ইউনেস্কো হেরিটেজ সাইটে বসে নস্টালজিয়ায় ভরা ঐতিহ্যবাহী টয় ট্রেনের কামরায় গজিয়ে উঠবে আস্ত রেস্তোরাঁ! ট্রেনের কামরায় বসে রসনা তৃপ্তি সে নতুন কিছু নয়।কিন্তু ইউনেস্কো হেরিটেজ সাইটে বসে নস্টালজিয়ায় ভরা ঐতিহ্যবাহী টয় ট্রেনের কামরায় যদি গজিয়ে ওঠে আস্ত রেস্তোরাঁ!দার্জিলিং হিমাল্যয়ান রেলওয়ের
তরফে এমনই উদ্যোগ নিয়ে হেরিটেজ স্থানে তৈরি হচ্ছে টয়ট্রেনের কোচ রেস্তোরাঁ।পাহাড়ের কোলে মেঘের লুকোচুরির সঙ্গে ঐতিহাসিক তকমায় ভূষিত ন্যারোগেজ লাইনের উপর দাঁড়িয়ে থাকা ঐতিহ্যবাহী টয়ট্রনের কামরায় বসে রসনা তৃপ্তির সুযোগ মিলবে এবারে পর্যটকদের।
যা চলতি শীতে পাহাড় প্রিয় পর্যটকদের কাছে নয়া ডেস্টিনেশন হয়ে উঠতে চলেছে বলেই মনে করা হচ্ছে। সেলুলয়েডের ছোয়ায় খেলনা ট্রেন ঘিরে এক অন্য মাত্রার উন্মাদনা রয়েছে পর্যটকদের মধ্যে। আর সেই নস্টালজিয়ার মোড়কে বাণিজ্যিক রূপরেখাকে সামনে রেখে রেলের আকর্ষণীয় খেলনা ট্রেনের কোচ রেস্তোরার পরিকল্পনা প্রায় রূপায়ণের পথে। দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ে তরফে দার্জিলিং, কার্শিয়াং ও সুকনায় তিনটি হেরিটেজ টয়ট্রেনের কোচ রেস্তোরা চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এরমধ্যে সুকনার খেলনা রেলের কামরায় তৈরি হচ্ছে রেস্টুরেন্ট কাম ক্যাফেটেরিয়া। যার জন্য নতুন করে ন্যারোগেজ রেললাইন পাতা হয়েছে। যা মূল ঐতিহাসিক ন্যারোগেজ রেললাইন থেকে সম্পূর্ণ পৃথক। ইতিমধ্যেই কার্শিয়াংয়ে কোচ রেস্টুরেন্ট এর প্রস্তুতির কাজও প্রায় শেষের পথে। দার্জিলিং হিমালয়ের রেলওয়ে ডিরেক্টর শ্রী প্রিয়াংশু জানান দার্জিলিংয়ে খেলনা ট্রেনের দুটি কোচ নিয়ে টয়ট্রেন কামরায় রেস্তোরাঁটি তৈরি হবে। সুকনা ও কার্শিয়াংয়ে একটি করে টয়ট্রেন কামরা নিয়ে রেস্টুরেন্টেটি তৈরি হতে চলেছে।সুকনার থাকছে টয়ট্রেন ক্যাফেটেরিয়া।
এছাড়া দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ে প্রচারে উত্তরপূর্ব রেলের প্রাণকেন্দ্র এনজেপি স্টেশনে পরবর্তীতে একটি টয়ট্রেন কোচ রেস্টুরেন্টের পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান তিনি। হেরিটেজ টয়ট্রেনের তিনধরিয়ায় ওয়াকশপে চলছে কোচ তৈরীর কাজ। মূলত অব্যবহৃত কোচগুলির যাত্রী আসন খুলে রেস্তোরা আদলে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে তা। জোর কদমে প্রাথমিক পর্যায়ে কামরায় কিছুটা অদল বদল এনে রেস্তোরা উপযোগী করে ডিএইচআরের তরফে তা সমতলে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সুসজ্জিত করে রেস্তোয়ার জন্য প্রয়োজনীয় কাজ শেষ করে নির্দিষ্ট স্থানে বসতে চলেছে রেস্তোরা। রেস্তোরাঁ পরিচালনার জন্য টেন্ডার প্রক্রিয়ায় যাবে রেল।
ডিসেম্বর মাস থেকে নতুন বছরেপদার্পন অর্থাৎ মূলত নিউ ইয়ার ফেস্টিভ সিজনকে লক্ষ্য করেই এই সময়তে কোচ রেস্তোলা গুলি চালু করতে চায় রেল। অন্যদিকে খেলনা ট্রেনের কোচে রেস্তোরাঁ পরিকল্পনা ডিএইচআরের কোষাগারে লক্ষ্মী লাভ ঘটাবে বলেই মত পর্যটন ব্যাবসায়ীদের। কারণ বর্তমানে টয়ট্রেনের টিকিট মূল্য অত্যাধিক। যা আম সাধারণের পকেট অপেক্ষা কিছুটা হলেও অতিরিক্ত। ফলে একটা বড় অংশের পর্যটকেরা পাহাড়ে আঁকাবাঁকা পথ বেয়ে টয়ট্রেন ছুটে চলার চাক্ষুষ দর্শন করেই আনন্দ উপভোগ করেন। তবে কোচ রেস্তোরাঁ হলে পর্যটকেরা খেলনা ট্রেনের কামরায় বসে নস্টালজিয়ায় অনেকটা সময় কাটাতে পারবেন।
অন্যদিকে রেলেও খেলনা ট্রেনের ঐতিহ্যকে ধরে রেখেই রুপোলি পর্দার নস্টালজিয়ায় মোড়া কামরা উপহার দিতে চাইছে পর্যটকদের। তাই সাধারণ কোচের খুব বেশি পরিবর্তন না করেই সুসজ্জিত রেস্তোরার স্বাচ্ছন্দ্য থাকবে,কামরায় স্মৃতির পাতা থেকে উঠে আসা টয় ট্রেনের ইতিহাস ফুটিয়ে তোলা হবে। খেলনা ট্রেন ঘিরে বলিউডের জনপ্রিয় দৃশ্যের স্থির ছবি রেস্তোরা কামরায় দেখা মিলতে পারে। তবে কামরাগুলি সুসজ্জিত করে তুলতে কত ব্যয় হবে তা এখনই জানাতে রাজি নয় দার্জিলিং হিমাল্যায়ন রেলওয়ে।