ভাইরাল – বিশ্বজুড়ে বিয়ের রীতিনীতিতে বৈচিত্র্যের শেষ নেই। তবে সম্প্রতি মেক্সিকোর একটি শহরে যে বিয়ের আয়োজন হল, তা যেন সব ব্যতিক্রমকে ছাপিয়ে গেল। কারণ, এই বিয়েতে কনের সাজে হাজির হয়েছিল এক জ্যান্ত কুমির! আর তাকে বিয়ে করলেন শহরের মেয়র স্বয়ং। এই অভিনব বিয়ের ভিডিও ইতিমধ্যেই সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল।
দক্ষিণ মেক্সিকোর সান পেড্রো হুয়ামেলুলা শহরে বসেছিল এই অদ্ভুত বিয়ের আসর। সেখানে স্থানীয় মেয়র ড্যানিয়েল গুতেরেস-এর সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে দেওয়া হয় একটি মেয়ে কুমিরের। বিয়ের মণ্ডপে অতিথিদের উপস্থিতিতে পূর্ণ রীতিনীতি মেনে সম্পন্ন হয় এই অনন্য বিয়ে।
বর সেজে মেয়র উপস্থিত হন সাদা পোশাকে, তাঁর ব্লেজারে ছিল কুমিরের নকশা। অন্যদিকে কনেকেও সাজানো হয় একেবারে সাদা গাউনে। দুই হাতে না হাঁটলেও কনে যে সাঁতরাতে ওস্তাদ, সে কথাও উল্লেখযোগ্য। নিরাপত্তার স্বার্থে কুমিরটির মুখ বেঁধে রাখা হয়, তবে সেই বাধা প্রেম প্রকাশে বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি—বিয়ের পর কনেকে কোলে তুলে চুম্বন করেন মেয়র, জড়িয়ে ধরে নাচতেও দেখা যায় নবদম্পতিকে।
তবে এই ঘটনাকে নিছক মজার চোখে দেখলে ভুল হবে। এটি মেক্সিকোর বহু পুরনো লোকাচার ও প্রাকৃতিক বিশ্বাসের প্রতীক। প্রায় ২৫০ বছর পুরনো এই প্রথা অনুসারে, প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের ঐক্য ও ভারসাম্য রক্ষা করতেই এই বিবাহ আয়োজন। গ্রামের মানুষের বিশ্বাস, একটি প্রাণীকে—বিশেষ করে কুমিরকে—বিয়ে করলে প্রকৃতি সন্তুষ্ট হন। এতে কৃষিকাজে উন্নতি হয়, মৎস্যচাষে সমৃদ্ধি আসে এবং গ্রামবাসীদের জীবনে সৌভাগ্য জোটে।
কুমিরকে এখানে ধরিত্রী দেবীর প্রতীক হিসেবে দেখা হয়। ফলে তাঁকে বিবাহ করে মেয়র প্রকৃতির প্রতি সম্মান জানান এবং এক প্রকার শপথ নেন গ্রামের মঙ্গল ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায়।
এই বিয়ের মধ্য দিয়ে যেমন লোকসংস্কৃতির এক অদ্ভুত রূপ ধরা পড়েছে, তেমনই পরিবেশচেতনার একটি শক্তিশালী বার্তাও তুলে ধরা হয়েছে এই রীতির মাধ্যমে।
