আকাশে ঈদের চাঁদ, আর বড়পর্দায় ভাইজান। বছর বছর এভাবেই ঈদ ও সলমন খানের ছবি আপামর ভারতবাসীর কাছে সমার্থক হয়ে উঠেছে। দেশজোড়া ছুটির আবহে নিজের করিশ্মা দিয়ে বড় পর্দায় ঝড় তোলেন সল্লু মিয়াঁ। তবে বিগত দুই বছরে ‘টিউবলাইট’, ‘রেস থ্রি’ ছবির জন্য সেই রেকর্ডে সামান্য হলেও তাল কেটেছিল। কিন্তু ‘ভারত’ ছবিটি খুব আহামরি কিছু না হলেও, গ্র্যাঞ্জারে উতরে গেলেন এই যাত্রা।
আস্ত একটা জীবন! সেই জীবনের চাড়াই-উতরাই, হাসি-কান্না, ভালোবাসা-বিচ্ছেদ সমস্তটাই এই ছবির মূল প্রতিপাদ্য। ছবির কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে ভারত (সলমন খান)। মাত্র আট বছর বয়সেই দেশ ভাগের জন্য পাকিস্তানকে পিছনে ফেলে এই দেশে পা রাখে সে। সঙ্গে আসে মা, এক ভাই ও এক বোন। তবে গোষ্ঠী সংঘর্ষের কারণে তাঁদের সঙ্গ নিতে পারেনি ভারতের বাবা এবং অপর এক বোন। এসবের মাঝেই ভারত বাবাকে কথা দেয় পুরো পরিবারকে একসঙ্গে রাখার। এরপর গোটা ছবিতে মোটামুটি বাবাকে দেওয়া সেই প্রতিশ্রুতি পূরণ করতেই সচেষ্ট হয়েছে।
নতুন দেশে নিজের পিসির ছোট একটি ঘরে জায়গা হয় ভারতের পরিবারের। অভাব নিত্যসঙ্গী। সেই অভাব দূর করতে ছোট থেকেই ভারত কাজ নেয় সার্কাসে। মেলে নাম, যশ। তবে একটি ঘটনার পর হঠাৎই ছেড়ে দেয় সার্কাসের কাজ। তারপর চাকরি খুঁজতে বেরিয়ে যায় অনেকটা সময়। এই সময় তাঁর সামনে আরবে তেলের খনিতে কাজের সুযোগ আসে। নিজের সর্বক্ষণের সঙ্গী ছোটবেলার বন্ধু বিলাইতিকে নিয়ে চলে যায় সেই চাকরির ইন্টারভিউ দিতে। ন্যাশনাল এমপ্লয়মেন্ট এক্সচেঞ্জে এই চাকরির জন্য যোগ্য প্রার্থী বাছার কাজটি করেন কুমুদ রায়না (ক্যাটরিনা কাইফ)। তাই চাকরি খুঁজতে এসেই প্রথমবারের জন্য ভারত ও কুমুদের সাক্ষাৎ হয়। প্রথম দেখায় ভারতকে একদমই পছন্দ করেনি কুমুদ। নানা অছিলায় সে ভারতের আরব উড়ে যাওয়া আটকাতে চেয়েছে। কিন্তু শেষমেষ চাকরিটা জুটিয়েই ফেলে ভারত। আর এরপর আরব দেশে উড়ে গিয়ে সেই অপছন্দের পাত্র ভারতের সঙ্গেই কুমুদ আত্মিক বাঁধনে বাঁধা পড়ে। কিন্তু তারপর? প্রেম এসে কি ভারতকে নিজের প্রতিশ্রুতি থেকে বিচ্যুত করে ফেলবে? নাকি প্রেমিকাকেই ছাড়তে হবে ভারতকে? এই টানাপোড়েনের আঁচ পেতেই হলমুখী দর্শক।
ছবির আগাগোড়া, ডায়ে-বাঁয়ে সবতেই সলমনের অবাধ বিচরণ। নানা বয়সের অবতারে নিজেকে মানিয়েছেন ভালোই। তাঁর অভিনয় দক্ষতা, লার্জার দ্যান লাইফ ইমেজের যথেষ্ট ফসল তুলেছেন। ক্যাটরিনার অভিনয়ও প্রশংসার যোগ্য। একজন স্পষ্টবাদী, সময়ের থেকে সাময়িক এগিয়ে থাকা নারীর চরিত্রে তিনি দর্শকদের নজর কাড়বেন।
ভারতের প্রাণের বন্ধু বিলাইতির চরিত্রে সুনীল গ্রোভার অসাধারণ। পর্দায় তাঁর উপস্থিতি ছবির প্রতি সুবিচার করেছে। এছাড়াও অল্প সময়ের জন্য হলেও ভারতের বাবা হিসেবে জ্যাকি শ্রফের অভিনয় বেশ ভালোই। তবে ঘটা করে নাম দেখানো হলেও দিশা পাটানি ও টাবুর চরিত্র ছবিতে প্রায় আবছা।
অনেকেই জানেন, ‘ভারত’ দক্ষিণ কোরিয়ার ‘ওড টু মাই ফাদার’ ছবির উপর নির্ভর করে তৈরি। যদিও ‘ভারত’ কোনওমতেই কোরিয়ার ছবিটির অন্ধ অনুকরণ নয়। সচেনতভাবে তুলে ধরা হয়েছে ১৯৪৭ থেকে ২০১০ পর্যন্ত এই দেশের বিভিন্ন পটপরিবর্তন। জায়গায় জায়গায় ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে জাতীয়তাবাদ, দেশপ্রেম। তবে ঘটনা ও সংলাপের বাড়বাড়ন্তে বেড়েছে ছবির দৈর্ঘ্য। ফলে মাঝে মাঝে ছবিটি বড্ড একঘেয়ে মনে হতে পারে। অনায়াসে ছবির দৈর্ঘ্য কাটছাঁট করা যেত। পরিচালক আলি আব্বাস জাফর প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেননি।
সিনেমাটোগ্রাফি বেশ ঝকঝকে। সঙ্গীত পরিচালক বিশাল-শেখর যথেষ্ট দক্ষতার সঙ্গে কাজ করেছেন।
দর্শকদের মনোরঞ্জনে ছবির পরতে পরতে রয়েছে নাচ, গান, হাসি, কান্নার ছড়াছড়ি। এর থেকে বেশি কিছু খুঁজতে গেলে বড্ড চাপ হয়ে যাবে।
সায়ন নস্কর
আস্ত একটা জীবন! সেই জীবনের চাড়াই-উতরাই, হাসি-কান্না, ভালোবাসা-বিচ্ছেদ সমস্তটাই এই ছবির মূল প্রতিপাদ্য। ছবির কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে ভারত (সলমন খান)। মাত্র আট বছর বয়সেই দেশ ভাগের জন্য পাকিস্তানকে পিছনে ফেলে এই দেশে পা রাখে সে। সঙ্গে আসে মা, এক ভাই ও এক বোন। তবে গোষ্ঠী সংঘর্ষের কারণে তাঁদের সঙ্গ নিতে পারেনি ভারতের বাবা এবং অপর এক বোন। এসবের মাঝেই ভারত বাবাকে কথা দেয় পুরো পরিবারকে একসঙ্গে রাখার। এরপর গোটা ছবিতে মোটামুটি বাবাকে দেওয়া সেই প্রতিশ্রুতি পূরণ করতেই সচেষ্ট হয়েছে।
নতুন দেশে নিজের পিসির ছোট একটি ঘরে জায়গা হয় ভারতের পরিবারের। অভাব নিত্যসঙ্গী। সেই অভাব দূর করতে ছোট থেকেই ভারত কাজ নেয় সার্কাসে। মেলে নাম, যশ। তবে একটি ঘটনার পর হঠাৎই ছেড়ে দেয় সার্কাসের কাজ। তারপর চাকরি খুঁজতে বেরিয়ে যায় অনেকটা সময়। এই সময় তাঁর সামনে আরবে তেলের খনিতে কাজের সুযোগ আসে। নিজের সর্বক্ষণের সঙ্গী ছোটবেলার বন্ধু বিলাইতিকে নিয়ে চলে যায় সেই চাকরির ইন্টারভিউ দিতে। ন্যাশনাল এমপ্লয়মেন্ট এক্সচেঞ্জে এই চাকরির জন্য যোগ্য প্রার্থী বাছার কাজটি করেন কুমুদ রায়না (ক্যাটরিনা কাইফ)। তাই চাকরি খুঁজতে এসেই প্রথমবারের জন্য ভারত ও কুমুদের সাক্ষাৎ হয়। প্রথম দেখায় ভারতকে একদমই পছন্দ করেনি কুমুদ। নানা অছিলায় সে ভারতের আরব উড়ে যাওয়া আটকাতে চেয়েছে। কিন্তু শেষমেষ চাকরিটা জুটিয়েই ফেলে ভারত। আর এরপর আরব দেশে উড়ে গিয়ে সেই অপছন্দের পাত্র ভারতের সঙ্গেই কুমুদ আত্মিক বাঁধনে বাঁধা পড়ে। কিন্তু তারপর? প্রেম এসে কি ভারতকে নিজের প্রতিশ্রুতি থেকে বিচ্যুত করে ফেলবে? নাকি প্রেমিকাকেই ছাড়তে হবে ভারতকে? এই টানাপোড়েনের আঁচ পেতেই হলমুখী দর্শক।
ছবির আগাগোড়া, ডায়ে-বাঁয়ে সবতেই সলমনের অবাধ বিচরণ। নানা বয়সের অবতারে নিজেকে মানিয়েছেন ভালোই। তাঁর অভিনয় দক্ষতা, লার্জার দ্যান লাইফ ইমেজের যথেষ্ট ফসল তুলেছেন। ক্যাটরিনার অভিনয়ও প্রশংসার যোগ্য। একজন স্পষ্টবাদী, সময়ের থেকে সাময়িক এগিয়ে থাকা নারীর চরিত্রে তিনি দর্শকদের নজর কাড়বেন।
ভারতের প্রাণের বন্ধু বিলাইতির চরিত্রে সুনীল গ্রোভার অসাধারণ। পর্দায় তাঁর উপস্থিতি ছবির প্রতি সুবিচার করেছে। এছাড়াও অল্প সময়ের জন্য হলেও ভারতের বাবা হিসেবে জ্যাকি শ্রফের অভিনয় বেশ ভালোই। তবে ঘটা করে নাম দেখানো হলেও দিশা পাটানি ও টাবুর চরিত্র ছবিতে প্রায় আবছা।
অনেকেই জানেন, ‘ভারত’ দক্ষিণ কোরিয়ার ‘ওড টু মাই ফাদার’ ছবির উপর নির্ভর করে তৈরি। যদিও ‘ভারত’ কোনওমতেই কোরিয়ার ছবিটির অন্ধ অনুকরণ নয়। সচেনতভাবে তুলে ধরা হয়েছে ১৯৪৭ থেকে ২০১০ পর্যন্ত এই দেশের বিভিন্ন পটপরিবর্তন। জায়গায় জায়গায় ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে জাতীয়তাবাদ, দেশপ্রেম। তবে ঘটনা ও সংলাপের বাড়বাড়ন্তে বেড়েছে ছবির দৈর্ঘ্য। ফলে মাঝে মাঝে ছবিটি বড্ড একঘেয়ে মনে হতে পারে। অনায়াসে ছবির দৈর্ঘ্য কাটছাঁট করা যেত। পরিচালক আলি আব্বাস জাফর প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেননি।
সিনেমাটোগ্রাফি বেশ ঝকঝকে। সঙ্গীত পরিচালক বিশাল-শেখর যথেষ্ট দক্ষতার সঙ্গে কাজ করেছেন।
দর্শকদের মনোরঞ্জনে ছবির পরতে পরতে রয়েছে নাচ, গান, হাসি, কান্নার ছড়াছড়ি। এর থেকে বেশি কিছু খুঁজতে গেলে বড্ড চাপ হয়ে যাবে।
সায়ন নস্কর