ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রায় হামলা চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে মস্কো। রাশিয়া প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিনের আবেদনে সাড়া দিয়ে বিদেশে ফৌজ পাঠানোর অনুমতি দিল রুশ পার্লামেন্ট।বিশ্লেষকদের ধারণা, এবার ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রায় হামলা চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে মস্কো। সংবাদ সংস্থা এএফপি সূত্রে খবর, মঙ্গলবার দেশের বাইরে সেনা মোতায়েনের জন্য অনুমতি চেয়ে রুশ পার্লামেন্টে আবেদন জানান প্রেসিডেন্ট পুটিন।
আর সংঘাতের আশঙ্কা আরও উসকে সেই আবেদনে সবুজ সংকেত দিয়েছে রুশ সংসদের উচ্চকক্ষ ‘ফেডারেশন কাউন্সিল’। পার্লামেন্টের ১৫৩ সদস্যের সবাই প্রেসিডেন্টের সিদ্ধান্তের সঙ্গে সহমত। এর ফলে ইউক্রেনের রুশপন্থী ‘স্বাধীন’ অঞ্চল ডোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে পূর্ণমাত্রায় সেনা পাঠানো শুরু হবে এবং যুদ্ধ স্রেফ সময়ের অপেক্ষা বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
সংসদের উচ্চ কক্ষের অনুমতি পাওয়ার পর এক বিবৃতিতে রাশিয়ার ডেপুটি প্রতিরক্ষা মন্ত্রী নিকোলে প্যানকভ জানিয়েছেন, ‘ইউক্রেনের সঙ্গে আলোচনা থমকে গিয়েছে। ইউক্রেন নেতৃত্ব হিংসা ও রক্তপাতের পথ নিয়েছেন। তাই আমাদের হাতে আর কোনও বিকল্প নেই।’ তাঁর অভিযোগ, পূর্ব ইউক্রেনের রুশপন্থী সমর্থিত অঞ্চল সেনা ও যুদ্ধ সরঞ্জামে মুড়ে দিয়েছে ইউক্রেন।
আর ও পড়ুন ভক্তদের জন্য খুলে গেল বেলুড় মঠ
তাই অন্য রাজ্যের সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং আগ্রাসন রুখতে রাশিয়া লড়াই করবে। এদিকে রুশ পার্লামেন্ট অনুমতি দিতেই পরমাণু অস্ত্রের মহড়া শুরু করে দিয়েছে রাশিয়া। যে মহড়ার তত্ত্বাবধানে খোদ রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিন। বেলারুশের নেতা অ্যালেকজান্ডার লুকাশেঙ্কোকে পাশে নিয়ে কম্পিউটারের পর্দায় যৌথ পরমাণু মহড়া দেখলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিন। জাহাজ, বিমান ও ডুবোজাহাজ থেকে পরমাণু অস্ত্রের মহড়া চলছে।
জল ও স্থল থেকে নির্ভুল দক্ষতায় নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুকে আঘাত হানতে সফল হয়েছে তা। মহড়া শেষে ক্রেমলিন জানিয়েছে, রাশিয়া পরমাণু অস্ত্রের মহড়ায় ‘হাইপারসনিক’ এবং ‘ক্রুজ’ ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। বিশেষ জায়গা থেকে গোটা মহড়ায় চোখ রেখেছিলেন প্রেসিডেন্ট পুটিন ও বেলারুশের নেতা লুকাশেঙ্কো। মহড়া শেষে সেনা আধিকারিকদের অভিনন্দনও জানিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট।
এদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আবার দাবি করেছেন, ইউক্রেনে পূর্ণ মাত্রায় আগ্রাসন চালাচ্ছে রুশ হানাদার বাহিনী। এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার কূটনৈতিক আলোচনার আশায় জল ঢেলে রুশ বিদেশমন্ত্রী সের্গেই লাভরভের সঙ্গে বৈঠক বাতিল করার কথা ঘোষণা করলেন মার্কিন বিদেশ সচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। আগামী বৃহস্পতিবার ওই বৈঠক হওয়ার কথা ছিল।
অন্যদিকে, ইউক্রেন ইস্যুতে আন্তর্জাতিক মঞ্চে কার্যত একঘরে হয়েছে রাশিয়া। রুশ ব্যাঙ্ক ও পুটিন ঘনিষ্ট রুশ ধনকুবেরদের উপর একের পর এক অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে আমেরিকা। একই পথে হাঁটছে ব্রিটেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও কানাডা। পুটিনের আগ্রাসনের নিন্দা করেছে রাষ্ট্রপুঞ্জ।