কাঁটা তারের বেড়া সরিয়ে বিশ্ব লালন উৎসবে মাতল দুই বাংলার শিল্পীরা. ভারত, বাংলাদের সীমানা বরাবর উঁচু হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে কাঁটা তারের বেড়া। দুপাশে দুই বাংলার শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি এক হলেও সংস্কৃতি চর্চা ও ভাব বিনিময়ে বাধা দেয় সেই কাঁটা তার। এবার সেই তারের বাধা ভেঙে বিশ্ব লালন উৎসবে মাতে উঠল দুই বাংলার শিল্পীরা।
উল্লেখ্য, বিগত ২৪শে জুন থেকে উত্তর দিনাজপুর জেলার রায়গঞ্জে বসেছে উত্তরবঙ্গের ১ম
বিশ্ব লালন মেলা। মঞ্চে লালন গীতি পরিবেশন, লালন বিষয়ে সেমিনার, গুণীজন সংবর্ধনা, লালন মেলা, লালন স্মারক বেচাকেনা অনুষ্ঠিত হয়। এই লালন মেলা নিয়ে লালন মঞ্চ উন্নয়ন স্থায়ী কমিটির পক্ষে তরনী দাস মহন্ত বলেন, সম্প্রতি এখানে ৩৬ তম রাজ্য বাউল মেলা অনুষ্ঠিত হলেও এবারই উত্তরবঙ্গের প্রথম বিশ্ব লালন মেলার আয়োজন করা হয়েছে। দক্ষিণ বঙ্গের বিভিন্ন প্রান্তে এবং বাংলাদেশের বেশ কয়কটি জায়গায় লালন মেলা অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু উত্তর বঙ্গে প্রথমবার এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এতে ভারতের বিভিন্ন অংশের বাউল, ফকিরেরা যেমন সংগীত পরিবেশন করছেন, তেমনি বাংলাদেশের খ্যাতনামা লালন গীতি শিল্পীরাও সংগীত পরিবেশন করছেন। এদিনই গভীর রাতে এই মেলা সমাপ্তি হবে বলে জানিয়েছেন তরনী সেন মহন্ত।
তিনি জানান, মেলার প্রথম দিনে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রায় অংশ নিয়েছিলেন বহু লোকসংগীত ও বাউল শিল্পী। শোভাযাত্রা শেষে শুরু হয় মূল মেলা। ২৭শে জুন দুপুরে আয়োজিত হয় লালন বিষয়ে একটি বিশেষ সেমিনার। এই সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট মানুষেরা। যেমন সুখবিলাস বর্মা, দীপক চন্দ্র বর্মন, সুকুমার বাড়ই, অতনু বন্ধু লাহিড়ী, ডঃ সুনীল চন্দ, ভানুকিশোর সরকার, ভানু পাল, গৌর আচার্য, বাসুদেব সরকার, দীপক চন্দ্র বর্মন, সাইদুর রহমান, ব্রজগোপাল বৈষ্ণব সহ অন্যান্যরা। সেমিনারে লালন ফকিরের মানবতা ও তার প্রভাব প্রসঙ্গে বক্তব্য রাখেন ড. সুনীল চন্দ।
আরও পড়ুন – সুস্থ জেল্লাদার ত্বক পেতে সকালে ঘুম থেকে উঠে মেনে চলুন এই ছ’টি নিয়ম
আয়োজকেরা জানিয়েছেন, বিশ্ব লালন মেলায় সংগীত পরিবেশনের জন্য এপার ও ওপার বাংলা থেকে উপস্থিত হয়েছেন নানান লোকশিল্পীরা। মঞ্চে ভাটিয়ালি, ভাওয়াইয়া, তরজা, কৌশানি, মহাজনপদের গান, ফকিরা শাহের গানসহ নানান অঙ্গের লোকসংগীত উপস্থাপন করেন লোকশিল্পীরা। স্থানীয় শিল্লীদের সংগীত পরিবেশনও মন কেড়েছে সকলের। সবমিলিয়ে, জমজমাট ভাবে কাটল বিগত ৬ দিনের প্রথম বিশ্ব লালন মেলা। মেলা দেখতে সুভাষগঞ্জে ভিড় জমান বহু লালনপ্রেমী সাধারণ মানুষ। আগামী বছরের আশা নিয়ে পরিসমাপ্তি হয় লালন মেলার মিলনমেলা।