দেশ – রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) শতবর্ষ পূর্তি উপলক্ষে বুধবার এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপ নিল কেন্দ্র সরকার। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী প্রকাশ করলেন বিশেষ এক ডাকটিকিট ও ১০০ টাকার স্মারক মুদ্রা। স্বাধীন ভারতের ইতিহাসে এই প্রথমবার ভারতমাতার ছবি স্থান পেল কোনও ভারতীয় মুদ্রায়।
নতুন স্মারক মুদ্রার এক পাশে জাতীয় প্রতীক এবং অন্য পাশে ভারতমাতার ছবি সঙ্গে সিংহের অবয়ব ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। ভারতমাতার সামনে নতজানু অবস্থায় দেখা গিয়েছে স্বয়ংসেবকদের। মুদ্রায় খোদাই রয়েছে আরএসএস-এর মূলমন্ত্র: “রাষ্ট্রে স্বাহা, ইদম্ রাষ্টায়, ইদম্ ন মম”—অর্থাৎ “সব কিছু দেশের জন্য, সব দেশেরই, আমার কিছু নয়।” প্রধানমন্ত্রী মোদীর কথায়, এটি শুধু গর্বের নয়, স্বাধীন ভারতের ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত।
ডাকটিকিটে তুলে ধরা হয়েছে ১৯৬৩ সালের প্রজাতন্ত্র দিবসের প্যারেডে আরএসএস স্বয়ংসেবকদের অংশগ্রহণের দৃশ্য। প্রধানমন্ত্রী জানান, এই প্রকাশনা কেবল ভারতমাতাকে শ্রদ্ধা জানানো নয়, বরং আরএসএস-এর শতবর্ষব্যাপী সমাজসেবা ও জাতি গঠনের প্রতীক।
সংস্কৃতি মন্ত্রক আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আরএসএস-এর সাধারণ সম্পাদক দত্তাত্রেয় হোসাবলে, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্তা এবং সংস্কৃতি মন্ত্রী। উল্লেখযোগ্যভাবে, আরএসএস ১৯২৫ সালে নাগপুরে কেশব বালিরাম হেডগেওয়ারের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয়। সাংস্কৃতিক সচেতনতা, শৃঙ্খলা, সমাজসেবা ও দায়িত্ববোধ গড়ে তোলার উদ্দেশ্যেই এই সংগঠন গড়ে ওঠে।
শতবর্ষ উপলক্ষে প্রকাশিত এই স্মারক মুদ্রা ও ডাকটিকিট আরএসএস-এর সমাজসেবামূলক কর্মকাণ্ডকেও সামনে এনেছে। রক্তদান শিবির, খাদ্য বিতরণ, কেদারনাথ ও বিহার বন্যায় সহায়তা, এমনকি কোভিড অতিমারির সময় ত্রাণসেবার মতো কার্যকলাপ তুলে ধরা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী মোদীও একসময় আরএসএস-এর ‘প্রচারক’ ছিলেন, পরে বিজেপিতে যোগ দেন—যে দলটির মতাদর্শগত অনুপ্রেরণা আসে আরএসএস-এর হিন্দুত্ববাদী দর্শন থেকে।
এই প্রকাশনার মধ্য দিয়ে আরএসএস-এর শতবর্ষপূর্তি উদ্যাপন নতুন মাত্রা পেল, যা একদিকে সংগঠনের ঐতিহ্যকে স্মরণ করল, অন্যদিকে সমাজসেবার অঙ্গীকারকে আরও দৃঢ়ভাবে তুলে ধরল।
