বিহার – উত্তর প্রদেশের হামিরপুরে এক ভয়ঙ্কর সাইকো সিরিয়াল কিলারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ, যার অপরাধকৌশল শুনে রীতিমতো শিউরে উঠেছেন তদন্তকারীরা। অভিযুক্ত রামবাবু বিশ্বকর্মা (বয়স ৩০), জালৌনের চিল্লি গ্রামের বাসিন্দা, যার বিরুদ্ধে একের পর এক নির্মম হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ রয়েছে। সে জালৌনে দুটি খুনের পর হামিরপুরে ঘুমন্ত এক দম্পতির উপর হামলা চালায়। এই ঘটনায় স্ত্রীর মৃত্যু হয় ঘটনাস্থলেই, আর স্বামী ও শিশু কন্যা গুরুতর আহত হন।
পুলিশ জানায়, রামবাবু এর আগেও একাধিক হত্যার দায়ে জেল খেটেছে এবং জামিনে ছাড়া পাওয়ার পর ফের খুন করতে শুরু করে। তার ধরন ছিল বর্বর—সে লোহার ভারী বস্তু ব্যবহার করে শিকারের মাথায় বারবার আঘাত করত যতক্ষণ না মৃত্যু নিশ্চিত হয়। হত্যার পর রক্ত দেখে সে একপ্রকার বিকৃত আনন্দ পেত, যা তাকে “সাইকো কিলার” অভিধা দিয়েছে।
জানা যায়, হামলার দিন রামবাবু তার গ্রামেরই অনিল রাজপুতের বাড়িতে ঢুকে পড়েছিল। ঘুমন্ত অনিল, তার স্ত্রী গীতা দেবী এবং তাদের তিন বছরের মেয়ের মাথায় ট্র্যাক্টরের সাইলেন্সার দিয়ে আঘাত করে। গীতা দেবী ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান, অন্যদিকে বাবা ও মেয়ে হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছেন।
এই কুখ্যাত খুনিকে ধরতে পুলিশ একাধিক দল গঠন করে এবং অবশেষে বুধবার তাকে তার চাচার টিউবওয়েল থেকে পাকড়াও করে। তাকে ঘিরে ফেললে সে পুলিশের উপর গুলি চালায়। পাল্টা জবাবে পুলিশও গুলি চালায় এবং রামবাবুর দু’পায়ে গুলি লাগে। এরপর তাকে গ্রেফতার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
হামিরপুরের সিও রাজীব প্রতাপ সিং জানান, রামবাবুর কাছ থেকে একটি দেশীয় পিস্তল, বেশ কয়েকটি তাজা কার্তুজ এবং রক্তমাখা পোশাক উদ্ধার করা হয়েছে। এমনকি, একসময় সে নিজের বাবাকেও হত্যা করতে চেয়েছিল, যদিও তিনি প্রাণে বেঁচে যান।
পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে সে নিজের অপরাধের কথা স্বীকার করেছে এবং জানিয়েছে, হামলার আগে সে নিয়মিত রেকি করত ও সুযোগ পেলেই আক্রমণ চালাত। এই গ্রেফতার পুরো এলাকায় স্বস্তি ফিরিয়েছে, তবে পুলিশ জানিয়েছে তদন্ত এখনও চলছে এবং তার অপরাধমূলক অতীত আরও খতিয়ে দেখা হবে।
