এবার ভোট প্রচারে নামলেন মুখ্যমন্ত্রীর ভাতৃবধূ কাজরী বন্দ্যোপাধ্যায় । সামনেই পুরভোট। কলকাতা পুরসভায় অন্যতম হাইপ্রোফাইল কেন্দ্রের মধ্যে একটি হল ওয়ার্ড ৭৩। ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্রের এই ওয়ার্ডে এবার হল প্রার্থী বদল। আনা হল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিবারের এক সদস্যকে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিবারের আর কোনও সদস্যকে তেমনভাবে সক্রিয় রাজনীতিতে দেখা যায়নি। ভবানীপুর উপ নির্বাচনে জয়ের পর ভাতৃবধূদের পাশে নিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন মমতা।
আর গতকাল পুরভোটের প্রার্থী তালিকায় ভাতৃবধূকে টিকিট দিয়ে বড় চমক দিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। খোদ মমতার ওয়ার্ডেই প্রার্থী কাজরী বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাই কার্তিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী কাজরী বন্দ্যোপাধ্যায়। গতকাল প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পর আজ সকালেই প্রচার শুরু করে দেন কাজরী। তিনি জানান, মমতা যে তাঁকে প্রার্থী করবেন, এ কথা তিনি জানতেন না। তিনি বলেন, ‘প্রার্থী হওয়ার ১০ মিনিট আগেও জানতাম না যে আমি প্রার্থী হচ্ছি। মিটিং থেকে বেরিয়ে দিদি যখন ঘরে এল, তখনও দিদি আমাকে কিছু বলেনি। অন্য একজন বলল, লিস্টে তোর নাম আছে।’
খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিবারের সদস্য, তাই আগে সরাসরি কোনও রাজনৈতিক যোগ না থাকলেও পরিবারের সঙ্গে যে রাজনীতি সম্পর্ক অবিচ্ছেদ্য, তা অনুমান করাই যায়। যদিও কাজরী বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেন, বাড়িতে রাজনীতির আলোচনা তেমন হয় না। তিনি বলেন, ‘দিদি বাড়ি চলে এলে একেবারে ঘরোয়া, রাজনীতিটা বাইরেই থাকে।’ তবে প্রথমবার ভোটে লড়াই, তাই মমতার আশীর্বাদ সঙ্গে নিয়েই নামছেন বলে জানান কাজরী। তিনি জানান, ‘দিদি সবসময়ই ভালো কাজ করার পরামর্শ দেন, মডেল ওয়ার্ড তৈরি করার কথা বলেন।’ তবে কাজরী জানিয়েছেন ৭৩ নম্বর ওয়ার্ডে বিশেষ কোনও সমস্য নেই।
কিছু ঘাট ভেঙে গিয়েছে, ভোটের পর সেগুলো সারিয়ে ফেলা হবে। ৭৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ছিলেন রতন মালাকার। দীর্ঘদিন ধরে সেই পদে দায়িত্ব সামলেছেন তিনি। এবার তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন রতন মালাকার। দলীয় সূত্রে খবর, সংগঠন সম্পর্কে ধ্যান ধারনা খুব বেশি ছিল না রতন মালাকারের। দলের মধ্যে তাঁর বিরুদ্ধে ক্ষোভও ছিল বলে শোনা যায়। তাই সম্ভবত এবার বাদ পড়লেন তিনি। আর সেই জায়গায় টিকিট পেলেন মুখ্যমন্ত্রীর আত্মীয়া।
আর ও পড়ুন ত্রিপুরা পুরভোটে বেশ কিছু আসনে দ্বিতীয় স্থান দখলে নিলো তৃণমূল
তবে শনিবার সকাল থেকেই ভোট যুদ্ধের প্রচারে দেখা গিয়েছে কাজরী বন্দ্যোপাধ্যায়কে। দলের কিছু সমর্থক নিয়ে বলরামঘাট রোডে ঘরে ঘরে গিয়ে জনসংযোগ করেন তিনি। আসলে এই এলাকাতেই তাঁর শ্বশুরবাড়ি। বাপের বাড়িও এখানে। এক কথায় বলতে গেলে এলাকারই মেয়ে কাজরী। তাই প্রার্থী হিসেবে তাঁর নাম ঘোষিত হওয়ার পরই শনিবার জোরকদমে প্রচার শুরু করে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাতৃবধূ।
উল্লেখ্য, এর আগে ভবানীপুরের ৭৩ নম্বর ওয়ার্ড থেকে প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িয়ে জিতেছেন রতন মালাকার। তবে শুক্রবার রাতে তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ হওয়ার পর দেখা যায়, এবারে ৭৩ নম্বর ওয়ার্ডে প্রার্থী হয়েছেন কাজরী বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ কাজরী। এর আগে একাধিক স্থানে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁকে দেখা গিয়েছে। তবে সরাসরি রাজনীতির ময়দানে পা রাখলেন এই প্রথম। রাজনৈতিক মহলের মতে, ঘাসফুলের প্রার্থী তালিকায় এটি অন্যতম বড় চমক।