ইস্টবেঙ্গলকে ৩-০ গোলে উড়িয়ে দিল এটিকে মোহনবাগান। শনিবার গোয়ার তিলক ময়দানে ইস্টবেঙ্গলকে ৩-০ গোলে উড়িয়ে দিল এটিকে মোহনবাগান। গোলদাতা রয় কৃষ্ণ, মনবীর সিংহ এবং লিস্টন কোলাসো। আইএসএলে তিনে তিন। ডার্বি জয়ের হ্যাটট্রিক করল হাবাসেল দল। তবে পাঁচ গোল হাতছাড়া করার আফশোস থাকবেই। দ্বিতীয়ার্ধে একাধিক গোলের সুযোগ নষ্ট না হলে এদিন হাফ ডজন গোলে জিততে পারত এটিকে মোহনবাগান।
ম্যাচের শুরুটা খারাপ করেনি ইস্টবেঙ্গল। প্রথম ১০ মিনিট একটা ভাল ম্যাচের আশা জাগিয়েছিল। কিন্তু ১২ মিনিট থেকে গোয়ার স্টেডিয়ামের রং সবুজ মেরুন। ওভারল্যাপে উঠে আসা প্রীতমকে বল বাড়ান মনবীর।ডানদিক থেকে বাগান অধিনায়কের ক্রসে নিখুঁত প্লেসিং রয় কৃষ্ণর। ডার্বিতে নিজের তৃতীয় গোল তুলে নেন ফিজির স্ট্রাইকার।
পরপর তিনটে ডার্বিতে গোল। তার তিন মিনিট আগেই খাতা খুলতে পারতেন রয় কৃষ্ণ। তাঁর শট কোনওরকমে তালুবন্দি করেন অরিন্দম। তবে দ্বিতীয় গোলের জন্য অপেক্ষা করতে হয়নি। প্রথম এবং দ্বিতীয় গোলের মধ্যে ব্যবধান মাত্র দু’মিনিটের। ম্যাচের ১৪ মিনিটে জনি কাউকোর থ্রু থেকে ডান পায়ের কোনাকুনি জোরালো শটে ২-০ করেন মনবীর।
আর ও পড়ুন দাম্পত্য সম্পর্ক সুখময় করতে এগুলি ট্রাই করুন
ব্যর্থ অরিন্দম ভট্টাচার্য। প্রথম থেকেই নড়বড়ে ছিলেন লাল হলুদ অধিনায়ক। এদিন মাঠে যেসব ফুটবলার ছিলেন তারমধ্যে ডার্বি খেলার অভিজ্ঞতা সবচেয়ে বেশি অরিন্দমের। কিন্তু ইস্টবেঙ্গলকে ডোবালেন তিনিই। মোহনবাগানের তৃতীয় গোল তাঁর দেওয়া উপহার। ২৩ মিনিটে লিস্টনকে লক্ষ্য করে পাস বাড়ান বৌমাস। ক্লিয়ার করতে বক্স ছেড়ে বেরিয়ে আসেন অরিন্দম। কিন্তু তালুবন্দি করতে পারেননি। সুযোগ সন্ধানী লিস্টন বল তেকাঠিতে রাখতে ভুল করেননি। ডার্বি অভিষেকেই গোল এটিকের তরুণ স্ট্রাইকারের। রয় কৃষ্ণ, লিস্টন, মনবীরের গতির কাছে পরাস্ত লাল হলুদের রক্ষণভাগ। রাজু গায়কোয়াড়, বিকাশ জাইরুদের খেলানোর আগে দু’বার ভাবতে হবে মানোলোকে।
৩-৪-৩ ফরমেশনে শুরু করেছিলেন মানোলো।কিন্তু প্রথমার্ধেই তিন গোল হজম করার পর কিছুটা রক্ষণাত্মক খোলসে চলে যান। এদিকে ডার্বিতেও রয় কৃষ্ণ, বৌমাস, মনবীর ত্রয়ীকে দিতে বাজিমাত হাবাসের। অনবদ্য লিস্টন এবং কাউকোও। গোল না পেলেও কয়েকটা সুন্দর টাচ এল ফিনল্যান্ডের ফুটবলারের পা থেকে। প্রথমার্ধের শেষেই চতুর্থ গোল তুলে নেওয়ার সুযোগ পেয়েছিল এটিকে মোহনবাগান।
কিন্তু কাউকোর ডান পায়ের শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। হাঁটুতে চোট পেয়ে ৩৩ মিনিটে মাঠ ছাড়েন অরিন্দম। নামেন পরিবর্তিত গোলকিপার শুভম সেন। প্রথমার্ধের অতিরিক্ত সময় রয় কৃষ্ণর নিশ্চিত গোল বাঁচান রাজু। নয়ত বিরতির আগেই আরও লজ্জায় পড়ত ইস্টবেঙ্গল। প্রথম ৪৫ মিনিট গোলের নীচে দর্শক অমরিন্দর। কোনও পরীক্ষার সামনে পড়তেই হয়নি সবুজ মেরুন কিপারকে।
রয় কৃষ্ণ বনাম মার্সেলা দ্বৈরথে জয়ী প্রথমজন। পেরোসেভিচ এবং শুভাশিসের মধ্যে আরও একটা লড়াই দেখার অপেক্ষায় ছিল তিলক ময়দান। কিন্তু পুরো ফ্লপ লাল হলুদের বিদেশিরা। ৫৯ মিনিটে সিডলের পরিবর্তে চিমাকে নামান মানোলো। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। দ্বিতীয়ার্ধে পাঁচ গোলের ইতিহাস গড়তে ব্যর্থ এটিকে মোহনবাগান। চারটে নিশ্চিত গোল মিস করে কাউকো, রয় কৃষ্ণ, লিস্টন, উইলিয়ামস। নয়ত অনায়াসেই লাল হলুদকে পাঁচ গোলের মালা পরাতে পারত এটিকে মোহনবাগান। শেষদিকে ম্যাচে ফেরার কিছুটা চেষ্টা করলেও ব্যবধান কমাতে পারেনি ইস্টবেঙ্গল।