আমেরিকা -মার্কিন শেয়ার বাজার ওয়াল স্ট্রিটে রক্তক্ষরণ। কোভিড অতিমারির পর মার্কিন অর্থনীতিতে এত বড় ধাক্কা এই প্রথম। তবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দাবি করেছেন যে, আমেরিকার অর্থনীতি ফের মাথা তুলবে। নিশ্চিন্ত মার্কিন প্রেসিডেন্ট এই ইঙ্গিতও দিয়েছেন যে, সপ্তাহান্তটা তিনি তাঁর ফ্লরিডার গল্ফ রিসর্টে কাটাবেন।পরিসংখ্যান অনুসারে, এস অ্যান্ড পি ৫০০ ৪.৮ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে, যা ২০২০ সালের পর সবচেয়ে বড় ক্ষতি। প্রযুক্তি-সমৃদ্ধ ন্যাসডাক ৬ শতাংশ এবং ডাও জোন্স ৪.০ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।
যদিও এসব নিয়ে মোটেও ভাবতে রাজি নন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাঁর ইঙ্গিত, সপ্তাহান্তটা তিনি তাঁর ফ্লরিডার গল্ফ রিসর্টে কাটাবেন। তিনি বলেছেন, “ডোনাল্ড ট্রাম্পের উপর আস্থা রাখুন। মার্কিন অর্থনীতির ভিত খুব শক্ত, যা আরও মজবুত হচ্ছে।” ৭৮ বছর বয়সী প্রেসিডেন্ট, একটি বিশাল অর্থনৈতিক পুনর্গঠনের মাধ্যমে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে বিদেশি নির্মাতাদের উপর নির্ভরতা থেকে মুক্ত করতে চান। যা তিনি একটি চিকিৎসা পদ্ধতির সঙ্গে তুলনা করেছেন।ওয়াল স্ট্রিটের ধস সম্পর্কে ট্রাম্র বলেছেন, “এটিই প্রত্যাশিত। রোগী খুব অসুস্থ ছিলেন। অর্থনীতিতে অনেক সমস্যা ছিল। অস্ত্রোপচার হয়েছে। ধৈর্য্য ধরুন, মার্কিন অর্থনীতির বৃদ্ধি ঘটবে, যা আশ্চর্যজনক হতে চলেছে।”
মার্কিন প্রেসিডেন্টের কুর্সিতে দ্বিতীয়বার বসেই আমেরিকার শুল্ক নীতিকে আমূল পরিবর্তন এনেছেন ট্রাম্প। ঘোষণা করেছেন পারস্পারিক শুল্কের। অর্থাৎ, যে দেশ আমেরিকার পণ্য থেকে যত শুল্ক নিয়ে থাকে, তাদের উপরেও পাল্টা তত শুল্কই চাপানো হয়েছে। এ বিষয়ে আমেরিকার স্বার্থের কথা বিবেচনা করেছে ট্রাম্প প্রশাসন।মার্কিন প্রশাসন বুধবারের পর থেকে ভিয়েতনামের পণ্য থেকে ৪৫ শতাংশ, থাইল্যান্ডের পণ্যে ৩৬ শতাংশ, চিনের পণ্যে ৩৪ শতাংশ, ইউরোপীয় ইউনিয়নের পণ্যে ২০ শতাংশ, দক্ষিণ কোরিয়ার পণ্যে ২৫ শতাংশ, তাইওয়ানের পণ্যে ৩২ শতাংশ, ভারতের পণ্যের উপর ২৬ শতাংশ, জাপানের পণ্যে ২৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে। তবে, যেসব পণ্যের জন্য আমেরিকা অন্যদেশের উপর নির্ভরশীল সেইসব পণ্যে তেমন শুল্ক আরোপ করা হয়নি।
ট্রাম্পের বুধবারের ঘোষণার পর বিভিন্ন দেশ যেমন আমেরিকার সঙ্গে আলোচনায় বসতে আগ্রহী। তবে মার্কিন পণ্যে পাল্টা শুল্ক চাপানোরও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।ট্রাম্পের নতুন নীতিতে প্রায় প্রতিটি দেশের উপরেই ন্যূনতম ১০ শতাংশ হারে শুল্ক চাপানো হয়েছে। আমেরিকায় রফতানি হওয়া গাড়ির উপরও শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। পাল্টা কানাডা-ও প্রত্য়াঘাত করেছে। তারাও মার্কিন গাড়ির উপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা করেছে। বিভিন্ন বহুজাতিক সংস্থা অন্যান্য দেশে গাড়ি উৎপাদন বন্ধ রেখেছে। বিনিয়োগকারীদের অনেকেই সোনা কেনা বন্ধ রেখে ভবিষ্যতের কথা ভেবে নিরাপদ কিছু কিনতে চাইছেন। ডলারের মূল্যমান হ্রাস মার্কিন নাগরিকদের কপালে ভাঁজ ফেলেছে।এর জেরে আগামী দিনে আমেরিকা মুদ্রাস্ফীতির কবলে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা।
