্যাংড়াবান্ধা উন্নয়ন পর্ষদ। সেই পর্ষদের অর্থানুকূল্যে নির্মিত হয়েছে রাস্তা ঘাট, নিকাশি ব্যবস্থা। কিন্তু চ্যাংড়াবান্ধার সার্বিক উন্নয়নে কেন্দ্র ও রাজ্য উভয় সরকারের যৌথ প্রয়াস চ্যাংড়াবান্ধাকে বিশ্বের বৈদেশিক বানিজ্যের মানচিত্রে প্রতিষ্ঠিত করতে পারে।

 

চ্যাংড়াবান্ধা আদতে আন্তর্জাতিক বৈদেশিক বাণিজ্য কেন্দ্র হলেও আজও আদর্শ বৈদেশিক বাণিজ্য কেন্দ্র হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারেনি। কারন পরিকাঠামোগত নানান ঘাটতি রয়েছে। এপ্রসঙ্গে কেন্দ্র সরকারের প্রতি ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, প্রতিবছর চ্যাংড়াবান্ধা থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা
শুল্ক বাবদ আদায় করা হলেও চ্যাংড়াবান্ধার উন্নয়নে একেবারে উদাসিন কেন্দ্র সরকার। কেন্দ্র সরকারের তরফে শুধু প্রতিশ্রুতি ছাড়া আর কিছুই মিলছে না বলে তিনি দাবি করেছেন।

 

তিনি চিঠিতে উল্লেখ করেছেন, চ্যাংড়াবান্ধা সীমান্তপথ দিয়ে প্রতিদিন প্রায় পাঁচশোরও বেশি ট্রাক পন্য নিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। অথচ সেই সীমান্ত পথে আজও বাঁশের বেড়ার ফটক। এটা ভারতের মতো দেশের পক্ষে লজ্জার এই পথেই প্রত্যহ তিনশোরও বেশি পাসপোর্টধারী যাতাযাত করেন। অথচ পর্যটকদের জন্য নুন্যতম পরিকাঠামো সেখানে গড়ে ওঠেনি। পর্যটকদের জন্য কোনও বিশ্রামাগার না থাকায় রোদে জলে তাদের খোলা আকাশের নিচে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। পর্যটকদের জন্য রাত্রিযাপনের কোনও ব্যবস্থা সেখানে নেই, নেই শৌচালয়ের ব্যবস্থা। বার বার সেখানে পর্যটকদের জন্য পরিকাঠামো তৈরির দাবি উঠলেও কাজের কাজ কিছু হয়নি। শুধুই মিলেছে আশ্বাস। এনিয়ে পর্যটকরা ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন।

 

চ্যাংড়াবান্ধা থেকে পাঁচ হাজারেরও বেশি ট্রাক পন্য নিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। ফলে প্রয়োজনের তুলনায় যথেষ্ট পার্কিং ব্যবস্থা না থাকায় রাস্তার ওপর অবৈধ পার্কিং যানজট ও দূর্ঘটনার কারন হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠেছে, যে চ্যাংড়াবান্ধা স্থল বন্দর সরকারের হাজার হাজার কোটি টাকা আয়ের উৎস, সেই স্থল বন্দরের প্রতি সরকারের এই বঞ্চনা কেন?

 

চ্যাংড়াবান্ধার সামাজিক সংগঠন সৃজন এর কর্নধার সুনির্মল গুহ চ্যাংড়াবান্ধার সার্বিক উন্নয়নে একগুচ্ছ মাস্টার প্ল্যান সেই খোলা চিটিতে উল্লেখ করেছেন। তার মধ্যে রয়েছে, চ্যাংড়াবান্ধা বৈদেশিক বানিজ্যকেন্দ্রকে ইন্টিগ্রেটেড চেকপোস্টে পরিনত করা, চ্যাংড়াবান্ধা রেলস্টেশনে পদাতিক সহ দূরপাল্লার ট্রেনের স্টপেজের দাবি, বৈদেশিক বানিজ্য পথের আধুনিকীকরণ, পর্যটন কেন্দ্র সহ ক্ষুদ্র ও বৃহৎ শিল্প গড়ে তোলা, বানিজ্য নগরীর সৌন্দর্যায়ন, মার্কেট কমপ্লেক্স, সেলফি জোন তৈরি করা প্রভৃতি।

আরও পড়ুন – পাহাড়ের ইতিহাস তুলে ধরে আক্ষেপ প্রকাশ মুখ্যমন্ত্রীর

মেখলিগঞ্জের বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী পরেশ চন্দ্র অধিকারী জানান, কেন্দ্রের উদাসীনতায় চ্যাংড়াবান্ধার ইমিগ্রেশন চেকপোষ্ট ও বৈদেশিক বানিজ্যপথের উন্নয়ন সম্ভব হয়ে ওঠেনি। কংগ্রেস সরকার থেকে বর্তমানের এনডিএ সরকার একই পথে হাঁটছেন।
বিজেপির জলপাইগুড়ি লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ ডঃ জয়ন্ত রায় জানিয়েছেন, রাজ্য সরকার জমি দিতে ব্যর্থ হওয়ায় চ্যাংড়াবান্ধার জন্য কেন্দ্র সরকার অর্থ বরাদ্দ করেও কাজ করতে পারছেন না। রাজ্য সরকারের অসহযোগিতাই চ্যাংড়াবান্ধার উন্নয়নের পথে সবচেয়ে বড়ো বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

RECOMMENDED FOR YOU.....

Scroll to Top