কলকাতা – কলকাতার আলিপুর চিড়িয়াখানায় প্রাণীর সংখ্যা নিয়ে উঠেছে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩-২০২৪ অর্থবর্ষে যেখানে মোট প্রাণীর সংখ্যা ছিল ৬৭২, সেখানে ২০২৪-২০২৫ সালে সেই সংখ্যা আচমকাই নেমে দাঁড়িয়েছে ৩৫১-তে। অর্থাৎ ৩২১টি প্রাণী কোথায় গেল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে বিভিন্ন মহলে। এই আশঙ্কাজনক গরমিল সামনে আসতেই কলকাতা হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা।
আদালত সূত্রে খবর, মামলাটির পরবর্তী শুনানি হতে পারে ২৪ জুলাই। মামলাকারী সংস্থার দাবি, শুধু এই বছর নয়, গত তিন দশক ধরেই চিড়িয়াখানায় প্রাণীর সংখ্যা নিয়ে অস্বচ্ছতা এবং সন্দেহজনক হিসেব দেখা যাচ্ছে। তাদের আবেদন, অন্তত গত ১০ বছরের বিস্তারিত রিপোর্ট খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিক আদালত।
এই অভিযোগ সামনে আসতেই নড়েচড়ে বসেছে কেন্দ্রীয় চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ। তারা ইতিমধ্যেই একটি প্রতিনিধি দল পাঠাচ্ছে আলিপুর চিড়িয়াখানায় সরেজমিনে তদন্তের জন্য। প্রতিনিধি দল রাজ্য বন দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকেও বসবে বলে জানা গেছে। যদিও রাজ্য বন দফতরের তরফে দাবি করা হয়েছে, তাদের দেওয়া তথ্য একেবারে সঠিক এবং স্বচ্ছ। বরং কেন্দ্রের তরফেই ভুল রিপোর্ট তৈরি হয়েছিল, যা পরে সংশোধনের জন্য জানানো হয়।
চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, এটি হয়তো একটি ‘গণনার বিভ্রান্তি’—কোনও ইচ্ছাকৃত গরমিল নয়। কিন্তু মামলাকারী সংস্থার অভিযোগ আরও গুরুতর। তাদের আশঙ্কা, এটি কোনও পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের অংশ। অভিযোগ, চিড়িয়াখানার মূল্যবান জমি বেচাকেনার পরিকল্পনার জেরে ইচ্ছাকৃতভাবে প্রাণীর সংখ্যা কম দেখানো হচ্ছে। এমনকি কেউ কেউ পাচারের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না।
চিড়িয়াখানার মতো সংবেদনশীল ও পরিবেশগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ স্থানে এমন অভিযোগ সামনে আসায় উদ্বেগ ছড়িয়েছে পরিবেশপ্রেমী মহলে। এখন প্রশ্ন, তদন্তে আসল সত্য সামনে আসবে কি? হাই কোর্টের নির্দেশে কি আদৌ ঘটনার পূর্ণাঙ্গ পর্দাফাঁস হবে? নজর এখন ২৪ জুলাইয়ের শুনানির দিকেই।
