উন্নয়ন প্রকল্পের কাজে এগিয়ে ত্রিলোকচন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েত। ৯টি গ্রামে মোট ১৮টি সংসদ নিয়ে ত্রিলোকচন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েত। ধারাবাহিক ভাবে কাজ করে চলেছে রাজ্য সরকারের গ্রাম বাংলার উন্নয়ন প্রকল্পের। গ্রামবাসীরা খুশী পঞ্চায়েতের কাজে। এমনই জানালেন, পিয়ারিগঞ্জ, সুন্দিয়ারা, ডোমরা, ত্রিলোকচন্দ্রপুর, রাজকুসুম, ধোবারু, ইজ্জতগঞ্জ, পানাগড় গ্রাম, প্রয়াগপুর গ্রামের বাসিন্দাদের অধিকাংশ। গ্রামবাসীরা জানান, নাগরিক পরিষেবার দিকে বিশেষ নজর রয়েছে গ্রাম পঞ্চায়েতের।
পানীয় জল, নিকাশি নালার কাজ আগের তুলনায় অনেকটাই ভালো হয়েছে গ্রামে। ঢালাই রাস্তা যা আগে কল্পনা করতে পারতাম না, এখন তা গোটা গ্রামজুড়ে হয়েছে। রাজকুসুম, ধোবারু, ইজ্জতগঞ্জ গ্রামের বাসিন্দারা একধাপ এগিয়ে বলেন, ‘গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে নিজেদের ভোট সঠিক জায়গায় দিয়েছি, আজ তা বড় মুখ করে সবার সম্মুখে বলতে পারি’। গ্রামের মহিলারা জানান, ‘মুলত আমাদের গ্রামের বেশী সংখ্যক পরিবার কৃষি কাজের সাথে যুক্ত।
আমাদের জীবিকা চাষবাসেই সীমাবদ্ধ। আমাদের জীবিকার জন্য সবচেয়ে বেশী গুরুত্ব চাষ যোগ্য জমি ও কৃষিকাজ করার জন্য পর্যাপ্ত জল। যা আমরা বর্তমান পঞ্চায়েত প্রধান এবং এলাকার সংসদ সদস্যদের কাছে আর্জি জানালেই তারা দ্রুত, বীজ থেকে শুরু করে সার এবং পর্যাপ্ত জলের ব্যাবস্থা করে দেন। আজ আমাদের গ্রামগুলি পরিস্কার পরিচ্ছন্ন। পাকা রাস্তা হয়েছে। অনত্র পরিবারের মেয়ে বা ছেলেদের পরিণয়ের ক্ষেত্রে ‘অজ পাড়া গাঁ’ বলে কেউ ফিরিয়ে দেয় না। তারাও সম্পর্ক স্থাপনে আগ্রহ প্রকাশ করেন।
আগের তুলনায় অনেক ভালো আছি’। ত্রিলোকচন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সাইনা বেগম জানান, আমাদের পঞ্চায়েতের এলাকা খুব বৃহৎ নয়। ৯টি গ্রামের সকলের সাথে সকলের ভাব রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গ্রাম বাংলার উন্নয়নের জন্য যে সমস্ত পরিকল্পনাগুলি নিয়েছেন, তা রূপায়িত করেই গ্রাম বাংলার প্রকৃত উন্নয়ন ঘটেছে। বর্তমান পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার গ্রামের খুঁটিনাটি বিষয়গুলোর সম্পর্কে ওয়াকিবহল। যা আমাদের বাড়তি পাওনা। তাই গ্রামের প্রকৃত উন্নয়নের কাজ করতে আমাদের অনেকটাই সুবিধে হচ্ছে।
প্রধান জানান, ‘বিরোধীদের বিভিন্ন কুৎসার পরেও, বিগত চার বছরে ত্রিলোকচন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েত, নিজেদের অধিনে থাকা গ্রামগুলির চেহারা পালটে ফেলেছে, যা গ্রামের বাসিন্দারা অকপটে স্বীকার করেন। তিনি বলেন, পঞ্চায়েত এলাকার দুস্থ পরিবারদের স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে হোক বা শিক্ষা ক্ষেত্রে, সবসময় তাদের সাহায্যের জন্য পাশে রয়েছে ত্রিলোকচন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েত। পঞ্চায়েত এলাকার ডোমরা গ্রামে তৈরি করা হয়েছে কমিউনিটি হল। স্বল্প মুল্যে পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দারা তা ব্যাবহার করতে পারছেন।
কাঁকসা ব্লক অফিসের উল্টো দিকে তৈরি করা হয়েছে ‘শিশু উদ্যান’। যার কাজ প্রায় শেষের পর্যায়ে। শিশুদের বিনোদনের কথা চিন্তা করেই উদ্যানটি তৈরি করা হয়েছে। প্রধান সাইনা বেগম বলেন, ১০ বছর পূর্বে এই পঞ্চায়েত এলাকা যারা ঘুরে গিয়েছেন, তারা বর্তমানে এই এলাকায় এলে বিস্তর ফারাক দেখতে পারবেন যা হলপ করে বলতে পারি। উন্নয়নের কাজ যে হয়েছে, তা বর্তমানে এসে দেখলেই বুঝতে পারবেন জনগণ।
আরও পড়ুন – পুজোর আগে সেভাবে জমলো না বাম কর্মচারীদের নবান্ন অভিযান
মুলত ১০০ দিনের জব কার্ড ধারকদের দিয়েই পঞ্চায়েত এলাকার অধিনে থাকা গ্রামগুলির পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করা হয়। পাশাপাশি তাদের দিয়ে জমির কাজও করানো হয়। তবে, বর্তমানে তা বন্ধ রয়েছে। তিনি আরও বলেন, অধিকাংশ সংসদে প্রায় ৯৪টি সৌর বাতি লাগানোর কাজ ইতিমধ্যেই হয়ে গিয়েছে। পুজোর পর আরও সৌরবাতি লাগানোর কাজ শুরু করা হবে। কৃষি প্রধান গ্রামগুলিতে ক্যানেলের জল সেচ নালার মাধ্যমে জমিতে নিয়ে আসার কাজ করা হয়েছে।
যা করেছে জব কার্ড ধারকরা। প্রধান সাইনা বেগম বলেন, একটা জরুরি কাজ করে উঠতে পারি নি জমির অভাবে। পঞ্চায়েত এলাকার আবর্জনা ফেলার একটি নির্দিষ্ট জায়গা করার ইচ্ছে রয়েছে। পর্যাপ্ত জমি এখনও পায়নি। তবে, জমির খোঁজ চলছে। জমি পেলেই গ্রামবাসীদের এই চাহিদা দূর করবে পঞ্চায়েত। তিনি বলেন, পঞ্চায়েত সমিতি এবং ব্লক অফিস থেকে সবসময় সহযোগিতা তিনি পেয়েছেন। আগামিতেও পাবেন বলে তিনি মনে করেন।