রেশম সুতা উৎপাদনের ক্ষেত্রে একগুচ্ছ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে রাজ্য সরকার। বাংলার রেশম শিল্পের চাহিদা এবং সুনাম রয়েছে বহু যুগ ধরে । বিশেষ করে মালদা জেলার কালিয়াচক এলাকার রেশমের গুরুত্ব অপরিসীম। এবারের এই শিল্পকে আরো বেশি করে গুরুত্ব দিয়েছে রাজ্য সরকার। এজন্য রেশমের উপকরণ পলু পোকার চাষ , তুঁত গাছের পরিচর্যা এবং চাষ বাড়ানো। পাশাপাশি রেশম সুতা উৎপাদনের ক্ষেত্রে একগুচ্ছ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে রাজ্য সরকার।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, রেশম চাষিদের আয় বাড়াতে নির্দিষ্ট একটি বাজার তৈরি করার উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্য সরকার। ইতিমধ্যে এক লক্ষ কুড়ি হাজার চাষীদের নিয়ে বাজার তৈরি দীর্ঘ পরিকল্পনা রয়েছে রাজ্য সরকারের। এরফলে চাষের সঙ্গে যুক্ত চাষীদের একপ্রকার আয় সুনিশ্চিত হবে। পাশাপাশি মালদা এবং মুর্শিদাবাদ জেলায় রেশম উৎপাদনের মাত্রা বাড়ানোর জন্য নানান পরিকল্পনার মাধ্যমে সহযোগিতা করার উদ্যোগী হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। এরফলে চাষীদের মুখে হাসি ফুটেছে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মালদা জেলার কালিয়াচক ১,২ এবং ৩ ব্লকে মূলত রেশম হয়ে থাকে। এই তিনটি ব্লকের মধ্যে কালিয়াচক ১ ব্লকে বেশি রেশম চাষ হয়। “মালবেরি” প্রজাতির রেশম চাষ জেলায় মূলত হয়। এই রেশমের উৎপাদিত গরদের শাড়ি অন্যান্য বস্ত্র অত্যন্ত মূল্যবান । কালিয়াচকে বেশ কয়েকটি এলাকায় সপ্তাহে এক থেকে দুইদিন করে রেশমের হাট বসে। যেখানে চাষি অথবা পাইকারদের বেচাকেনা করতে হয়।
কালিয়াচক ১ ব্লকের জালালপুর গ্রামে রেশম চাষি জহিদুর রহমান, হাফিজুদ্দিন শেখদের বক্তব্য, রেশম চাষের ক্ষেত্রে পলু পোকাকে বাঁচিয়ে রাখাটা হচ্ছে প্রধান কাজ। এই পলু পোকাকে তুঁত পাতা খাওয়ানো এবং পরিচর্যা করতে হয় বারো মাস। পলু পোকার প্রকার লালা থেকে রেশন সুতো তৈরি হয়ে থাকে। কিন্তু এতদিন বাইরের বাজারে রেশম তৈরি হওয়ায় খানিকটা হষ মন্দা হয়েছিল।
আর ও পড়ুন পাটের অভাব দেখিয়ে বন্ধ হয়ে গেলো ভাটপাড়ার রিলায়েন্স জুটমিল
তার ওপর করোনার সংক্রমণ এবং লকডাউনের জেরে রেশম চাষীদের চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়তে হয়েছিল। কিন্তু রাজ্য সরকার মালদার রেশম উৎপাদনের ক্ষেত্রে যেভাবে উদ্যোগী হয়েছে, তাতে আগামীতে এই শিল্প আরো উন্নত হবে। নির্দিষ্টভাবে বাজার তৈরি হলে চাষীদের রেশম চাষের ক্ষেত্রে আগ্রহ বাড়বে।
কালিয়াচক ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আতিউর রহমান জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি সবসময় চাষিদের পাশে থেকে নানান ধরনের সহযোগিতা করে চলেছেন। লকডাউনের মধ্যে কালিয়াচকের রেশম চাষিদের খানিকটা সমস্যায় পড়তে হয়েছিল। কিন্তু রাজ্য সরকার এবারে রেশম চাষিদের জন্য একগুচ্ছ পরিকল্পনা নিয়েছে । যাতে করে চাষীদের আয় সুনিশ্চিত এবং বাজার ধরার ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা হবে না। এরফলে মালদার রেশমের চাহিদা এবং সুনাম আরো বাড়বে।