খেলা – শেষ কয়েক বছর ধরে ওমেন্স ফুটবলের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে ইস্টবেঙ্গল। বাংলার জনপ্রিয় কন্যাশ্রী কাপ থেকে শুরু করে ইন্ডিয়ান ওমেন্স লিগ — প্রত্যেক ক্ষেত্রেই চূড়ান্ত সাফল্য পেয়েছে লেসলি ক্লডিয়াস সরণির এই দল। তৎকালীন কোচ সুজাতা কর থেকে শুরু করে বর্তমানের অ্যান্থনি অ্যান্ড্রুজ, সময়ের সাথে কোচ বদলালেও বদলায়নি দলের লড়াকু মানসিকতা। পুরুষ দলের পারফরম্যান্স যেখানে বারবার হতাশ করেছে, সেখানে মশাল কন্যারা নিজেদের দক্ষতা ও সংগ্রামের মধ্য দিয়ে দলের জৌলুস অনেকটাই বাড়িয়ে তুলেছে। শেষ সিজনে তাঁদের হাত ধরেই দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে সর্বভারতীয় মহিলা ফুটবল লিগ চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ইস্টবেঙ্গলের মহিলা দল।
বাংলার প্রথম দল হিসেবে সর্বভারতীয় এই লিগে শিরোপা জিতে ইতিহাস গড়েছে ইস্টবেঙ্গল। সেই সুবাদে দল সরাসরি স্থান করে নিয়েছে এএফসি ওমেন্স চ্যাম্পিয়নস লিগে। এই মর্যাদাপূর্ণ আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার কথা মাথায় রেখে অনেক আগেই দল গঠন শুরু করেছিল ক্লাব ম্যানেজমেন্ট। ভারতীয় ফুটবলারদের পাশাপাশি বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে একাধিক বিদেশি ফুটবলারদের সঙ্গে চুক্তি সম্পন্ন করেছে দল। তাঁদের সঙ্গে নিয়েই এএফসির মঞ্চে সেরা পারফরম্যান্স দেওয়ার লক্ষ্যে এগোচ্ছে লাল-হলুদ শিবির। সূচি অনুযায়ী, আগামী ২৫শে আগস্ট কম্বোডিয়ার ফুটবল ক্লাব ফনম পেনহ ক্রাউন এফসির বিপক্ষে প্রথম ম্যাচ খেলতে নামবে ইস্টবেঙ্গল। এর আগেই পুরো দল কম্বোডিয়ায় পাড়ি জমিয়েছে প্রস্তুতির জন্য। নতুন বিদেশি ফুটবলারদের সংযোজনের ফলে দল যে আরও শক্তিশালী হয়েছে, তা স্পষ্ট।
এই আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টের জন্য ঘোষিত স্কোয়াডে গোলরক্ষক হিসেবে থাকছেন পান্থোই চানু ও মামণি দাস। ডিফেন্ডারদের মধ্যে রয়েছেন সরিতা ইউমনাম, সুপ্রিয়া কিসপোতা, রিয়া সরকার, বন্দনা দাস, সুইটি দেবী, সাথী দেবনাথ, আবেনা, মাউরিন টোভিয়া ওকপালা এবং সুস্মিতা দাস। মাঝমাঠে থাকছেন সিল্কি দেবী, কার্তিকা আঙ্গামুথু, সঙ্গীতা বাস্ফোর, দীপিকা পাল ও শ্রাবনী। উইঙ্গার পজিশনে আছেন আমনাহ, সৌম্যা গুগুলথ, সুলঞ্জনা রাউল এবং সন্ধ্যা মাইতি। ফরোয়ার্ড লাইনে থাকছেন দলের মূল ভরসা ফাজিলা ইকওয়াপুথ ও রেস্টি নানজিরি।
এই শক্তিশালী স্কোয়াডের উপরই পূর্ণ আস্থা রাখছেন কোচ অ্যান্থনি অ্যান্ড্রুজ। এএফসি ওমেন্স চ্যাম্পিয়নস লিগে ইস্টবেঙ্গল মহিলা দলের পারফরম্যান্স নিয়ে এখনই প্রত্যাশার পারদ তুঙ্গে। গোটা দেশের নজর থাকবে মশাল কন্যাদের দিকে, কারণ আন্তর্জাতিক মঞ্চে তাদের সাফল্য শুধুমাত্র ক্লাবের গৌরব নয়, বাংলার ও ভারতীয় মহিলা ফুটবলের জন্যও এক নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করতে পারে।
