রাজ্য – পুজোর পর থেকেই প্রবল বৃষ্টি ও ভূমিধসে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল উত্তরবঙ্গের একাধিক জেলা। পাহাড় থেকে সমতল— সর্বত্র ক্ষয়ক্ষতির ছবি ধরা পড়ে। সেই সময় পুজোর কার্নিভাল শেষ করেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং উত্তরবঙ্গে পৌঁছে পরিস্থিতি স্বচক্ষে দেখেছিলেন। ফেরার সময় তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, অল্প সময়ের মধ্যেই আবারও আসবেন বাস্তব চিত্র পর্যালোচনার জন্য। সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষাতেই সোমবার ফের উত্তরবঙ্গ সফরে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী।
দমদম বিমানবন্দর থেকে শিলিগুড়ির উদ্দেশে রওনা হয়ে মুখ্যমন্ত্রী বাগডোগরা বিমানবন্দরে নামার পর সরাসরি উত্তরবঙ্গ সচিবালয় ‘উত্তরকন্যা’-য় যাবেন। সেখানেই অনুষ্ঠিত হবে উত্তরবঙ্গের ক্ষয়ক্ষতির সামগ্রিক মূল্যায়ন সংক্রান্ত প্রশাসনিক বৈঠক। নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি, কোচবিহার এবং আলিপুরদুয়ার—এই পাঁচ জেলার প্রশাসনিক কর্তারা এবং জনপ্রতিনিধিরা বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন। তবে আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহারের প্রতিনিধিরা ভার্চুয়াল মাধ্যমে যুক্ত হবেন বলে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ফলে রবিবার ছুটির দিনেও প্রশাসনের মধ্যে ব্যস্ততা ও তৎপরতা ছিল চোখে পড়ার মতো।
বন্যা ও ভূমিধস পরিস্থিতি পর্যালোচনার পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রীর একাধিক কর্মসূচিও নির্ধারিত রয়েছে। তিনি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলিতে পুনর্বাসন ও ত্রাণ পরিষেবা পর্যালোচনা করবেন এবং জেলার শীর্ষ প্রশাসনিক আধিকারিক ও জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। রাজ্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রায় ১২ হাজারেরও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে নতুন বাড়ি তৈরির জন্য আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে। প্রত্যেক পরিবার ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা করে সাহায্য পাবে বলে জানা গিয়েছে।
অন্যদিকে, শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদ এলাকায় একটি নতুন শিল্প প্ল্যান্ট তৈরি হয়েছে। প্রশাসন সূত্রে খবর, মুখ্যমন্ত্রী এই সফরেই সেই নতুন শিল্প প্রকল্পটির উদ্বোধন করতে পারেন। উত্তরবঙ্গের অর্থনৈতিক গতিশীলতা এবং কর্মসংস্থান বৃদ্ধির দিক থেকেও এই উদ্যোগকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করা হচ্ছে।
রাজ্যের শীর্ষ প্রশাসনের মতে, মুখ্যমন্ত্রীর এই সফর শুধুমাত্র ক্ষয়ক্ষতির হিসেব নয়, উত্তরবঙ্গের বিপর্যস্ত মানুষের মনোবল বৃদ্ধির প্রতীকও বটে। পুনর্বাসন প্রক্রিয়াকে আরও দ্রুত ও কার্যকর করতে মুখ্যমন্ত্রীর এই উপস্থিতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে বলেই মনে করা হচ্ছে।




















