প্রধানমন্ত্রী – উত্তর ভারত জুড়ে প্রবল বৃষ্টি, বন্যা ও ভূমিধসের কারণে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। টানা কয়েক সপ্তাহ ধরে অবিরাম বর্ষণে একের পর এক পাহাড় ধসে পড়ছে, নদী উপচে পড়ছে এবং বহু জেলা প্লাবিত হয়ে পড়েছে। সরকারি হিসাবে, জুন মাস থেকে এখন পর্যন্ত ৫০০-রও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে, এবং বহু মানুষ এখনও নিখোঁজ। হিমাচল প্রদেশ, জম্মু-কাশ্মীর, উত্তরাখণ্ড এবং পাঞ্জাবের পরিস্থিতি বিশেষভাবে সংকটজনক। ক্ষতিগ্রস্ত রাজ্যগুলির পরিস্থিতি পর্যালোচনার জন্য খুব শিগগিরই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী স্বচক্ষে সফরে যাচ্ছেন বলে জানা গিয়েছে, যদিও সরকারি ভাবে সফরের দিনক্ষণ এখনও ঘোষণা হয়নি।
কেন্দ্রীয় সাহায্যের দাবি তুলেছে একাধিক রাজ্য সরকার। উত্তরাখণ্ড ইতিমধ্যেই ৫,৭০২ কোটি টাকার বিশেষ ত্রাণ সহায়তা চেয়ে কেন্দ্রের কাছে আবেদন করেছে। হিমাচল প্রদেশে পরিস্থিতি বিশেষভাবে ভয়াবহ। শুধুমাত্র এই বর্ষাতেই নথিভুক্ত হয়েছে ৯৫টি আকস্মিক বন্যা, ৪৫টি ক্লাউডবার্স্ট এবং ১৩২টি বড় ভূমিধস। রাজ্যে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৩৫৫ জন, নিখোঁজ অন্তত ৪৯। সরকারি হিসাবে, হিমাচলে ক্ষতির পরিমাণ ইতিমধ্যেই ছাড়িয়েছে ৩,৭৮৭ কোটি টাকা।
হিমাচল প্রদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থাও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বর্তমানে ১,২০০-রও বেশি রাস্তা অবরুদ্ধ। মাণ্ডি, শিমলা, কুল্লু, চাম্বা প্রভৃতি জেলার সঙ্গে যোগাযোগ কার্যত বিচ্ছিন্ন। বন্ধ হয়ে গিয়েছে একাধিক জাতীয় সড়ক, যার মধ্যে রয়েছে মাণ্ডি-ধর্মপুর (এনএইচ-৩), ওল্ড হিন্দুস্তান-তিব্বত রোড (এনএইচ-৫), অট-সাঞ্জ (এনএইচ-৩০৫) এবং খাব-গ্রামফু (এনএইচ-৫০৫)। কালকা-শিমলা রেলপথেও পাহাড় ধসে ট্রেন চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ।
প্রবল বৃষ্টি ও ভূমিধসে নতুন করে বিপর্যস্ত হয়েছে জম্মু-কাশ্মীর এবং উত্তরাখণ্ডও। একাধিক জেলায় ঘরবাড়ি ভেসে গিয়েছে, সেতু ভেঙে পড়েছে এবং চাষের জমি ডুবে গিয়েছে। বহু মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন ত্রাণশিবিরে। পাঞ্জাবেও নদীর জলস্তর বিপজ্জনকভাবে বেড়ে গিয়ে বিপর্যয় তৈরি হয়েছে।
কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্য প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় রেখে ত্রাণ ও উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে। সেনা, এনডিআরএফ এবং অন্যান্য সংস্থা বিপর্যস্ত এলাকায় কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। তবে এত বড় মাত্রার ক্ষতির মোকাবিলায় রাজ্যগুলি কেন্দ্রীয় সহায়তার উপরেই নির্ভর করছে। সরকারি সূত্রের খবর অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সফরের মূল উদ্দেশ্য হল ক্ষতিগ্রস্ত রাজ্যগুলির পরিস্থিতি স্বচক্ষে দেখা, ত্রাণ কার্যক্রম দ্রুততর করা এবং বিপর্যস্ত মানুষদের পাশে দাঁড়ানো।
