অফবিট – উত্তরাখণ্ড, যাকে দেবভূমি বলা হয়, তার প্রাচীন পুরাণ ও ভৌগলিক গুরুত্ব অপরিসীম। তবে গতকালের মেঘভাঙা বৃষ্টি ও হঠাৎ বন্যায় উত্তরকাশির অনেক এলাকা বিধ্বস্ত হয়েছে। বিশেষ করে ধারালি গ্রাম বানের কবলে পড়ে প্রায় মুছে গিয়েছে, যা ২০১৩ সালের কেদারনাথ বন্যার ভয়ঙ্কর স্মৃতি ফিরিয়ে এনেছে। শুধুমাত্র উত্তরাখণ্ড নয়, হিমাচল প্রদেশের কিন্নরেও ধ্বস ও বৃষ্টির কারণে বড় ধরনের প্রাকৃতিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। জাতীয় সড়ক বন্ধ এবং কৈলাসগামী যাত্রা আপাতত স্থগিত রয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে যারা দুর্গাপুজোর ছুটিতে পাহাড়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন, তাদের জন্য সিকিম বা কালিম্পং যাওয়া নিরাপদ নাও হতে পারে। কারণ চলতি বছর বৃষ্টি ও প্রাকৃতিক বিপর্যয় বেড়ে চলেছে, ফলে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে এই সময় হিমাচল, উত্তরাখণ্ড, সিকিম বা দার্জিলিংয়ে যাওয়ার পরিবর্তে ভিন্ন কিছু গন্তব্য বেছে নেওয়ার।
এর মধ্যে প্রথম বিকল্প হিসেবে উল্লেখযোগ্য অরুণাচল প্রদেশ। পাহাড়ের সৌন্দর্য ও সংস্কৃতির জন্য বিখ্যাত এই রাজ্যে মোট ১২টি ভ্রমণ সার্কিট রয়েছে। সেপ্টেম্বর মাসে জিরো উপত্যকায় অনুষ্ঠিত হয় জিরো মিউজিক ফেস্টিভাল, যা পর্যটকদের কাছে বিশেষ আকর্ষণ। এছাড়া আলো, মেচুকা এবং তাওয়াং এই অঞ্চলের দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে অন্যতম। অরুণাচল প্রদেশের অপরূপ প্রাকৃতিক পরিবেশ ও সংস্কৃতি আপনাকে অন্যত্র যেতে না পারার দুঃখ ভুলিয়ে দেবে।
দ্বিতীয় বিকল্প হিসেবে আছে মহারাষ্ট্র। বর্ষাকালে ঝাড়খন্ড, মধ্যপ্রদেশের মতো মহারাষ্ট্রও সবুজে ঘেরা এক অপরূপ সৌন্দর্যের আধার। পাহাড়, জলপ্রপাত, দুর্গ, নদী, অরণ্য, হ্রদ—সব কিছুই এখানে মিলবে। বিশেষ করে মাথেরন, লোনাভালা, খান্ডালা, মহাবালেশ্বর, পঞ্চগণি, দৌলতাবাদ দুর্গ, খুলদাবাদ, অজন্তা ও ইলোরা দর্শনীয় স্থান। কলকাতা থেকে মহারাষ্ট্র যাত্রা করে তিন থেকে চার দিনের মধ্যে মাথেরন ঘুরে আসা সম্ভব, আর অতিরিক্ত সময় থাকলে অন্য দর্শনীয় স্থানগুলোও ঘুরে আসতে পারেন।
তৃতীয় ও অন্যতম জনপ্রিয় গন্তব্য কেরল, যাকে ‘গডস ওন কান্ট্রি’ বলা হয়। এখানে মুন্নার, থেক্কাডি, পেরিয়ার, ভেম্মানাদ হ্রদ, কুমারকোম, আলেপ্পি ও কোচি রয়েছে। পাবলিক ট্রান্সপোর্টের মাধ্যমে সহজেই এইসব জায়গা ঘুরে দেখা যায়। পেরিয়ারে জঙ্গল সাফারি, আলেপ্পিতে ব্যাকওয়াটার বোটিং এবং হাউজবোটে রাত্রিযাপন অনন্য অভিজ্ঞতা। অ্যাডভেঞ্চার প্রেমীদের জন্য মুন্নারের চা বাগানে হাইকিং একদম উপযুক্ত। কেরলের মশলার বাগান দর্শন ও স্থানীয় মশলা কেনার সুযোগও রয়েছে।
এই দুর্গাপুজোর ছুটিতে পাহাড় ভ্রমণে যাওয়ার পরিকল্পনা থাকলে, এই তিনটি বিকল্প গন্তব্যের কথা মাথায় রাখা উচিত। প্রকৃতির কাছাকাছি সুন্দর এবং নিরাপদ পরিবেশে ছুটি কাটাতে আজই টিকিট কেটে ফেলুন এবং নৈসর্গিক সৌন্দর্যের পূর্ণাঙ্গ অভিজ্ঞতা উপভোগ করুন।
