নিউজ ডেস্ক, ১ জুন ২০২১: করোনা সংক্রমণের জেরে
গত বছর অসুস্থ বাবাকে বাড়ি ফিরিয়ে এনেছিলেন প্রায় ১২০০ কিলোমিটার পথ সাইকেল চালিয়ে।

সেই ছবি সেই সময় আমরা সকলেই দেখেছি। আর এই এবছর সেই মেয়েটিই হারালেন তার বাবাকে। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ গেল বিহারের জ্যোতি কুমারীর বাবার।

উল্লেখ, গত বছর মার্চ মাসে করোনার দাপটে রাশ টানতে দেশজুড়ে সার্বিক লকডাউন ঘোষণা করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার ৷ সেই সময় গুরুগ্রামে থাকতেন আদতে বিহারের বাসিন্দা মোহন পাসওয়ান ৷ পেশায় ই-রিকশার চালক মোহন দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিলেন ৷ চিকিৎসক তাঁকে বাড়িতেই বিশ্রামে থাকার পরামর্শ দেন ৷লকডাউনে যখন থমথমে দেশ তখন অন্যদিকে, অসুস্থ বাবাকে দেখতে তার আগেই গুরুগ্রামে পৌঁছে গিয়েছিল ১৫ বছরের জ্যোতি ৷ সে বুঝতে পারে বাবাকে সুস্থ করতে হলে বাড়ি ফেরাটা জরুরি ৷ কিন্তু লকডাউনে গাড়ি-ঘোড়া বন্ধ ৷ পকেটের এমন জোরও নেই যে বাড়তি কড়ি গুণে কোনও ব্যবস্থা করা যাবে ৷ এই অবস্থায় জ্যোতি অসুস্থ বাবাকে পিছনে বসিয়ে সাইকেলেই গুরুগ্রাম থেকে বিহারের দ্বারভাঙা ফেরে সে ৷ এই ঘটনার পর জ্যোতি কুমারীকে ট্রায়ালের জন্য ডাকল সি এফ আই।এই এবং জ্যোতিকে প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রীয় বাল্য পুরস্কার দেওয়া হয় ৷ তাকে বিনামূল্যে টিউশন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন সুপার ৩০ খ্যাত আনন্দ কুমার ৷ বিহারের লোক জনশক্তি পার্টি এবং উত্তরপ্রদেশের সমাজাবাদী পার্টির তরফেও জ্যোতির পড়াশোনার জন্য আর্থিক সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয় ৷ মেয়ের এই কৃতিত্বে সেদিন গর্বে বুক ভরে উঠেছিল দরিদ্র মোহনের ৷ তাঁর আশা ছিল, জ্যোতি বড় হলে হয়তো সংসারে অনটন ঘুচবে ৷ বাবার সেই স্বপ্ন পূরণ করবে জ্যোতি, শুধু এই পূরণের যাত্রায় বাবাকে আর পাশে দেখতে পাবে না।