নদিয়া – বর্ষার মরশুমে বাঙালির পাতে ইলিশ না পড়লে যে ভোজনের আনন্দ অসম্পূর্ণ থেকে যায়, তা সকলেই জানে। সেই চাহিদার সুযোগ নিয়েই শান্তিপুরের নতুনহাট বাজারে যা ঘটল, তা শুধু চাঞ্চল্যকর নয়, বাজারের নিরাপত্তা ব্যবস্থার ভয়াবহ দুর্বলতাও প্রকাশ করল। প্রায় পাঁচ লক্ষ টাকার ইলিশ মাছ রাতের অন্ধকারে উধাও হয়ে গেল—এ ঘটনা ব্যবসায়ীদের জন্য আর্থিক বিপর্যয় ডেকে এনেছে।
ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেছেন, বাজারে কোনও নিরাপদ স্টোররুম নেই। তাঁরা থার্মোকলের বাক্সে ইলিশ রেখে নিজেদের স্টলে ভরসা করেই রাত কাটান। অথচ বাজারে দুইজন নাইট গার্ড থাকার পরেও এমন লুটের ঘটনা নিঃসন্দেহে নিরাপত্তার গাফিলতি প্রমাণ করে। সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে বটে, কিন্তু এর আগে কেন এমন মৌলিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়নি, সেই প্রশ্ন এখন ব্যবসায়ী থেকে ক্রেতা—সবার মুখে।
ব্যবসায়ীদের ক্ষতির পরিমাণও ভয়াবহ। ঋণ নিয়ে যে সমস্ত ব্যবসায়ী ইলিশ তুলেছিলেন, তাঁদের অনেকেরই সমস্ত পুঁজি এক রাতে শেষ হয়ে গেছে। এক ব্যবসায়ীর ৩৭ হাজার, অন্যজনের ৬০ হাজার—এই বিপুল ক্ষতির দায় কে নেবে? বাজার কমিটি এবং পুরসভার পক্ষ থেকে কি কোনও ক্ষতিপূরণের উদ্যোগ নেওয়া হবে?
এই ঘটনার পর প্রয়োজন শুধু দোষী চিহ্নিত করাই নয়, বাজারের নিরাপত্তা ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন। নাইট গার্ডদের আরও প্রশিক্ষিত করা, সিসিটিভি কভারেজ বৃদ্ধি, এবং ব্যবসায়ীদের জন্য নিরাপদ স্টোরেজ ব্যবস্থা তৈরি করা জরুরি। এই ঘটনাটি একটি দৃষ্টান্ত তৈরি করে দিয়েছে—সঠিক সুরক্ষা ছাড়া বাজার ও ব্যবসা দুটোই বিপদের মুখে।
ইলিশ চুরির ঘটনা শুধু কয়েকজন ব্যবসায়ীর ক্ষতি নয়, এটি বাজার প্রশাসনের অব্যবস্থাপনার প্রতীক। দ্রুত কঠোর পদক্ষেপ না নিলে ভবিষ্যতে আরও বড় চুরি বা লুটের আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। প্রশাসনের উচিত দ্রুত ও দৃঢ় পদক্ষেপ নিয়ে ব্যবসায়ীদের আস্থা ফিরিয়ে আনা।
