কলকাতা – একই দিনে নিউটাউন ও আনন্দপুর—দুই জায়গায় অভিযান চালিয়ে পটনার গ্যাংস্টার চন্দন মিশ্র খুনের ঘটনায় মোট ১১ জনকে গ্রেফতার করল বিহার এসটিএফ। শনিবার রাতে আনন্দপুর থেকে ধৃত হয় আরও পাঁচ অভিযুক্ত। অভিযানে সাহায্য করে কলকাতা পুলিশও।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, লোকেশন ট্র্যাক করে তদন্তকারীরা জানতে পারেন, আনন্দপুর এলাকার একটি ওষুধের দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে আছে বিহার নম্বরের একটি গাড়ি। সন্দেহ হয়, কোথাও যাওয়ার জন্য থেমেছে কি না। কিন্তু গাড়িটি আর না এগোনোয় সন্দেহ আরও ঘনীভূত হয়। দেখা যায়, ওষুধের দোকানটির উল্টো দিকেই রয়েছে একটি গেস্ট হাউস। পুলিশের অনুমান, সেখানেই লুকিয়ে রয়েছে অভিযুক্তরা।
এরপরই আনন্দপুর থানার মাধ্যমে খবর পৌঁছে যায় গেস্ট হাউসের মালিকের কাছে। সন্ধ্যায় তাঁরা থানায় আসেন এবং এর কিছুক্ষণের মধ্যেই শুরু হয় অভিযান। স্থানীয়দের দাবি, সাধারণ পোশাকে অস্ত্রধারী স্পেশাল ফোর্স গেস্ট হাউস ঘিরে ফেলে রাতের অন্ধকারে। এরপর চারতলায় থাকা ঘরে হানা দিয়ে একে একে পাঁচ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
তদন্তে উঠে এসেছে, অভিযুক্তরা শুক্রবার থেকেই ওই গেস্ট হাউসের একটি ঘরে আত্মগোপন করেছিল। গাড়িটি বাইরে দাঁড় করিয়েই রেখেছিল, যা থেকেই পুলিশের সন্দেহ ঘনীভূত হয় এবং অভিযানে সহায়তা করে। ধৃতদের মধ্যে একজন স্নায়ুরোগে আক্রান্ত থাকায়, অভিযান চলাকালীন অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে স্ট্রেচারে করে চারতলা থেকে তাকে নামিয়ে আনা হয়।
এর আগে শনিবার সকালেই নিউটাউনের একটি আবাসন থেকে পাঁচ জনকে গ্রেফতার করে বিহার ও রাজ্য পুলিশের এসটিএফ যৌথভাবে। পুলিশি সূত্রে খবর, পুরুলিয়া জেলে বন্দি শেরুকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ওই পাঁচ জনের অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়। পুলিশের অনুমান, শেরুর নির্দেশেই চিকিৎসার জন্য মেডিক্যাল প্যারোলে মুক্ত চন্দন মিশ্রকে খুন করেছে অভিযুক্তরা।
এই পুরো ঘটনার পর কলকাতা ও পাটনা পুলিশের যৌথ তৎপরতা এবং টানা নজরদারির ফলে এক দিনের ব্যবধানে চন্দন মিশ্র হত্যাকাণ্ডের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ১১ অভিযুক্তকে পাকড়াও করা সম্ভব হয়েছে। তদন্তে নেমে পুলিশ এখন শেরু-চন্দন মিশ্র গ্যাং সংঘর্ষের পেছনের চক্র ও সুপারির মূল সূত্র খুঁজতে তৎপর।
