
বিতর্ক অব্যাহত বিশ্বভারতীতে। বহিষ্কারের প্রতিবাদে পড়ুয়াদের আন্দোলন তিন দিনে পা দিল। তিন পড়ুয়ার বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত বহাল রাখার প্রতিবাদে গত শুক্রবার রাতে বিশ্বভারতীর সেন্ট্রাল অফিস ও লাইব্রেরী ঘেরাও করে পড়ুয়ারা। পরে উপাচার্য ( Vicechancellor ) নিজের বাসভবন পূর্বিতায় আছে জানতে পেরে সেখানে উপস্থিত হন প্রতিবাদী পড়ুয়ারা।
রাতভর ঘেরাও ও অবস্থান চালিয়ে যান বিক্ষুব্ধ পড়ুয়ার দল। তাদের দাবি অবিলম্বে বহিস্কৃত তিন পড়ুয়াকে না ফেরালে তীব্রতর হবে আন্দোলন। শুক্রবার রাতের পাশাপাশি শনিবারও সকাল থেকেই অবস্থান-বিক্ষোভ করেন। প্ল্যাকার্ড হাতে উপাচার্য ( Vicechancellor ) দুর হটো স্লোগান দিয়ে চলে তাদের আন্দোলন। শনিবারই আন্দোলন চালাতে প্রতিবাদী মঞ্চ প্রস্তুত করেছেন বিক্ষুব্ধরা। রবিবারও রবীন্দ্র সংগীত গেয়ে প্রতিবাদ চালিয়ে যাচ্ছেন পড়ুয়ারা।
আর ও পড়ুন উত্তবঙ্গের ( Northbengal ) ঐতিহ্য টয়ট্রেন উঠছে দাড়িপাল্লায়
উল্লেখ্য, উপাচার্যের ( Vicechancellor ) বিভিন্ন বিতর্কিত সিদ্ধান্ত সহ অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক সুদীপ্ত ভট্টাচার্য কে সাবস্ক্রাইব করার প্রতিবাদে সোচ্চার হয়ে উপাচার্যের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেন পড়ুয়ারা। নেতৃত্বে ছিলেন অর্থনীতি বিভাগের স্নাতকোত্তর প্রথম বর্ষের পড়ুয়া সোমনাথ সৌ ফাল্গুনী পান ও রূপা চক্রবর্তী।
পড়ুয়াদের অভিযোগ উপাচার্যের বিরুদ্ধাচারণ করার ফলেই এই প্রবাদের তিন দফায় নমাজ সাসপেন্ড করার পর তদন্ত কমিটির সিদ্ধান্ত তিন বছরের জন্য বহিষ্কার করেন কর্তৃপক্ষ।
এরই প্রতিবাদে বিশ্বভারতীতে চলছে বিক্ষোভ কর্মসূচি ও উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও। তিন বছরের জন্য বহিস্কৃত পড়ুয়া সোমনাথ সৌ বলেন অভিভাবক সম উপাচার্য যেভাবে আমাদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তা অত্যন্ত নিন্দনীয়। উনি উপাচার্য নন কসাই। একের পর এক অধ্যাপক সাসপেন্ড ও বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নিয়ে বিশ্বভারতীর নাম কলুষিত করছেন।
এ ঘটনায় সরব হয়েছেন বিশ্বভারতীর তৃণমূল ছাত্র পরিষদ ও ডেমোক্রেটিক স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরাও। প্রতিবাদীদের পক্ষে ঋতম কর ও শ্রেয়া চক্রবর্তী বলেন উপাচার্য বিশ্বভারতীতে আসার পর থেকে যেভাবে একনায়কতন্ত্র চালাচ্ছেন তা অতীতে দেখা যায়নি। বিরোধিতা করলেই জুটছে শোকজ, সাসপেন্ড ও বহিষ্কার। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই। যতক্ষণ না বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত ফিরিয়ে নেওয়া হচ্ছে ততক্ষন আমাদের আন্দোলন চলবে।
এদিকে পড়ুয়ারা তাদের আন্দোলনে পাশে পেয়েছেন বিশ্বভারতীর অধ্যাপক সংগঠন ভিবিউফাকে। অধ্যাপক সংগঠনের সভাপতি তথা বিশ্বভারতীর ইকোনমিক্স ডিপার্টমেন্টের সাসপেন্ডেড অধ্যাপক সুদীপ্ত ভট্টাচার্য বলেন সন্তান তুল্য পড়ুয়াদের যেভাবে উপাচার্যের চক্ষুশূল হওয়ার ফলে কর্তৃপক্ষ বহিষ্কার করেছে তা অনৈতিক। পড়ুয়াদের আন্দোলনকে আমরা পূর্ণ সমর্থন করি। আন্দোলনের পাশাপাশি উপাচার্যের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে সংগঠনের পক্ষ থেকে।
এদিকে বিশ্বভারতীর পড়ুয়াদের আন্দোলন দেখে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে উপাচার্যের বাসভবন পূর্বিতায়। বাড়ির চারপাশে ১৮ টির বেশি সিসিটিভি লাগানো হয়েছে। পাশাপাশি নিরাপত্তা কর্মীও বাড়ানো হয়েছে। তবে সামগ্রিক বিষয়ে কতৃপক্ষ মুখে কুলুপ এঁটেছেন।