আলিপুরদুয়ার মাদারিহাটে ফের বুনো হাতির তাণ্ডব, দলছুট হাতির হামলায় মহিলার মর্মান্তিক মৃত্যু

আলিপুরদুয়ার মাদারিহাটে ফের বুনো হাতির তাণ্ডব, দলছুট হাতির হামলায় মহিলার মর্মান্তিক মৃত্যু

Facebook
Twitter
LinkedIn
Email
WhatsApp
Print
Telegram



আলিপুরদুয়ার – আলিপুরদুয়ার জেলার মাদারিহাটে আবারও বুনো হাতির তাণ্ডবে কেঁপে উঠল এলাকা। রামঝোরা চা-বাগানে দলছুট একটি বুনো হাতির হামলায় সোমবার গভীর রাতে মৃত্যু হল এক মহিলার। শ্রমিক আবাসের কাছে আচমকাই হাজির হয় হাতিটি। স্থানীয়দের বক্তব্য, মৃত মহিলা ঘর থেকে বেরোতেই প্রচণ্ড গতিতে তেড়ে আসে হাতিটি এবং মুহূর্তের মধ্যেই তাঁকে পিষ্ট করে দেয়। ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়।

এই ঘটনার পর আতঙ্ক ছড়িয়েছে গোটা মাদারিহাট জুড়ে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, গত অক্টোবরেই এই অঞ্চলে বুনো হাতির হামলায় চারজনের মৃত্যু হয়েছিল। তার পরেও হাতির আনাগোনা কমেনি, বরং শীতের শুরু থেকেই হাতির চলাচল আরও বেড়েছে। মাদারিহাট, মধ্য খয়েরবাড়ি, কুমারগ্রামসহ আশপাশের গ্রামগুলিতে এখন ভয়াবহ আতঙ্কের ছায়া নেমে এসেছে। সূর্য অস্ত গেলেই পথঘাট ফাঁকা হয়ে যায়। চা-বাগানের শ্রমিকদের অনেকেই সন্ধের পর ঘর থেকে বেরোতে সাহস পাচ্ছেন না।

রামঝোরা চা-বাগানের শ্রমিক মিনা দেবীর কথায়, “সন্ধে হলেই বুক ধড়ফড় করে। কখন যে কোথা থেকে হাতি বেরিয়ে আসবে বলা যায় না।” গ্রামবাসীদের দাবি, বনদফতরের টহলদারি থাকলেও তা যথেষ্ট নয়। দুর্গম চা-বাগান ও গ্রাম অঞ্চলে টহলদারি বাড়ানোর তাগিদ দিচ্ছেন তাঁরা। হাতি তাড়ানোর জন্য আলো, সাইরেন বা ব্যারিকেড—কোনো ব্যবস্থাই কার্যকর হচ্ছে না বলে অভিযোগ। লোকালয়ের এত কাছে হাতির প্রবেশে অসহায় হয়ে পড়ছেন মানুষ।

বনদফতর জানিয়েছে, হাতিটি সম্ভবত দলছুট অবস্থায় জনবসতিতে ঢুকে পড়েছিল। দ্রুত তাকে চা-বাগান এলাকা থেকে সরিয়ে দেওয়ার কাজ চলছে। শীতের সময় হাতির গতিবিধি বাড়ায় নজরদারি আরও বাড়ানো হবে বলেও আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। তবে স্থানীয়দের বক্তব্য, শুধু টহলদারি বাড়ালেই চলবে না—হাতির চলাচলের স্বাভাবিক পথ চিহ্নিত করা, চা-বাগান ও বসতির মধ্যে নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা এবং হাতি প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে আধুনিকীকরণ করতেই হবে।

ক্রমাগত এই ধরনের মৃত্যুর ঘটনায় ক্ষোভ চরমে পৌঁছেছে। বাসিন্দাদের আশঙ্কা—“এভাবে চলতে থাকলে আরও বড় দুর্ঘটনা ঘটতে সময় লাগবে না।”

RECOMMENDED FOR YOU.....

Scroll to Top