কঠোরতার আড়ালে মানবিক কলকাতা পুলিশ, সামনে এল নানান ছবি

কঠোরতার আড়ালে মানবিক কলকাতা পুলিশ, সামনে এল নানান ছবি

Facebook
Twitter
LinkedIn
Email
WhatsApp
Print
Telegram

 

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলকাতা, ২৭ মার্চ, দেশজুড়ে করোনার জেরে লকডাউনের ঘোষণা করে সরকার।করোনা ভাইরাসের চেন ভাঙতেই বাড়ি থেকে বাইরে বেরোতে নিষেধ করা হয়েছে।সাথে বেরোলে শাস্তির কথাও ঘোষণা করেছে সরকার।কিন্তু তবু কিছু মানুষ বিনা কারণে বাইরে বেরোচ্ছে আর তাই তাদের সচেতন করতে রাস্তায় রাস্তায় বহু পুলিশকর্মী নিয়োগ করা হয়েছে।সারা দিন-রাত রাস্তায় দাঁড়িয়ে তারা শুধু মানুষের কাছে একটাই অনুরোধ করে চলেছে, যাতে কেউ খুব জরুরি প্রয়োজন না হলে বাড়ি থেকে না বেরোয়।কিন্তু কিছু মানুষের বেখেয়ালিপনা রুখতে পুলিশকে বহুবার কঠোর হতে হয়েছে, দরকারে লাঠিচার্জ করতেও হয়েছে।সম্প্রতি একটি অভিযোগ উঠে আসে, পুলিশের মারে একজন মারা গিয়েছে, এর সত্যতা বিচার যদিও করা হয়নি কিন্তু এর মধ্যেও দেশের নানান প্রান্তে বিশেষ করে রাজ্যে উঠে এসেছে সেই কঠোর পুলিশের মানবিক রূপ।

জানা যায়, বৃহস্পতিবার সকালে পূর্ব কলকাতার ট্যাংরা থানার ডিসি দে রোডে আসন্নপ্রসবা এক গৃহবধূ গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। সেই অবস্থায় রাস্তায় আটকে পড়ে ছটফট করতে থাকেন তিনি। এদিকে রাস্তায় কোনও গাড়িও নেই। দিশেহারা হয়ে পড়েন পরিবারের লোকজন। খবর পেয়ে ট্যাংরা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। একটি অ্যাম্বুলেন্স জোগাড় করে ওই মহিলাকে নীলরতন সরকার হাসপাতালে পৌঁছে দেন তাঁরা। পুলিশের এই মানবিক মুখ দেখে খুশি স্থানীয় বাসিন্দারা।

অপরদিকে আরও এক খবর শোনা যায়, আট বছরের এক শিশু থ্যালাসেমিয়ার রোগী। প্রত্যেক মাসেই রক্ত নিতে হাসপাতালে ছুটতে হয় ওই শিশুকে। লকডাউনের দ্বিতীয় দিনে সে তার বাবা মার সঙ্গে হাসপাতালের উদ্দেশ্যে পথে বের হয়েছিল। কিন্তু অ্যাম্বুলেন্স বা কোনও গাড়ি না পাওয়ায় বেশ কিছুক্ষণ রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। অসুস্থ হয়ে পড়ে ওই শিশু। খবর পেয়ে ছুটে যায় সাউথ-ওয়েস্ট ট্রাফিক গার্ড-এর পুলিশ। তাঁদের সহায়তায় একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে ওই শিশুকে হাসপাতালে পৌঁছে দেওয়া হয়।

এদিকে গাড়ির ভেতরে দাঁতে দাঁত চিপে প্রসবের যন্ত্রণা সহ্য করে চলেছে প্রথমবার মা হতে চলা এক মহিলা। স বাই ধরেই নিয়েছেন অঘটন আর হয়ত ঠেকানো যাবে না। মেয়েটা হয়ত যন্ত্রণায় ছটফট করতে করতেই হার্টফেল করে যাবে। ঠিক সেই সময় দেবদূতের মতোই সেখানে হাজির কলকাতা পুলিশের কনস্টেবল। পরিস্থিতি দেখে সঙ্গে সঙ্গে তিনি ফোন করলেন থানায়। তারপর সেই থানা থেকে আসা প্রিজন ভ্যানে চেপেই হাসপাতালে পৌঁছালেন অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূ। সাক্ষী থাকল লক ডাউনের রাতের কলকাতা।

পাশাপাশি শহরের ভবঘুরে-গরিব মানুষদের জন্যও খাওয়ার ব্যবস্থা করেছে কলকাতা পুলিশ। সেই ছবি শেয়ারও করেছেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা। পাশাপাশি শহরের পথকুকুরদের খাবারের ব্যবস্থা করতেও এগিয়ে এসেছে কলকাতা পুলিশ। এমন এক দুঃসময়ে কলকাতা ও রাজ্যের সকল পুলিশ অফিসার ও কর্মীদের আমাদের কুর্নিশ।

ক্যানিং থেকে এসে বাইপাসের উপরে ঢালাই ব্রিজের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন এক মহিলা। ছেলেকে ডাক্তার দেখাতে নিয়ে যাওয়ার কথা শহরেরই এক হাসপাতালে। কিন্তু ঢালাই ব্রিজ থেকে তিনি আর গাড়ি পাচ্ছিলেন না কোনওভাবেই। সঙ্গেসঙ্গে এগিয়ে আসেন কর্তব্যরত পুলিশকর্মীরা। পুলিশের গাড়িতেই ওই মহিলা ও তাঁর সন্তানকে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়। দুর্দিনে পুলিশের এমন ভূমিকার প্রশংসা করেন ওই মহিলা।পুলিশের এই কাজে আমরা পাশে থেকে ২০টা দিন গৃহবন্দী হতে পারি তাহলে সারা দেশ জুড়ে এই করোনার আতঙ্ক হয়তো অনেকটা কম হবে।

RECOMMENDED FOR YOU.....

Scroll to Top