উত্তরবঙ্গের বিপর্যয় নিয়ে রাজনৈতিক তরজা, মুখোমুখি মুখ্যমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রী

উত্তরবঙ্গের বিপর্যয় নিয়ে রাজনৈতিক তরজা, মুখোমুখি মুখ্যমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রী

Facebook
Twitter
LinkedIn
Email
WhatsApp
Print
Telegram



উত্তরবঙ্গ – উত্তরবঙ্গের ভয়াবহ বন্যা ও ধসের আবহে রাজ্যে শুরু হয়েছে নতুন রাজনৈতিক তরজা। বিপর্যয়ের জেরে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলি পরিদর্শনে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন বিজেপির সাংসদ ও বিধায়করা। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক উত্তাপ চরমে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী আহত বিজেপি নেতাদের প্রতি দুঃখ প্রকাশ করে মানুষকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। কিন্তু এই ঘটনাকেই হাতিয়ার করে বিভ্রান্তিমূলক প্রচার শুরু করেছে বিজেপি—এমনই অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের তরফে।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই ঘটনার নিন্দা জানিয়ে মন্তব্য করেন, তাঁর দুই সহকর্মীর উপর হামলা পশ্চিমবঙ্গে আইন-শৃঙ্খলার অবনতির স্পষ্ট উদাহরণ এবং তৃণমূল কংগ্রেসের অসংবেদনশীল মানসিকতার প্রতিফলন। এর জবাবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে একটি প্রাকৃতিক বিপর্যয়কে রাজনৈতিক রঙ দেওয়া অত্যন্ত দুঃখজনক ও উদ্বেগজনক। তাঁর বক্তব্য, যখন রাজ্য প্রশাসন ও পুলিশ ত্রাণ ও উদ্ধারকাজে ব্যস্ত, তখন বিজেপি নেতারা কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তা নিয়ে, বিপুল সংখ্যক গাড়ির কনভয় সহ ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় গিয়েছিলেন—স্থানীয় প্রশাসন বা পুলিশের কোনো পূর্বানুমতি ছাড়াই। তাই এই ঘটনার জন্য রাজ্য প্রশাসন বা তৃণমূলকে দোষারোপ করার যুক্তি নেই।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী যথাযথ তদন্ত বা প্রশাসনিক রিপোর্ট ছাড়াই তৃণমূল কংগ্রেস ও রাজ্য সরকারকে দোষারোপ করেছেন। এটা কেবল রাজনৈতিক নিম্নতার পরিচয় নয়, সাংবিধানিক নৈতিকতারও অবমাননা। তাঁর মতে, কোনো ঘটনার দায় নির্ধারণের জন্য আইনকে তার নিজস্ব পথে চলতে দেওয়া উচিত—একটি রাজনৈতিক টুইটের মাধ্যমে নয়।

প্রধানমন্ত্রী যে কেন্দ্রের এক নির্বাচিত বিজেপি বিধায়কের এলাকায় ঘটনার প্রসঙ্গ তুলেছেন, তা নিয়েও মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন—তাহলে সেখানে তৃণমূলের তথাকথিত “শক্তিমত্তা” কীভাবে প্রযোজ্য? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মনে করেন, এই ধরনের অতিসরলীকৃত মন্তব্য দেশের সর্বোচ্চ পদের সঙ্গে মানানসই নয়।

তিনি আরও বলেন, যে প্রধানমন্ত্রী মণিপুরে জাতি-হিংসা শুরু হওয়ার ৯৬৪ দিন পর সেখানে গিয়েছিলেন, তাঁর কাছ থেকে বাংলার প্রতি এই আকস্মিক সহানুভূতি কোনো সমবেদনা নয়, বরং এক রাজনৈতিক কৌশল মাত্র। মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, বিজেপি আবারও উত্তরবঙ্গ বনাম দক্ষিণবঙ্গের পুরনো বিভাজনের রাজনীতি উসকে দিতে চাইছে, আসন্ন নির্বাচনের আগে মেরুকরণের উদ্দেশ্যে।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বার্তা স্পষ্ট—এটা রাজনীতি করার সময় নয়, এটা মানুষের পাশে দাঁড়ানোর সময়। তিনি প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, “আপনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী, কেবল বিজেপির নন। এখন প্রয়োজন দেশ-নির্মাণের, গল্প-নির্মাণের নয়।”

সবশেষে মুখ্যমন্ত্রী আবেদন জানান, “এই সঙ্কটের মুহূর্তে আমরা যেন বিভাজন না বাড়াই। মানুষের সেবায়, দলীয় সীমার ঊর্ধ্বে উঠে একসঙ্গে কাজ করি। রাজনীতি পরে হবে—এখন প্রয়োজন ঐক্যের।”

RECOMMENDED FOR YOU.....

Scroll to Top