প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগ করতে ঘুরে আসুন সুন্দরবন থেকে

প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগ করতে ঘুরে আসুন সুন্দরবন থেকে

Facebook
Twitter
LinkedIn
Email
WhatsApp
Print
Telegram
উপভোগ

প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগ করতে ঘুরে আসুন সুন্দরবন থেকে।  নিরিবিলি প্রাকৃতিক বিস্ময়কর দৃশ্য উপভোগ করার জায়গা সুন্দরবন। সুন্দরবন একটি প্রাকৃতিক বিস্ময়ের নাম, এটি পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বন বা লবণাক্ত বনাঞ্চল। সুন্দরবনের মোট আয়তন প্রায় ১০ হাজার বর্গ কিলোমিটার, যা যৌথভাবে বাংলাদেশ ও ভারতে মধ্যে রয়েছে।  ১৯৯৭ সালে ইউনেস্কো সুন্দরবনকে বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করে।

 

 

জীববৈচিত্রে সমৃদ্ধ সুন্দরবনকে জীব ও উদ্ভিদ জাদুঘর বললেও কম বলা হবে। সুন্দরবনের ১,৮৭৪ বর্গকিলোমিটার জুড়ে রয়েছে নদীনালা ও বিল মিলিয়ে জলাকীর্ণ অঞ্চল। রয়েল বেঙ্গল টাইগার সহ বিচিত্র নানান ধরণের পাখি, চিত্রা হরিণ, কুমির ও সাপসহ অসংখ্য প্রজাতির প্রাণীর আবাসস্থল হিসেবে সুন্দরবন পরিচিত। এখানে রয়েছে প্রায় ৩৫০ প্রজাতির উদ্ভিদ, ১২০ প্রজাতির মাছ, ২৭০ প্রাজাতির পাখি, ৪২ প্রজাতির স্তন্যপায়ী, ৩৫ সরীসৃপ এবং ৮ টি উভচর প্রাণী। সুন্দরী বৃক্ষের নামানুসারে এই বনের নাম সুন্দরবন রাখা হয়। সুন্দরবনের ভেতরে যেতে হলে নৌপথই একমাত্র উপায়।

 

 

যদি আপনি কলকাতা থেকে সুন্দরবন আসতে চান তাহলে – প্রথমত, আপনাকে শিয়ালদহ থেকে ট্রেনে ক্যানিং স্টেশন পৌঁছাতে হবে এবং সময় লাগে 1:30 ঘন্টা। ট্রেনগুলি প্রতিদিন সকাল 6:30, সকাল 7:42, এবং সকাল সাড়ে ৮ টায় ছেড়ে যায়। তারপরে ক্যানিং স্টেশন থেকে একটি বাস / গাড়ি নিয়ে ২৪ ঘন্টার মধ্যে গডখালী ফেরিঘাটে পৌঁছাতে হবে। গুমতি নদীর উপর দিয়ে মোটরবোটে করে গোদখালী ফেরিঘাট থেকে সজনেখালী পৌঁছান। তারপরে সেখান থেকে আপনার বুকিং হোটেল বা নৌকায় যোগাযোগ করুন গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্য।

 

ক্যানিং মহকুমার দর্শনীয় স্থান

 

ঘুটিয়ারী শরীফ ক্যানিং – এখানে আছে পীর মোবারক গাজীর (বড়খাঁ গাজী) দরগা ও মসজিদ৷ মুসলমানদের তীর্থক্ষেত্র৷ প্রতি বছর ৭ই আষাঢ় থেকে শুরু হয় গাজীর তিরোধান দিবস৷ সঙ্গে মেলাও বসে৷ এখানে হিন্দু মুসলমান উভয় সম্প্রদায়ের মানুষ যোগদান করেন৷

 

পুরাতন গীর্জা-বাসন্তী – ক্যানিং থেকে নৌকায় বা মটর লঞ্চে গোসাবা হয়ে যাওয়া যায়৷ এখানে ভরতগড় স্থানটি প্রাচীন৷ বাসন্তীচার্চ এখানকার দর্শনীয় স্থান৷

 

হ্যামিলটনের বাংলো গোসাবা – স্যার ড্যানিয়েল ম্যাকিনন হ্যামিলটন সুন্দরবন অঞ্চলে চাষাবাদ প্রবর্তনের জন্য একটি কৃষি উপনিবেশ প্রতিষ্ঠা করেন গোসাবায়৷ এখানে তার বাংলোটি দর্শকদের আকর্ষণের বস্তু৷ কাঠের তৈরী এই বাংলোর আকর্ষণে দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসেন ঐতিহাসিক ও অন্যান্য পর্যটকরা৷ একটি ঐতিহাসিক গ্রন্থের গ্রন্থাগারও এখানে স্থাপিত হয়েছে৷

 

হ্যালিডে দ্বীপ – বঙ্গোপাসোগর ও মাতলা নদীর সঙ্গমে অবস্থিত এই দ্বীপটিতে রয়াল বেঙ্গল টাইগার এবং পাখি দেখা যায়৷ আলিপুর D.F.O. অফিসের অনুমতি নিয়ে ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারির মধ্যে এখানে যাওয়া যায়৷

 

আরও  পড়ুন  কোচবিহারের চারতলা ফ্ল্যাটে ভয়াবহ অগ্নিকান্ড, এলাকায় চাঞ্চল্য

 

সজনেখালি – সুন্দরবনের গভীরে অরণ্য দেখতে আগ্রহী মানুষ কলকাতা থেকে বাসে বা ট্রেনে সোজা চলে যেতে পারে বাসন্তীর সোনাখালি বা গদখালি৷ সেখান থেকে লঞ্চে চেপে ঢুকে পড়া যায়৷ সুন্দরবনের ভয়াল ভীষণ অরণ্যে৷ সজনেখালি বার্ডস্যাংচুয়ারি একটি দর্শনীয় স্থান৷ সুন্দরবন টাইগার রিজার্ভ প্রজেক্টের অন্তর্ভুক্ত এই বার্ড স্যাংচুয়ারি৷ দক্ষিনে হ্যালিডে দ্বীপ৷ এখানকার হেতাল বন রয়েল বেঙ্গল টাইগারের প্রিয় বাসস্থান৷ হাঁস, পানকৌড়ি, ঈগল, শঙ্খচিল প্রভৃতি পাখির বাস এখানে৷ তবে থাকলে ওয়াচ টাওয়ারে বসে হরিণ, বানরের সঙ্গে বাঘের দেখা মেলাও আশ্চর্যের নয়৷

 

বাস্তুতান্ত্রিক সংগ্রহশালা

১. টাইগার প্রজেক্ট সংগ্রহশালা – ক্যানিং

২. সুন্দরবন প্রজেক্ট সংগ্রহশালা – সজনেখালি

 

কাকদ্বীপ মহকুমার দর্শনীয় স্থান

 

বকখালি – নামখানা পর্যন্ত ট্রেনে গিয়ে সেখান থেকে অথবা কলকাতা থেকে সরাসরি বাসে পৌঁছে যাওয়া যায় বকখালি সমুদ্র সৈকতে৷ যাওয়ার পথে বাস সমেত লঞ্চে উঠে হাতানিয়া-দোয়ানিয়া নদী পেরোনোর অভিজ্ঞতা সত্যি সত্যি রোমাঞ্চকর৷ এখানকার সমুদ্র সৈকত, ম্যানগ্রোভ বন, উন্মুক্ত চিড়িয়াখানা পর্যটকদের কাছে অত্যন্ত আকর্ষণের৷

 

ফ্রেজারগঞ্জ – নামখানা থেকে বকখালি হয়ে ফ্রেজারগঞ্জ ঘুরে আসার আকাঙ্খা অনেক পর্যটকেরই হৃদয়ের আকর্ষণ৷ বাংলার গভর্নর স্যার এন্ডুফ্রেজার সাহেবের নামে৷ এখানে একটি মৎস্য বন্দর আছে৷ এছাড়া নৌকায় করে সমুদ্র মোহনায় ঘুরে আসাও খুবই আকর্ষণের ব্যাপার৷

 

গঙ্গাসাগর – সুন্দরবনের পশ্চিমাংশে অবস্থিত সাগর দ্বীপ ছিল ৫টি দ্বীপের সমষ্টি৷ পাঁচটি দ্বীপ হল সাগর, ঘোড়ামারা, সুপারীডাঙ্গা, আগুনমারী ও লোহাচড়া৷ বতর্মানে মাত্র দুটি দ্বীপ অবশিষ্ট সাগর ও ঘোড়ামারা। এখানে হুগলী নদী বঙ্গোপাসাগরে মিশেছে৷ এই সঙ্গমে প্রতিবছর পৌষ-সংক্রান্তির দিনে ১৪ই জানুযারী কপিল মুনির মন্দিরে সারা ভারতবর্ষের লক্ষ লক্ষ পূনার্থী সাগর সঙ্গমে পূন্যস্নান করে, পূজা দেন এখানে পাপমুক্তি ও পরিবারের শান্তি কামনা করেন৷ এছাড়া ভারত সেবাশ্রম সংঘের ব্যবস্থাও আছে৷ হোটেল, যুবআবাস, ধমর্শালা প্রভৃতিতে পর্যটকরা অবস্থান করতে পারেন৷

 

পাঁকুড়তলা – এই স্থানটিতে প্রত্নসম্পদ সমৃদ্ধ দুটি বিশাল ঢিবি থেকে প্রচুর নিদর্শন পাওয়া গেছে৷ নানারকম মুদ্রা, পোড়ামাটির পুতুল, পশুপাখি, নানারকম পাত্র, শিলমোহর, ছাচ্, গনেশ ও বিষ্ণুমূর্তি ও শিবলিঙ্গ আছে এখানে৷

 

শিবকালী নগর – এখানকার বিশালাক্ষী ও ইশানেশ্বর শিবমন্দির বিখ্যাত দক্ষিনমুখী মন্দিরের গর্ভগৃহে ৩ ফুট উচ্চতার পিতলের চতুর্ভূজ দেবীমূর্তি বিরাজ করছে৷ দেবীর মূখমন্ডল অষ্টধাতু নির্মিত৷ শিবরাত্রি ও গাজন উৎসবে আসে স্থানীয় ধর্মপিপাসু মানুষ ও বহু সন্ন্যাসী৷

RECOMMENDED FOR YOU.....

Scroll to Top