এখানে কুমারী পুজো হয় দেবীর বিদায় লগ্ন দশমী তিথিতে

এখানে কুমারী পুজো হয় দেবীর বিদায় লগ্ন দশমী তিথিতে

Facebook
Twitter
LinkedIn
Email
WhatsApp
Print
Telegram

কুমারী পুজো হয় দেবীর বিদায় লগ্ন দশমী তিথিতে। দুই শতাধিক বছরের ওই পুরনো রীতি আজও মেনে চলা হয় মালদার হরিশ্চন্দ্রপুরের কুশিদা সরকার বাড়ির পুজোয়। সাধারণত অষ্টমীতে কুমারী পুজো হয়ে থাকে।কিন্তু সরকার বাড়ির এই পুজোয় পুরনো রীতি মেনেই কুমারী পুজো হয় দশমীতে।এই পুজোর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে চাঁচলের রাজার নামও। পুজোর প্রতিষ্ঠাতা ক্ষেত্রমোহন সরকার।

 

তিনি ছিলেন পোকমা এলাকার জমিদার। হাতিতে চেপে চাঁচলের রাজার সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু কুশিদায় হাতির পা মাটিতে বসে যায়। বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় ক্ষেত্রমোহনের আর চাঁচলে যাওয়া হয়নি।কুশিদায় রাতে থাকার সময় স্বপ্নাদেশ পান তিনি। তারপর কুশিদাতেই পুজো শুরু করেন ক্ষেত্রমোহন বাবু । তার উত্তরপুরুষরা আজও নিষ্ঠার সঙ্গে সেই পুজো করে চলেছেন। সরকার পরিবার সূত্রেই জানা গিয়েছে, মালদহের চাঁচল বিধানসভার কুশিদা এলাকায় রয়েছে সরকার বাড়ি।

 

চল্লিশ শতক জমির উপরই গড়ে উঠে জমিদার ক্ষেত্রমোহনের আদি বাড়ি ও দুর্গাদালান। প্রায় দুশো বছর আগে দেবীর স্বপ্নাদেশ পেয়ে জমিদার ক্ষেত্রমোহন সরকার এই পুজো শুরু করেন। এখন জমিদারির থাটবাট না থাকলেও বর্তমানে এই পুজোকে ধরে রেখেছেন সরকার বাড়ির সদস্যরাই। বোধনের আগে দেবীকে বেনারসি ও সোনার অলংকার দিয়ে সাজিয়ে তুলেন বাড়ির মেয়ে বউরা। নিয়ম রীতি মেনে ষষ্ঠীর দিন হয় বোধন সপ্তমীতে নবপত্রিকাকে স্নান করিয়ে নিয়ে এসে তাঁকে স্থাপন করা হয় দূর্গা দালানে।

 

তারপর চলে পুজো।বেশিরভাগ বনেদি বাড়িতে অষ্টমী তিথিতে কুমারী পূজার চল থাকলেও সরকার বাড়ির দূর্গা পূজায় কুমারি পূজিতা হন দশমী তিথিতে। পাশের নদীতে ঘট বিসর্জনের পরেই নদী থেকে মাছ সংগ্রহ করে আনা হয়। যে কুমারী মায়ের পুজো হবে সেই কুমারী মাকে নদী থেকে সংগ্রহ করা মাছ দেখানোর রীতি রয়েছে। দশমীর দিন দেবীর বিদায় বেলায় ধনুচি নাচ এবং সিঁদুর খেলায় মেতে উঠেন সরকার বাড়ির মহিলারা।

 

গোধূলি লগ্নে দেবীর মৃন্ময়ী প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয় গ্রামের পাশের নদীতে। চাকরি সূত্রে সরকার বাড়ির সদস্যরা বিদেশে থাকলেও পুজোর সময় ইতিহাসের সাক্ষী হতে সকলেই স্বপরিবারে চলে আসেন মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের কুশিদার প্রত্যন্ত গ্রামে।

সরকার বাড়ির মেয়ে স্নেহা সরকার বসাক জানান, কর্মসূত্রে স্বামীর সাথে চেন্নাই থাকি। কিন্তু পুজোর সময় আমরা সবাই এই পুজোতে সামিল হই। আমাদের পুজো এবার ২২০ বছর বর্ষে পড়লো। পুজোকে ঘিরে আমরা সবাই আনন্দ এবং উল্লাসে মেতে উঠি।

RECOMMENDED FOR YOU.....

Scroll to Top