এক না হয়েও এক দীপান্বিতা ও দেওয়ালী। বাঙালির দীপান্বিতা কালীপূজা আর হিন্দি ভাষীদের দেওয়ালী মিলেমিশে একাকার রায়গঞ্জে। উত্তর দিনাজপুরের জেলা সদর রায়গঞ্জ, রায়গঞ্জ বাঙালি অধ্যুষিত এলাকা হলেও এখানে দীর্ঘদিন ধরেই মারওয়ারি এবং বিহারীদের বাস। একইসঙ্গে গড়ে উঠেছে বাঙালি বিহারী মারওয়ারী সমাজ।
শুধু তাই নয়, এখানকার আর্থসামাজিক পরিকাঠামোর বেশিরভাগটাই নির্ভর করে এইসব মারোয়ারি এবং বিহারী ব্যবসায়ীদের উপরেই। মারওয়ারি সমাজের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সুরেশ আগরওয়াল, পবন আগরওয়ালদের বক্তব্য অনুযায়ী শুধু রায়গঞ্জ শহরেই মারওয়াড়ি রয়েছেন প্রায় বারোশো ঘর, এছাড়াও পাশাপাশি কালিয়াগঞ্জ, ডালখোলা এবং ইসলামপুরেও প্রচুর মারওয়াড়ির বাস রয়েছে।
রায়গঞ্জের বন্দর, খরমুজা ঘাট রোডে যেমন রয়েছে বিহারীদের বাস তেমন রয়েছে করণদিঘির টুঙ্গীদিঘী, ডালখোলা এলাকায় প্রচুর বিহারী সমাজ। কার্তিক মাসের অমাবস্যা তিথিতে বাঙালীরা যখন দীপান্বিতা কালীপূজা করেন ঠিক সেই সময় এই মারোয়ারি, বিহারী বা হিন্দি সমাজ দেওয়ালী উৎসবে মেতে ওঠেন। দুটো কিন্তু আলাদা, সুরেশ আগরওয়াল বা পবন আগরওয়াল এর কথায়, যে কালী পূজার সঙ্গে তাদের দেওয়ালীর কোন সম্পর্ক নাই।
আরও পড়ুন – শিলিগুড়িতে ভাইফোটার বাজারে শাকসবজি ,মাছ মাংসের অগ্নিমূল্য
কিন্তু তাদের দীপাবলি হয়, বাঙালির যেমন পয়লা বৈশাখ হয়, গনেশ পূজা করে পহেলা বৈশাখে হালখাতা করা হয়। ঠিক সেভাবেই লক্ষ্মী গণেশ পূজার মাধ্যমে নতুন খাতার মহরৎ হয়, দীপ দান করে আহ্বান করা হয় মা লক্ষ্মী ও গণপতি বাপ্পাকে। বাঙালিরা কালী পূজার আগের রাতে অর্থাৎ চতুর্দশী তিথিতে প্রয়াত চৌদ্দ পুরুষদের উদ্দেশ্যে বাতি দান করেন। অমাবস্যা তিথিতে বাতি দান করেন সকল দেবদেবী, শূর-অশূর সবার উদ্দেশ্যে। দীপ দানের উৎসব, তাই নাম দীপান্বিতা বা দীপাবলী।
অবাঙ্গালী মারোয়ারী বা বিহারী সমাজ সদর দরজার সামনে কলাগাছ পুঁতে, দুটি কলাগাছের মাঝে বাঁশের বাতা গুঁজে মাটির প্রদীপে সলতে দিয়ে ঘিয়ের প্রদীপ জ্বালিয়ে দীপ দানের মাধ্যমে মা লক্ষ্মী ও গণপতি বাপ্পাকে আরাধনা করেন। এর নাম দেওয়ালী। একই তিথিতে দীপান্বিতা কালীপূজা ও দেওয়ালী হওয়ার কারণে মিলেমিশে বৃহত্তর দীপাবলি উৎসবের রূপ নিয়েছে রায়গঞ্জ তথা উত্তর দিনাজপুরে। সম্প্রীতির মেলবন্ধন গড়ে উঠেছে বাঙালি, বিহারী, মারওয়ারী সমাজে। এক না হয়েও