আপনি যদি পাখির রাজত্বে হারিয়ে যেতে চান, তা হলে চলে আসুন এখানে। আপনি যদি নাম না জানা নানা রঙ বাহারী পাখির রাজত্বে হারিয়ে যেতে চান, তা হলে চোখ বন্ধ করে হাজারিখিল চলে যান। যেখানে হাজারও নাম না জানা পাখির আনাগোনা। হাজারিখিল অভয়ারণ্য আপনাকে পাখির কলকাকলি মুখর আবেশময় এক জগতে নিয়ে যাবে। বন্যপ্রাণীতে মুখর হাজারিখিলে দেখা মেলে নানা ধরনের জীবজন্তুর।
এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো– ভাল্লুক, বনবিড়াল, মেছোবাঘ, শিয়াল, মায়া হরিণ, সাম্বার, বন কুকুর, বনছাগল, বানর ও হনুমান। আবার মাঝে মাঝে দেখা মেলে চিতাবাঘেরও! মোট আট প্রজাতির উভচর এবং ২৫ প্রজাতির সরীসৃপ আছে এ বনে। তবে পাখির অভয়ারণ্য হিসেবে খ্যাত এ বনে রয়েছে প্রায় ১২৩ প্রজাতিরও বেশি পাখি! সে হিসেবে হাজারিখিল অভয়ারণ্যকে পাখিপ্রেমীদের স্বর্গ বললেও ভুল হবে না।
বিশেষ করে বিপন্নপ্রায় কাঠময়ূর আর মথুরার দেখা পাওয়া যায় এখানে। আছে কাউ ধনেশ ও হুতুম পেঁচাও। বিভিন্ন প্রজাতির উদ্ভিদের সমারোহ থাকার কারণে চিরসবুজ এ বনে এমন কিছু প্রজাতির পাখি পাওয়া গেছে, যা অন্য কোনো বনে সচরাচর দেখা যায় না। অভয়ারণ্যের ভেতর ঢুকতেই দেখবেন, হাতের বামপাশে বিশাল চা বাগান আর ডান পাশে সিঁড়ি বেয়ে উঠেই বন্যপ্রাণীর অভয়ারণ্য।
আর ও পড়ুন বাড়িতে তৈরি করে ফেলুন শাহী মালাই পনির ও আচারি পনির
এখানে আপনি হারিয়ে যাবেন চা বাগানের দৃষ্টিনন্দন সৌন্দর্যে। কিছু সময়ের জন্য হলেও মনে হবে, পাহাড়ি অঞ্চলে বসবাস করতে পারলেই ভালো হতো। এ ছাড়া হাজারিখিলে নানা ধরনের বৃক্ষের সমাহারও উপভোগ করতে পারবেন। তবে চিরহরিৎ গাছ-ই বেশি এখানে। এ ছাড়া আছে গর্জন, চাপালিশ, সেগুন, কড়ই, মেহগনি।
বাংলাদেশের চট্টগ্রাম শহর থেকে ৬২ কিলোমিটার উত্তরে রামগড়-সীতাকুণ্ড বনাঞ্চলের মাঝে প্রায় ৩,০০০ একর জায়গা জুড়ে অবস্থিত ফটিকছড়ি হাজারিখিল অভয়ারণ্যপ্রকৃতির শোভা বর্ধন করে চলেছে। বিরল প্রজাতির বৃক্ষ ও প্রাণীর আবাসস্থলের কারণে ২০১৪ সালের ৫ আগস্ট এই বনাঞ্চলকে বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হয়।